মোংলায় ড্রেন থেকে  সুন্ধি কচ্ছপ উদ্ধার

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : মোংলার বঙ্গবন্ধুপাড়ার কাইনমারী খাল সংলগ্ন ড্রেন থেকে একটি সুন্ধি প্রজাতির কচ্ছপ উদ্ধার করে বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছেন স্থানীয় দুই সংবাদকর্মী। শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে ওই দুই সংবাদকর্মীর চোখে পড়ে ড্রেনের এ কচ্ছপটি। এরপর সেখান থেকে তা উদ্ধার করে নিয়ে বনবিভাগের ফুয়েল জেটিতে বন কর্মকর্তা মোঃ আজাদ কবিরের কাছে হস্তান্তর করেন তারা। পরে বন কর্মকর্তা আজাদ কবির কচ্ছপটি নিয়ে শুক্রবার দুপুরে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র অবমুক্ত করে দেন।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের করমজল পর্যটন ও বনপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আজাদ কবির জানান, মোংলার মোঃ হাফিজুর ও মোঃ আলআমিন হোসেন নামের দুই সাংবাদিক শক্রবার সকালে পৌর শহরের বঙ্গবন্ধু পাড়ার ড্রেন থেকে একটি সুন্ধি প্রজাতির কচ্ছপ উদ্ধার করেন। এরপর তারা সেটিকে বনবিভাগের ফুয়েল জেটি নিয়ে এসে আমার কাছে হস্তান্তর করেছেন। বিলুপ্ত প্রায় এ সুন্ধি প্রজাতির কচ্ছপটির বয়স প্রায় তিন বছর, আর ওজন প্রায় দেড় কেজি। এ কচ্ছপ দীর্ঘদিন মাটির নিচে থাকতে পারে, শরীরের রোদ্রের তাপ না লাগলে খাওয়ারও তেমন প্রয়োজন হয়না। সম্ভবত মাটির নিচ থেকে বের হয়েছে, নতুবা কেউ খাওয়ার জন্য এনেছিলো সেখান থেকে ছুটে এসে থাকতে পারে।
তিনি বলেন, আমি বনবিভাগের পক্ষ থেকে সাংবাদিক হাফিজ ও আলআমিনকে ধন্যবাদ জানাই এজন্য যে তারা বন্যপ্রাণীর মায়ায় সেটিকে উদ্ধার করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। তা না হলে এটি লোকজনে মেরে কিংবা ধরে খেয়েও ফেলতে পারতেন। তিনি আরো বলেন, এ কচ্ছপ সাধারণত মাঝে মধ্যে মিষ্টি পানির এলাকায় দেখা যায়। মিষ্টি পানির জলাশয় ও ধান ক্ষেতে মাঝে মধ্যে এর অস্তিত্ব মিলে থাকে। মানুষের খাওয়ার কারণে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এ প্রজাতি এখন বিলুপ্ত প্রায়।
বন কর্মকর্তা মোঃ আজাদ কবির জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ কচ্ছপটি করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের পুকুরে অবমুক্ত করা হয়েছে। এর মাস তিনেক আগে বাগেরহাটের রামপালের কাদিরখোলা এলাকার একটি চিংড়ি ঘেরের বেড়ীবাঁধের উপর থেকে উদ্ধার হওয়া কচ্ছপটিও করমজলের পুকুরে অবমুক্ত করা হয়।

শরণখোলায় পানিতে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু

শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : বাগেরহাটের শরণখোলায় রুবি আক্তার (৭) ও রাফিয়া আক্তার (৪) নামে দুই বোন পুকুরে ডুবে মারা গেছে। শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে দুই শিশুকে পুকুর থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষনা করেন। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের মধ্য নলবুনিয়া গ্রামে। নিহত দুই শিশু ভ্যানচালক আব্দুর রহিম তালুকদারের মেয়ে। পুলিশ হাসপাতাল থেকে নিহদ দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে।
নিহতদের বাবা রহিম তালুকদার জানান, দুইু মেয়েকে মায়ের কাছে রেখে তিনি জুমার নামাজ পড়তে যান। নামাজ পড়ে বাড়ি ফিরে মেয়েদের দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। প্রথমে নিজের বাড়ির আশপাশ তল্লাশি করে কোথাও না পেয়ে প্রতিবেশী নওয়াব চৌধুরীর বাড়ির পুকুরে তল্লাশি চালান। সেই পুকুর তল্লাশি করে দুই মেয়েকে খুঁজে পান। সেখান থেকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষনা করেন।
রহিম তালুকদার আরো জানান, তিনি ঢাকার একটি পোষাক কারখানায় কাজ করতেন। স্ত্রী কোহিনুর বেগম ও দুই মেয়েকে নিয়ে ঢাকার কোনাবাড়ি এলাকায় বসবাস করতেন। সেই কাজ ছেড়ে দিয়ে ছয় মাস আগে স্বপরিবারে স্থায়ীভাবে বাড়িতে চলে আসেন। বাড়িতে এসে ব্যাটারিচালিত ভ্যান চালিয়ে জীবীকা নির্বাহ করেন। তার মেয়েরা সাঁতার জানে না। দুই বোন একসাথে পাশের বাড়ির পুকুরে গোসল করতে গিয়ে ডুবে যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আলমগীর তালুকদার জানান, রহিম তালুকদারের দুই মেয়ে। তার আর কোনো সন্তান নেই। সাঁতার না জানার কারণে পাশের বাড়ির পুকুরে গোসল করেত গিয়ে এই মর্মান্তিক ঘটনার শিকার হয় তারা।
শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. নিয়াজ মাহমুদ ফয়সাল জানান, পানিতে ডোবা দুই শিশুকে মৃত অবস্থায়ই দুপুর আড়াইটার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে স্বজনরা।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম হোসেন জানান, হাসপাতাল থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। একই সঙ্গে দুই বোনের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়। এঘটনায় দুটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

বটিয়াঘাটায় প্রকল্পের মাঠ পরিদর্শন

বটিয়াঘাটা প্রতিনিধিঃ বটিয়াঘাটার গঙ্গারামপুর তিঁতুখালী এলাকায় ধানের লবণ সহনশীলতা বৃদ্ধিতে উরিধান সংশ্লিষ্ট জিন এবং অনুজীবের প্রয়োগ শীর্ষক প্রকল্পের মাঠ পরিদর্শন করেন প্রকল্পের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ। শুক্রবার বেলা তিনটায় উক্ত প্রকল্প সরেজমিন পরিদর্শন শেষে তারা সাধারণ কৃষকদের মাঝে এক মত বিনিময় সভায় মিলিত হন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত প্রকল্প পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ড. জেবা ইসলাম সেরাজ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মোঃ জহুরুল ইসলাম, উপ-সচিব এস এম ইমরুল হাসান, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ ইউছুপ মেহেদী ও সহকারী পরিচালক মোঃ মোস্তফা কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উরি ধানের ব্যবহারিক প্রয়োগ’র উপ-প্রকল্প পরিচালক ড. রাকিবুল ইসলাম, সাতক্ষীরা ব্রি আঞ্চলিক কার্যালয়ের সিএসও ও প্রধান ড. তাহমিদ হোসেন আনসারি,ধান গবেষণা ইনিস্টিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ সাজ্জাদুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক-১ সরদার ইলিয়াস হোসেন ও উপ-পরিচালক ১ মোঃ আমির হোসেন, ভাইস-চেয়ারম্যানদ্বয় নিতাই গাইন ও চঞ্চলা মন্ডল, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রতাপ ঘোষ, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দীপন কুমার হালদার, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তাা ধরুবজ্যোতি সরকার, ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট সিল্ড প্রজেক্ট’র কর্মসূচি সংগঠক ও প্রকল্পের সহায়তাকারী অমল কুমার রায়, কৃষিবিদ স্বপন কুমার ভদ্র ও সাংবাদিক পরাগ রায় সহ স্থানীয় কৃষকবৃন্দ।

ইভিএম দিয়ে ভোট কারচুপি করে আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় যেতে দেয়া হবে না-কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা হেলাল

ফুলতলা (খুলনা) প্রতিনিধি// বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেছেন, রাতের ভোটে ক্ষমতায় এসে আওয়ামীলীগ সরকার সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে দেশকে দেউলিয়া করে ফেলেছে। কুইক রেন্টালের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে কুইক লুটপাটের মাধ্যমে ৭০ হাজার কোটি টাকা লুৎপাট করে বিদ্যুতের বিপর্যয় ঘটিয়েছে। শেয়ার বাজার ও ব্যাংক তহবিল তসরুপ করে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। জ¦ালানি তেলে ৫২ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করার পরও তেলের মূল্য বৃদ্ধি করে নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্য দ্রব্যের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। ফলে দেশে নিরব দূর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে। আওয়ামীলীগকে দলীয় নির্বাচন কমিশন দিয়ে ইভিএম এর মাধ্যমে ডিজিটাল ভোট কারচুপি করে ক্ষমতায় আসার দিবা স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না।

জ¦ালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, বিদ্যুতের নজিরবিহীন লোডশেডিং, গণপরিবহনের ভাড়াসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্য উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে উপজেলা বিএনপি আয়োজিত শুক্রবার বিকালে ফুলতলা এম এম কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক মোঃ সেলিম সরদারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা বিএনপির আহবায়ক আমির এজাজ খান, সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী, সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক শেখ আবু হোসেন বাবু। উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক মনির হাসান টিটোর পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কওছার আলী জমাদ্দার, খুলনা জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক এস এ রহমান বাবুল, সদস্য শেখ আবুল বাশার, হাসনাত রেজভী মার্শাল, ওয়াহিদুজ্জামান নান্না, শেখ আঃ সালাম, আনোয়ার হোসেন বাবু, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সাব্বির হোসেন রানা, যুবদল নেতা সৈয়দ আল শাকিল, কামরান হাসান, জামাল হোসেন ভুইয়া, মোতাহার হোসেন কিরণ, ইদ্রিস আলী মোল্যা, রবিউল ইসলাম, আলামিন সানা প্রমুখ।

সমাবেশে প্রধান অতিথি ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিনত করায় পুলিশই এখন ইমেজ সংকটে পড়েছে। বরগুনায় ছাত্রলীগের দুই গ্রæপের বিবদমান সংঘর্ষ নিবৃত্ত করতে লাঠি চার্জ করায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ ১৩ পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অপরদিকে ভোলায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ গুলি চালিয়ে নূরে আলম ও আব্দুর রহিমকে হত্যা করার পরও পুলিশের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে সরকার পুলিশকে বিতর্কিত করে ফেলেছে।

ফুলতলা বাজার থেকে প্রায় ৩ শ’ মিটার দুরে দীর্ঘদিন পরে ফুলতলা এম এম কলেজ মাঠে সমাবেশের অনুমতি পায় উপজেলা বিএনপি। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপিও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে তারা একত্রিত হন। কর্মসূচিকে ঘিরে পুলিশের কঠোর অবস্থানের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে সন্ধ্যার আগেই সমাবেশ শেষ হয়।

দাকোপে শত শত কোটি টাকার বাঁধ নদীগর্ভে

দাকোপ প্রতিনিধি : খুলনার উপকুলিয় উপজেলা দাকোপের গুনারী গ্রামের আদিত্য নারায়ন সরদার। ঢাকী নদীর ভয়াবহ ভাঙনে চলে গেছে তার বসত ভিটেসহ অর্ধশত বিঘা চাষাবাদের জমি। একই এলাকার নকুল চন্দ্র মন্ডল। নদী ভাঙনের কারনে দফায় দফায় বসত ভিটা বদল করে এখন মাথা গোজার মত নিজস্ব সম্পদ বলতে কিছু নেই। ভয়াবহ শিপসা এবং ঢাকী নদীর মোহনা গুনারী কালীবাড়ী এলাকার দীনেশ নারায়ন সরদার, ডাঃ মোশারফ হোসেন, প্রদীপ মন্ডল, আঃ রশিদ শেখসহ সেখানে বসবাসকারী সকলের কন্ঠে একই সুর। এক সময়ের সম্ভ্রান্ত পরিবার গুলো নদী ভাঙনে সব হারিয়ে এখন তারা নিঃস্ব প্রায়।
সর্বহারা এ সব মানুষেরা বাঁচার আকুতি নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে সংগ্রাম। ওই এলাকার নারী পুরুষ সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভাঙন কবলিত এলাকায় দাড়িয়ে করেছে মানববন্ধন। তাদের ক্ষোভ নদীর গতি প্রকৃতি না বুঝে বিশ্ব ব্যাংক থেকে নেওয়া শত শত কোটি ঋণের টাকায় বাস্তবায়িত টেকসই বেড়ীবাঁধ কামারখোলা সুতারখালী ইউনিয়নবাসীর নিরাপত্তায় কোন কাজে আসেনি। বরং মেঘা প্রবল্পের নামে সরকারের বিশাল অর্থের অপচয় হয়েছে। যে কারনে দু’টি ইউনিয়নের সংগ্রামী মানুষেরা আগে নদী শাসন করে ভাঙন রোধে ডাম্পিং ব্যবস্থাসহ পরিকল্পিত ও নিরাপদ টেকসই বাঁধ নির্মানের দাবী জানিয়েছেন তারা। মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় কালীবাড়ী ভাঙন এলাকায় দু’টি ইউনিয়নবাসীর যৌথ আয়োজনে কামারখোলা ইউপি চেয়ারম্যান পঞ্চানন মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তৃতা করেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও দাকোপ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আলহাজ্ব শেখ আবুল হোসেন, আ’লীগনেত্রী জয়ন্তী রানী সরদার, শফিকুল ইসলাম আক্কেল, কবির হোসেন, গোলাপ হোসেন শেখ, আজগর হোসেন ছাব্বির, ইউপি সদস্য সুশান্ত কুমার ঢালী, শিক্ষক আদিত্য নারায়ন সরদার, মনিমোহন সরদার, মনিরুল শিকদার, দীনেশ নারায়ন সরদার, বিকাশ মিস্ত্রি, তন্ময় মন্ডল, রশিদ শেখ, রফিকুল ইসলাম, নয়ন শেখ, আশিকুর রহমান, নিমাই মন্ডল, মনিন্দ্র মন্ডল, জয়ন্ত মন্ডল, বিকাশ রায়সহ আরো অনেকে। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শত শত নারী পুরুষের দাবী একটাই, “আমরা বাঁচতে চাই”। জন্ম মাটিতে টিকে থাকতে তারা পাউবোর ৩২ নং পোল্ডার তথা কামারখোলা ও সুতারখালী ইউনিয়নে বিশ্ব ব্যাংকের কাছ থেকে নেওয়া ঋনের টাকায় নির্মিত টেকসই বাঁধের ভয়াবহ ভাঙন কবলিত গুনারী, কালীবাড়ী, নলিয়ান, জালিয়াখালী, কালাবগী, সুতারখালী, কালীনগর, জয়নাগর, কামারখোলা জোড়াগেট ডিএস-১ এলাকার ভাঙন রোধে কার্যক্রর ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন। অন্যথায় দুৃ’টি ইউনিয়নের অর্ধ লক্ষ মানুষ আইলার মত ফের প্লাবিত হওয়ার ঝুকিতে আছে বলে তারা দাবী করেছেন।

দাকোপে শিক্ষার্থীদের মাঝে অর্থ সহায়তা প্রদান

দাকোপ প্রতিনিধি : দাকোপে বেসরকারী সংস্থা দলিতের উদ্যোগে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ ও ঝরে পড়া রোধে দলিত ও প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক ব্যয়ের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার বেলা ১১ টায় চালনা এম এম কলেজ অডিটোরিয়ামে সহায়তা প্রধান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দলিতের হেড অফ প্রোগ্রাম বিকাশ কুমার দাশ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন দাকোপ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুরাইয়া সিদ্দিকা। উপস্থিত ছিলেন চালনা এম এম কলেজের সহকারী অধ্যাপক রঞ্জন কুমার রায়, শিক্ষক নিলিমা গাইন, দলিতের প্রকল্প ব্যবস্থাপক নিরঞ্জন বর্মন, হেলথ মুবিলাইজার সুমন মল্লিক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ৬ষ্ঠ শ্রেনী প্রতি শিক্ষার্থী ৩০০ টাকা, ৭ম শ্রেনী ৩৬০ টাকা, ৮ম থেকে ১০ম শ্রেনী ৪২০ টাকা হাওে চালনা পৌর এলাকার ৪৬০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ২ লাখ ২ হাজার ২৯০ টাকা বিতরন করা হয়। একই দিনে উপজেলার ধোপাদী, কালীনগর, বুড়ির ডাবুর, লাউডোপ, ঢাংমারী ও তিলডাঙ্গায় অনুরুপভাবে শিক্ষার্থীদের মাঝে অর্থ বিতরন করা হয়।

বটিয়াঘাটায় ভূমি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

বটিয়াঘাটা প্রতিনিধি: বটিয়াঘাটায় বে-সরকারী সংস্থা উত্তরনের আয়োজনে উপজেলা ভূমি কমিটির ত্রৈমাসিক সভা বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় স্থানীয় উত্তরণের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা ভূমি কমিটির সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই গাইন’র সভাপতিত্বে ও (অবঃ) অধ্যাঃ এনায়েত আলী বিশ্বাস’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন , উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রতাপ ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ টিকাদার, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বুলু রায় গাঙ্গুলী, সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুল হামিদ, বীরমুক্তিযোদ্ধা নিরঞ্জন কুমার রায়, বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ সাদ্দাম হোসেন, উপজেলা মসজিদ’র ইমাম মুক্তি আব্দুল হামিদ, এড. প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস, সিপিবি নেতা অশোক সরকার, নারীনেত্রী আশালতা ঢালী। সভায় অনুষ্ঠানের শুরুতে উত্তরণের উপজেলা ম্যানেজার মোঃ মোখলেছুর রহমান বিগত সভায় ভূমিহীনদের ভূমি বন্দোবস্ত ও বন্টন প্রক্রিয়ায় সমস্যা এবং সমাধান কল্পে রেজুলেশন পাঠ করে শোনান । অপরদিকে উত্তরণের আয়োজনে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে স্থানীয় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এর কার্যালয়ে মৎস্যজীবী সমিতির সাথে সাংবাদিকদের সমন্বয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে মৎস্যজীবীদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রত্যাশা মৎস্যজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজাহান শেখ । এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই গাইন, উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ, সহ-সভাপতি পরিতোষ কুমার রায়, আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট মোঃ মোস্তফা বেলাল, সাংবাদিক সুমন বিশ্বাস, সাংবাদিক পরাগ রায়, সাংবাদিক বিশ্বজিৎ মন্ডল, উপজেলা উত্তরণ ম্যানেজার মোঃ মোখলেছুর রহমান কামাল সহ মৎস্য সমিতির সদস্যবৃন্দ ও অন্যান্য সাংবাদিকবৃন্দ।

আটোয়ারীর গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার

মনোজ রায় হিরু, আটোয়ারী : পঞ্চগড়ের আটোয়ারীর আলোচিত ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী হাসান (২২) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসানকে উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সামনের রাস্তা থেকে গ্রেফতার করেন। সে উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের মালগোঁবা গ্রামের জনৈক মৃতঃ মোঃ আমিনুর রহমানের ছেলে। ওইদিন সন্ধ্যায় হাসান তার বাড়ি থেকে আটোয়ারী অভিমূখে আসার পথে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন।

উল্লেখ যে, গত ৭ আগস্ট ওই শিক্ষার্থীকে তার নানার বাড়ি থেকে হাসান ও রাজু নামের দুই যুবক আটোয়ারীর কাজী এন্ড কাজী চা বাগানে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের ঘটনাটি প্রথমে পুরাতন আটোয়ারী এলাকার জনৈক যুবক সবুজ টের পান। সবুজ ওই এলাকার আরও চার যুবকের সমন্বয়ে পুনরায় ওই শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণ করে সঙ্গাহীন অবস্থায় তাকে ফেলে রেখে সকলেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। দীর্ঘ সময় পর শিক্ষার্থীর আত্মচিৎকারে এলাকার লোকজন তাকে উদ্ধার করে নানর বাড়িতে পৌছায় দেন। এ ঘটনার পরপরই পুলিশ ভিকটিমের অভিভাবকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনার পরদিন উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের মালগোঁবা গ্রামের মোঃ সামিজুলের পুত্র রাজু ইসলাম (২৮) এবং একই ইউনিয়নের পুরাতন আটোয়ারী গ্রামের মোঃ গিয়াস উদ্দিনের পুত্র সাইফুল ইসলাম (৪৮) নামে দুই ধর্ষককে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করেছেন। এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আটোয়ারী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ দুলাল উদ্দিন জানান, পূর্বে গ্রেফতারকৃতরা আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।

আটোয়ারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সোহেল রানা সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আলোচিত এ ঘটনায় পুলিশ সর্বদা তৎপর। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাকী ধর্ষকদেরও গ্রেফতার করে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

জুমার দিনের ফযিলাত ও বিশেষ আমল

মাওঃ ফজলুর রহমানঃ ইসলামের দৃষ্টিতে পবিত্র জুমা ও জুমাবারের রাত-দিন অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ তা’আলা কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেন, হে মুমিনগণ! জুমার দিন যখন নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) এগিয়ে যাও এবং বেচা-কেনা (দুনিয়াবি যাবতীয় কাজকর্ম) ছেড়ে দাও। যদি তোমরা বুঝ, তবে ইহা তোমাদের জন্য কল্যাণকর; । (সূরা জুমা- ০৯)। রাসুল (সা.) বলেছেন, মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন। জুমার দিনের অধিক ফজিলত রয়েছে। জুমার দিন জুমার নামাজের জন্য যে যত তাড়াতাড়ি মসজিদে আসবে সে তত বেশি সওয়াব পাবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন জুমার দিন আসে ফেরেশতারা মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে প্রথম থেকে পর্যায়ক্রমে আগন্তুকদের নাম লিখতে থাকে। যে সবার আগে আসে তাহার নামে একটি উট কোরবানির সওয়াব লেখা হয়। তারপর যে আসে তাহার নামে একটি গরু কোরবানির সওয়াব লেখা হয়। তারপর আগমনকারীর নামে একটি বকরি কোরবানির সওয়াব লেখা হয়। তারপর আগমনকারীর নামে একটি মুরগি কোরবানির সওয়াব লেখা হয়। তারপর আগমনকারীর নামে একটি ডিম কোরবানীর সওয়াব লেখা হয়। এরপর যখন ইমাম খুতবা দেওয়ার জন্য দণ্ডায়মান হন তখন ফেরেশতারা তাদের লেখা বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনতে থাকেন। বুখারি শরিফের হাদিসে রয়েছে নবীজি (স.) বলেছেন, কোনো পুরুষ যখন জুমার দিন গোসল করে, সাধ্যমত পবিত্রতা অর্জন করে, তেল ব্যবহার করে বা ঘরে যে সুগন্ধি আছে তা ব্যবহার করে, তারপর (জুমার জন্য) বের হয় এবং (বসার জন্য) দুই জনকে আলাদা করে না অর্থাৎ মসজিদে গিয়ে যেখানে স্থান পায় সেখানেই বসে, এরপর সাধ্যমত নামায পড়ে এবং ইমাম যখন খুৎবা দেয় তখন চুপ থাকে, তাহলে গত জুমা হতে এই জুমা পর্যন্ত তার (সগীরাহ গুনাহ) মাফ করা হয়। বিভিন্ন হাদিসেরভিত্তিতে ফেকাহবিদরা সেসব আমলকে নির্দিষ্ট করেছেন। ১. জুমার দিন গোসল করা। ২. পরিচ্ছন্নতার অংশহিসেবে সেদিন নখ ও চুলকাটা একটি ভালো কাজ। ৩. জুমার সালাতের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার ৪. মিসওয়াক করা। ৫. গায়ে তেল ব্যবহার করা। ৬. উত্তম পোশাক পরিধান করে জুমা আদায় করা। ৭. মুসল্লিদের ইমামের দিকে মুখ করে বসা। ৮. পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া। ৯. জুম্মার দিনও জুম্মার রাতে বেশি বেশি দুরুদ পাঠ। ১০. এ দিন বেশি বেশি দোয়া করা। ১১. মুসুল্লীদের ফাঁক করে মসজিদে সামনের দিকে এগিয়ে না যাওয়া। ১২. জুমার দিন সূরা কাহাফ পাঠ করা। পাঠকারীর জন্য আল্লাহ তায়ালা দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়কে আলোকিত করে দেন। জুমাবারের ফজিলতের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিকটি হলো, এই দিনে এমন একটা সময় আছে, যখন মুমিন বান্দা কোনো দোয়া করলে মহান আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেন। আবু হুরায়রা রা. থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, জুমার দিনে একটা এমন সময় আছে, যে সময়ে কোনো মুমিন বান্দা আল্লাহর কাছে ভালো কোনো কিছু প্রার্থনা করলে, অবশ্যই আল্লাহ তাকে তা দান করবেন। জুমার দিনে দোয়া কবুল হওয়ার সে মহামূল্যবান সময় কোনটা? এ সম্পর্কে একাধিক মতামত পাওয়া যায়। তবে সর্বাধিক প্রসিদ্ধ মত হলো, আসরের নামাজের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত দোয়া কবুলের সময়। হজরত আনাস (রা.) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, জুমার দিনের কাঙ্ক্ষিত সময়টা হলো আসরের পর থেকে সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত।