দায়িত্বশীল না হলে স্বাস্থ্যখাতে জন্য ঝুকিপূর্ণ
কামরুল হোসেন মনি : খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা আইসোলেশনে ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন একই পরিবারের মো: আসলাম তার স্ত্রী হালিমা এবং শিশু পুত্র সান। তাদের করোনা টেস্টের রিপোর্ট না পেয়েই সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক তাদের করোনা নয় বলে হাসপাতালে মেডিসিন ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগে রেফার্ড করেন। ছাড়পত্রে পেয়ে তারা বাড়িতে চলে আসার পর জানতে পারেন সবাই পজিটিভ। এ ধরনের দায়িত্বহীন ঘটনায় স্বাস্থ্য খাতের জন্য ঝুকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন সিভিল সার্জন ও খুলনা বিএমএ সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ।
খুমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ মে বিভিন্ন সময়ে ওই হাসপাতালের করোনা সাসপেকডেট আইসোলেশনে ওয়ার্ডে ছিলেন একই পরিবারের মো: আসলাম, স্ত্রী হালিমা এবং ১১ বছরের সন্তান সান। পরের দিন ২৯ মে তারা করোনা টেস্টের জন্য নমুনা প্রদান করেন। কিন্তু তাদের করোনা টেস্টের রিপোর্ট আসার আগেই ওয়ার্ডের ফোকাল পার্সন ও মুখপাত্র জুনিয়ার কনসালটেন্ট ডা: শৈলান্দ্রনাথ বিশ্বাস ফোনে তাদের করোনা নেই বলে নিশ্চিত করেন। একই সাথে তাদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে পাঠানোর নির্দেশনা প্রদান করেন। তার কথার মতো শিশু পুত্র সান শিশু স্বাস্থ্য বিভাগে ১৩-১৪ ওয়ার্ডে ও মা হালিমাকে মেডিসিন বিভাগে ৫-৬ ইউনিটে ভর্তি দেখানো হয়। ওই দিন তারা হাসপাতালের ছাড়পত্র পেয়ে খুলনা থেকে পাবনা উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পরের দিন জানতে পারেন তারা সবাই করোনা পজিটিভ। এ ঘটনার জানাজানি হওয়ার পর হাসপাতালের শিশু বিভাগ ও মেডিসিন বিভাগে দায়িত্বরত নার্স, চিকিৎসকরা ক্ষুব্ধ প্রকাশ করেছেন। একই সাথে এরকম দায়িত্বহীনের ঘটনায় স্বাস্থ্য জন্য ঝুকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন খুলনা সিভিল সাজর্ন ও বিএমএ সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ।
খুলনা সিভিল সার্জন ডা: সুজাত আহম্মেদ বলেন, ওই ঘটনার জন্য একজন কোন ভাবেই তার দায় এড়াতে পারেন না । তিনি বলেন, ওই একই পরিবার করোনায় নেগিটিভ হাসপাতাল থেকে এমন ছাড়পত্র পেয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। ঠিকানা বাড়ি খুলনা শেখপাড়া উল্লেখ করা হলেও তারা ওই দিন পাবনার উদ্দেশ্যে রওনা হন। এর আগে তাদেরকে খোজার জন্য নগরীর শেখপাড়া এলাকায় পুলিশ তাদেরকে খুজে পাননি। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিলো। পরে জানতে পেরেছে গতকাল সোমবার তারা করোনা পজিটিভ জানার পর সকালে খুলনায় চলে আসেন। তাদেরকে নগরীর ডেডিগেটেড করোনা হাসপাতালে ভর্তি হতে চলে আসেন। তিনি বলেন, ওই পরিবাররা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছে, কতো জনের সংস্পর্শে গেছে তা তারাই ভালো জানেন। তাদের সর্ম্পশে আসা ব্যক্তিরা এই করোনায় আক্রান্ত হবেন। একজন চিকিৎসকের এরকম দায়িত্বহীন কাজ করলে স্বাস্থ্য জন্য ঝুকিপূর্ণ।
করোনা প্রতিরোধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সার্বিক সম্বনয়কারী ও খুলনা বিএমএ সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ বলেন, ওই পরিবারের একবারই করোনা টেস্ট করানো হয়েছে। একবারই টেস্টের রিপোর্টে তাদের করোনায় পজিটিভ আসছে। টেস্টের রিপোর্ট হাতে না পেয়েই কিভাবে তাদের ছাড়পত্রে করোনায় নেগিটিভ উল্লেখ করায় এটা খুব দু:খ জনক। তারা ছাড়পত্র পেয়ে বাড়ি চলে যায় জানতে পেরেছি। এছাড়া হাসপাতালের যে সব ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলো ওখানকার নার্স ও চিকৎসকরাও ঝুকিপূর্ণ রয়েছেন। যতক্ষুন তাদেরকে করোনা টেস্টের আওতায় না আনা যাচ্ছে। বিষয়টি হাসপাতালের পরিচালকের সাথে তিনি কথা বলেছেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা: মুন্সী মোহাম্মদ রেজা সেকেন্দার রাতে এ প্রতিবেদককে বলেন, এই ঘটনায় ডা: শৈলান্দ্র নাথ বিশ্বাস ভূল স্বীকার করেছেন। পরবর্তীতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে তার জন্য সর্তক করে দেন। তিনি বলেন, একই পরিবারের আক্রান্ত ব্যক্তিরা আরো কতো জায়গায় ঘুরে বেরিয়েছেন তার কোন ঠিক নেই।
জানা গেছে, জানা গেছে, এ খবর ছড়িয়ে পড়লে অনেক রোগী ও তার স্বজনরা হাসপাতাল ছেড়ে চলে যায়। সহকারী রেজিস্ট্রার দুইজন চিকিৎসক ও নার্সদের আইসোলেশনে পাঠানো হয়। এছাড়া অন্যন্য স্টাফরা আতংকে মধ্যে আছেন।