ডেঙ্গু রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে রাজধানীর হাসপাতালগুলো। নিয়মিত ওয়ার্ডের মাধ্যমে সেবা দিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না চিকিৎসকরা। তাই আলাদা ওয়ার্ডের ব্যবস্থা রাখছে বেশিরভাগ হাসপাতাল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, চলতি বছর ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা আগের সব বছরের রেকর্ড ভেঙ্গেছে।
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ওয়ার্ডের পাশাপাশি বারান্দায়ও রাখা হয়েছে ডেঙ্গু রোগীদের। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বর্তমানে ৫৪ জন আছেন চিকিৎসাধীন। পান্থপথের সেন্ট্রাল হাসপাতালে রোববার পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ৭৪ জন। ঢাকা মেডিক্যালে ২৮২ এবং হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ২২৯ জন।
ঢাকার সব হাসাপাতালেই ডেঙ্গু রোগী ভর্তির হার প্রতিদিন বাড়ছে। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র রায় জানান, ‘এখন অনেক রোগী আসছে। তাই ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ড এবং ক্যন্সার ওয়ার্ড এখন ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’
ডেঙ্গুর ভয়াবহতার চিত্র উঠে এসেছে জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যেও। ৪ বছরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৭ গুণ। ২০১৬ সালের জুনে ছিল ২৫৪ জন। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭১৩। আর ১লা জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত এই সংখ্যা ২ হাজার ৮০৩ জন।
জনস্বাস্থ্য বিভাগএর রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. সানিয়া তাহমিনা জানান, ‘এডিস মশার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি হচ্ছে কনসট্রাকশান সাইডে। জলাবদ্ধতা, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ এ জিনিসগুলোই আমরা এখনও ঠিক করতে পারিনি।’ ডেঙ্গুর ভয়াবহতা সম্পর্কে ড. সানিয়া তাহমিনা আরও বলেন, ‘কারো যদি ডেঙ্গু একবার হয়, তবে তার ক্ষেত্রে দ্বিতিয়বার অথবা তৃতীয়বার ঝুঁকি আরও বেশি।’
জনস্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, প্রতি বছর এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে। সবচেয়ে বেশি বাড়ে সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরে। পুরো সময়ই ঢাকায় কোন এলাকায় এডিস মশার প্রকোপ বেশি, তা প্রতি ৪০দিন অন্তর জরিপ করে সংস্থাটি। দুই সিটি কর্পোরেশনকেও দেয়া হয় সে তথ্য।