সেলিম হায়দার, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার তালা উপজেলা সরুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ মতিয়ার রহমানের কাছে স্ত্রীর মর্যাদা চেয়ে ভরণপোষনের দাবি জানিয়েছেন অসহায় এক গৃহবধূ। মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসকাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান, একই থানার শাঁকদহা গ্রামের মৃত শেখ মেছের আলীর মেয়ে মোছাঃ শাহিনা আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শাহিনা আক্তার বলেন, পূর্বের স্বামী মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান ও দুই সন্তানকে নিয়ে শান্তিতে থাকা অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভূল বোঝাবুঝির এক পর্যায় আমার স্বামী রাগান্বিত হয়ে আমাকে মৌখিক ভাবে তালাক প্রদান করেন। বিষয়টি সাবেক চেয়ারম্যান ও ৩ নং সরুলিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি মোঃ মতিয়ার রহমানকে জানালে তিনি আমাদের স্বামী-স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে পাটকেলঘাটা সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসার বড় হুজুরের কাছে নিয়ে যান। ঘটনার বর্ণনা শুনে শরীয়াহ মোতাবেক তালাক হয়ে গেছে জানিয়ে হুজুর আমাকে হিল্লা বিয়ে দেয়ার কথা বললে চেয়ারম্যান মতিয়ার নিজেই আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।
এসময় আমি ও আমার স্বামী রাজি হয়ে চেয়ারম্যান মতিয়ারের সঙ্গে শরীয়াহ মোতাবেক বিয়ে করি। এই সুযোগ নিয়ে প্রতারক মতিয়ার আমাকে বলেন, তিন মাস তার সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী রুপে কাটাতে হবে। তিন মাস পর আমি তোমাকে তালাক দিয়ে পূর্বের স্বামীর সঙ্গে বিয়ের সুযোগ করে দিব। কিন্তু তিন মাস পার হয়ে গেলেও নারী লোভী মতিয়ার আমাকে তালাক না দিয়ে তালবাহনা করতে থাকে। এসময় অনেক অনুনয়-বিনয় করলেও তিনি আমার কথা রাখেননি। উল্টো আমার পূর্বের স্বামীর নামে মিথ্যে মামলা দিয়ে তাকে এলাকা ছাড়া করেন। বাধ্য হয়ে আমি চেয়ারম্যানের কথামত চলতে থাকি। এভাবে ৪-৫ মাস চলার পর ২০১৩ সালের ২৫ফেব্রুয়ারী চেয়ারম্যান মটর সাইকেলে করে আমাকে সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল এলাকায় এক ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে আমাকে ও আমার দুই সন্তানের ভরণপোষনের দায়িত্ব এবং তাদের ভবিষ্যত করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৫০ হাজার টাকা দেনমোহরে আমার সঙ্গে বিবাহ রেজিস্ট্রি করেন।
তিনি বলেন, এভাবে চলতে থাকার একপর্যায় ইউপি নির্বাচনের আগে থেকে হঠাৎ তিনি আমার সাথে যোগাযোগ না করায় আমি মোবাইলে রিং করলে তিনি আমাকে বলেন, নির্বাচনের পরে তোমাকে বাড়ি তুলে স্ত্রীর মর্যদা পূরুন করবো। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করার কিছুদিন পর যোগাযোগ করলে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন আমার মত মহিলার তার আর দরকার নেই এবং আর কোন দিন আমি যেন তার সঙ্গে যোগাযোগ না করি। একথা জানার পর গত ১ ফেব্রুয়ারী বেলা ১১ টার দিকে ইউপি অফিসে গিয়ে ভরণপোষন ও মর্যাদার কথা বললে তিনি আমাকে হুমকি ধামকি দিতে থাকেন। এসময় মেম্বর হাফিজুর ও মাহফুজার মধু তার উপর হামলা চালিয়ে শারীরিকভাবে তাকে লাঞ্চিত করে। পরে চেয়ারম্যান আমাকে ও আমার দুই সন্তানকে মিথ্যে মামলা জড়িয়ে হয়রানি করার হুমকি দেয়। এঘটনায় নিরাপত্তার দাবিতে আমি পাটকেলঘাটা থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি তালা উপজেলা পাটকেঘাটা থানার জুজখোলা গ্রামের মৃত এরফান আলী মোড়লের ছেলে ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানের অত্যাচার নির্যাতনের প্রতিকারের পাশাপাশি স্ত্রীর মর্যদা ও ভরণপোষনের দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।