এখন আর ভোট চুরির সুযোগ নেই: প্রধানমন্ত্রী

ইউনিক ডেস্ক : আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়ায় এখন আর ভোট চুরির সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কাতার সফর শেষে আজ সোমবার (১৩ মার্চ) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

সরকারপ্রধানের বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে। রাজনৈতিক স্থতিশীলতা থাকলে উন্নয়ন হয়, সেটা আমরা প্রমাণ করেছি।’

একটি মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত তারা কিছু করতে পারবে না। সাময়িকভাবে অস্থিতিশীলতা তৈরি করলে জনগণই তা মোকাবিলা করবে।’

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া দল আওয়ামী লীগ এ দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ দেশ ও জাতির প্রতি দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করে। সে জন্যই মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে।

‘মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আওয়ামী লীগই আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। জনগণকে দেয়া প্রতিটা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছে। যদিও করোনা ও যুদ্ধের কারণে কিছুটা সমস্যা হয়েছে, তা না হলে দারিদ্র্যের হার আরও দুই থেকে তিন শতাংশ কমানো সম্ভব হতো।’

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন। আর আওয়ামী লীগ এ লক্ষ্যে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।’

আওয়ামী লীগ সরকারে আসার আগে ভুয়া ভোটার তালিকা ও ভোট চুরির বিষয়টি উল্লেখ করে দলটির সভাপতি বলেন, ‘এসব বন্ধের লক্ষ্যে ছবিসহ ভোটার তালিকা করা হয়েছে। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোটদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হলেও অনেকের আপত্তি থাকায় বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারই প্রথম নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন করেছে এবং সেই আইনের আলোকে নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে। ইসির আর্থিক স্বাতন্ত্র্য দেয়া হয়েছে। এসব কারণে এখন আর ভোট চুরির সুযোগ নেই। জনগণ খুশি মনে যাকে খুশি ভোট দিতে পারবেন।

জনগণকে দেওয়া সব কথা রেখেছি
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেশের জনগণকে দেওয়া সব কথা সরকার রেখেছে বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আমার হারানোর কিছু নেই। আমি বাংলাদেশের মানুষের কথা ছাড়া কিছু মনে রাখতে পারি না।

বিদেশি ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার বক্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে উন্নয়ন হয় সেটা আমরা দেখেছি। তবে এজন্য অনেক ধৈর্য ধারণ করতে হয়। আমাদের দেওয়া সুযোগ দিয়ে টিভিতে আমাদেরই সমালোচনা করা হচ্ছে। আমাদের দায়িত্ববোধ দেশের প্রতি আছে কি না, সেটা আছে কি না সেটা বড় বিবেচ্য বিষয়। আমরা দাবি করতে পারি সেটা অনেকখানি আমরা করতে পেরেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেছি। স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে তাদের কাজ করছে। বিএনপি সেখানে এক কোটি ভুয়া ভোটার তালিকা করেছিল। আমরা চেয়েছিলাম মানুষ ইভিএমে ভোট দেবে। আমি মনে করি ইভিএমে ভোট দিতে পারলে ভালো হতো। এটা এখন নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিলাম।

সরকারের গত ১৫ বছরের সাফল্য নিয়ে কোনো চিত্র পাওয়া যায় কি না এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ২০০৬ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত আর্থ সামাজিক অবস্থায় কী পরিবর্তন হয়েছে সেটার একটা চিত্র আছে। আমি চেষ্টা করেছি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার। অনেকেই আগে বাংলাদেশ নাম শুনলে মনে করত গরিব দেশ। এখন আমাদের রোল মডেল মনে করে।

‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে যে উন্নয়ন হয় তা প্রমাণ করেছি’
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে যে দেশের উন্নয়ন হয় সরকার তা প্রমাণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ সবসময় দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করে। বর্তমান সরকার টানা ক্ষমতায় থাকায় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত আছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে যে উন্নয়ন হয় তা প্রমাণ করেছি। এর জন্য ধৈর্য দরকার।

সাধারণত কোনো দেশ সফর করে আসার পর সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে সফর সংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়াও বিভিন্ন সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

সোমবারও সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে কাতার সফর নিয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সরকারপ্রধান। এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।

এখন বিশ্ব বাংলাদেশকে রোল মডেল মনে করে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক সময় বাংলাদেশ মানে বন্যা খরা দুর্যোগ মনে করতো এখন মনে করে না। এখন বিশ্বে বাংলাদেশকে রোল মডেল মনে করে। এটি সম্ভব হয়েছে একটানা ক্ষমতায় একটি গণতান্ত্রিক ধারা বজায় আছে বলেই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যুদ্ধের পর একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে হাত দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রমহান। মাত্র তিন বছর ৭ মাসে স্বল্পোন্নত দেশে গড়ে যান। এরপর অন্ধকার নেমে আসে। আমরা ২০০৮ নির্বাচনে যে রুপকল্প ঘোষণা দিয়েছিলাম, সেটি করতে সক্ষম হয়েছি। জাতিসংঘ এলডিসি সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে এটাই বাংলাদেশের শেষ অংশগ্রহণ। কারণ, ২০২৬ সালে আমরা এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাব।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে জাতিসংঘের সদস্য দেশের স্বীকৃতি পায়। তার দেখানো পথ অনুসরণ করেই আমাদের সরকার জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ২০২১ সালের মধ্যে আমাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একটি মধ্যম আয়ের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণের সকল মাপকাঠি পূরণ করতে সক্ষম হয়।

অস্থিতিশীল পরিস্থিতির চেষ্টা চলছে, তবে পারবে না
একটি গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করতে চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে তারা সফল হবে না বলে জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু পারবে না। মোকাবেলা করবে জনগণ।’

পঁচাত্তরের পর যত নির্বাচন হয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে নিজের শাসনকালের নির্বাচনকে তুলনা করে সরকারপ্রধান দাবি করেন, এখন নির্বাচনে কারচুপির কোনো সুযোগ নেই।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, আধুনিক প্রযুক্তির অংশ হিসেবে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করতে চেয়েছিলেন। তবে অনেকের আপত্তির কারণে তিনি বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দেশের স্থিতিশীলতার জন্য দরকার নির্বাচনটা যেন সুষ্ঠু হয়। সবার মনে রাখা দরকার, আওয়ামী লীগ সরকারই কিন্তু নির্বাচন কমিশন গঠনে একটা আইন করেছে। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে আশা করেন তিনি।

এখন বিশ্ব বাংলাদেশকে রোল মডেল মনে করে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক সময় বাংলাদেশ মানে বন্যা খরা দুর্যোগ মনে করতে, এখন মনে করে না। এখন বিশ্বে বাংলাদেশকে রোল মডেল মনে করে। এটি সম্ভব হয়েছে একটানা ক্ষমতায় একটি গণতান্ত্রিক ধারা বজায় আছে বলেই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যুদ্ধের পর একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে হাত দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রমহান। মাত্র তিন বছর সাত মাসে স্বল্পোন্নত দেশে গড়ে যান। এরপর অন্ধকার নেমে আসে। আমরা ২০০৮ নির্বাচনে যে রূপকল্প ঘোষণা দিয়েছিলাম, সেটি করতে সক্ষম হয়েছি। জাতিসংঘ এলডিসি সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে এটাই বাংলাদেশের শেষ অংশগ্রহণ। কারণ, ২০২৬ সালে আমরা এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাব।’

বটিয়াঘাটায় রূপান্তরের উদ্দ্যোক্তা সমাবেশ ও পণ্য প্রদর্শনী

বটিয়াঘাটা প্রতিনিধি: বটিয়াঘাটায় রূপান্তরের উদ্যোগে করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্থ জনগোষ্ঠির জন্য পুনর্বাসন উদ্যোগ’র আওতায় উদ্যোক্তা সমাবেশ ও পণ্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠান সোমবার বেলা ১১ টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ নুরুল আলম’র সভাপতিত্বে স্থানীয় উপজেলা পরিষদ চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যানদ্বয় নিতাই গাইন ও চঞ্চলা মন্ডল, রুপান্তরের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ও খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফারুক আহমেদ, কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ রবিউল ইসলাম, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রতাপ ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ টিকাদার, নাগরিক নেতা প্রহ্লাদ জোয়াদ্দার, নারী নেত্রী প্রতিভা বিশ্বাস, ইন্টার কো-অর্ডিনেটর মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর অসীম আনন্দ দাশ, ডিস্টিক্ট কো-অর্ডিনেটর জার্জিস উল্লাহ, মনিটরিং কো-অর্ডিনেটর সৈয়দা সুবহা, তথ্য অফিসার শেখ আব্দুল হালিম, ফিল্ড অফিসার আকাশ সাহা, রাজিব হাসান, টুকু রাণী বিশ্বাস, নমিতা মল্লিক, বাণী সাহা, গোলাম মোস্তফা, মোশাররফ আলী সোহেল, সুব্রত দত্ত, দীপংকর মন্ডল, শান্তনু মন্ডল, আজিজুল হক প্রমূখ। মেলায় কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্পের প্রায় ২১ টি স্টলের গ্রাম বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যের বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।

জনগণ জেগে উঠেছে তারা ওইভাবে নির্বাচন করতে দিবে না : মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁও : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন এখানে একটা একদলীয় শাসনের ব্যাপার আছে সেই ৭৫ সালেও তারা বাকশাল করেছিলেন। আবারো তারা ওইভাবে ভিন্ন চেহারায় ভিন্ন আঙ্গিকে তারা ওই এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু রাখতে চায়। তাই নির্বাচন ব্যবস্থা কে ইতিমধ্যেই ধ্বংস করে দিয়েছে। সেটাকে আবারো ধ্বংস করে আবারও তারা ওই ভাবেই ক্ষমতায় যেতে চায় গত ১৪ই নির্বাচন ও ১৮ সালে নির্বাচন সকলেই দেখেছে। কিন্তু এবার সেটা হবে না, জনগণ জেগে উঠেছে তারা ওইভাবে নির্বাচন করতে দিবে না, জনগণ তার ভোট নিজে দিতে চায় তার প্রতিনিধি নিজে নির্বাচন করতে চায়।

সোমবার সকালে ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের কালিবাড়ি এলাকায় তার নিজ বাসভবনে জেলা বিএনপির বর্ধিত সভার আগে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন ফখরুল আরো বলেন পঞ্চগড়ের যে ঘটনা ঘটেছে এর মধ্যে একটা জিনিস প্রমাণিত হয়েছে যে এই ঘটনাটি সংগঠিত হয়েছে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে। আমরা যেটা বারবার বলে আসছি সরকারের মদদপুষ্ট কিছু মহল তার দেশে একটা নির্বাচনের পূর্বে গণতন্ত্রের জন্য যে আন্দোলন শুরু করেছে মানুষ তাদের অধিকার আদায়ের জন্য। এবং সোচ্চার হয়ে উঠেছে।

এই গণ আন্দোলন যখন বেগবান হচ্ছে তখনই সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এই ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটিয়ে জনগণের দৃষ্টিকে তারা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চায়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, সহ-সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, ঠাকুরগাঁও ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদুল রহমান, জেলা যুবদল সভাপতি আবুনুর চৌধুরী, ছাত্রদল সভাপতি কায়েস, মহিলা দলের সভাপতি ফরহাতুন নাহার প্যারিসসহ জেলা বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

আটোয়ারীতে এগারো সভা অনুষ্ঠিত

মনোজ রায় হিরু, আটোয়ারী (পঞ্চগড়) : পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে মাসিক উপজেলা আইনশৃংখলা, চোরাচালান প্রতিরোধ, সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ, সড়ক নিরাপত্তা, জাতির জনকের জন্মবার্ষিকী ও শিশু দিবস, গণহত্যা দিবস, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ এবং সামাজিক সম্প্রীতি বিষয়ক কমিটির এগারোটি সভা পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৩ মার্চ) সকাল ১০ টা থেকে ধারাবাহিকভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মুসফিকুল আলম হালিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিটি সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ তৌহিদুল ইসলাম। এসময় ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ শাহাজাহান ও রেনু একরাম, আটোয়ারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সোহেল রানা, উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডাঃ মোঃ হুমায়ুন কবির, কৃষি বিভাগের প্রধান মোছাঃ নুরজাহান খাতুন, প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের প্রধান মোঃ মাসুদ হাসান, সাবেক উপজেলা কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ নজরুল ইসলাম, আটোয়ারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আঃ কুদ্দুছ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদ্বয় সহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান ও বিভিন্ন কমিটির সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।

সুন্দরবনে জেলে নামধারী বিষ দস্যুরা বেপরোয়া

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : সুন্দরবনের অভ্যন্তরে বিষ দস্যুদের অপতৎপরতা যেন থামানোই যাচ্ছে না। জেলে নামধারী এসব বিষ দস্যু সুন্দরবনের গহীনে পাস পারমিটের আড়ালে প্রবেশ করে অবাধে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করছেন। এতে করে বনের মৎস্য সম্পদ ও জলজসহ বিভিন্ন প্রাণীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এক শ্রেণীর অসাধু বনরক্ষীদের নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে জেলেরা বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকারে উৎসাহিত হয়। এদিকে বিষ প্রয়োগে ধরা এসব মাছ যাচ্ছে শহরের বিভিন্ন আড়ৎতে। বিষ মিশ্রিত এসব মাছ খেয়ে মানুষের মৃত্যু ঝুঁকির আশঙ্কা বাড়ছে। অপরদিকে এভাবে মাছ ধরায় সুন্দরবনের অভ্যন্তরের বিভিন্ন নদী ও খালে বিভিন্ন মাছ ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জ এলাকায় গত দেড় সপ্তাহ আগে বন রক্ষীরা পৃথক অভিযান চালিয়ে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকারের অভিযোগে ৫ জন বিষ দস্যুকে আটকসহ বিষ, বিষ মিশ্রিত মাছ, জাল ও নৌকা জব্দ করেছেন।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সুন্দরবনের জলভাগের পরিমাণ ১ হাজার ৮৭৪ বর্গকিলোমিটারের বেশি, যা সমগ্র সুন্দরবনের ৩১ দশমিক ১৫ ভাগ। এই জলভাগে জালের মতো ছড়িয়ে রয়েছে ১৩টি বড় নদ-নদীসহ ৪৫০টির মতো খাল। জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়া এই বনের নদ-নদী ও খালে ভেটকি, রুপচাঁদা, দাঁতিনা, চিত্রা, পাঙ্গাশ, লইট্যা, ছুরি, মেদ, পাইস্যা, পোয়া, তপসে, লাক্ষা, কই, মাগুর, কাইন, ইলিশসহ ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ হয়ে থাকে। এ ছাড়া রয়েছে গলদা, বাগদা, চাকা, চালী, চামীসহ ২৪ প্রজাতির চিংড়ি। বিশ্বখ্যাত শিলা কাঁকড়াসহ ১৪ প্রজাতির কাঁকড়ার প্রজনন হয়ে থাকে এই বনের নদ–নদী ও খালে। রয়েছে ৪৩ প্রজাতির মালাস্কা ও এক প্রজাতির লবস্টার। আরও রয়েছে বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির ইরাবতীসহ ছয় প্রজাতির ডলফিন।
উপকূলীয় এলাকা ও বন বিভাগের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দুর্বৃত্তরা পাস পারমিট নিয়ে বনে প্রবেশের সময় নৌকায় বিষাক্ত কীটনাশক নিয়ে যায়। পরে জোয়ারের আগে কীটনাশক চিড়া, ভাত বা অন্য কিছুর সঙ্গে মিশিয়ে নদী ও খালের পানির মধ্যে ছিটিয়ে দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কীটনাশকের তীব্রতায় নিস্তেজ হয়ে পানিতে ভেসে ওঠে। তারা ওই মাছ উঠিয়ে প্রথমে স্থানীয় আড়ৎতে নিয়ে যায়। কোন কোন জেলে আবার বন বিভাগের পাস পারমিট ছাড়াই বনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এ প্রক্রিয়ায় মাছ শিকার করে থাকেন। বিভিন্ন বাজারসহ বিভিন্ন শহরে বাস-ট্রাক ও পিকআপযোগে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। অথচ মাছে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করার কোনো পরীক্ষাগার বন বিভাগের নেই।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জ এলাকায় গত সপ্তাহে বন রক্ষীরা পৃথক অভিযান চালিয়ে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকারের অভিযোগে ৫ জন বিষ দস্যুকে আটকসহ বিষ, বিষ মিশ্রিত মাছ, জাল ও নৌকা জব্দ করেছে।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারী সকালে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের আড়ুয়ারবেড় এলাকার তুলাতুলিতে পাস পারমিট নিয়ে খালে বিষ দিয়ে মাছ ধরার সময় দুইজনকে আটক করেছেন বনপ্রহরীরা। এসময় একজন পালিয়ে যান। অভিযানকালে ঘটনাস্থল থেকে ছয় বোতল বিষ, দুইটি বিষের খালি বোতল, ২০ কেজি বিষ মিশ্রিত চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, একটি জাল ও একটি নৌকা জব্দ করা হয়। আটক হয়েছিলেন বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের সজীব (২১) ও পশ্চিম রাজাপুরের লুৎফর (৫১)। পালিয়ে যান জেলে শাহিন। এ ছাড়া ৩ মার্চ দুপুর ১২টার দিকে শরণখোলা রেঞ্জের ভোলা টহল ফাঁড়ির ইসমাইলের ছিলা এলাকা থেকে বন রক্ষীরা বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকারের অভিযোগে ৩ দুর্বৃত্তকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে এক প্যাকেট কীটনাশক, একটি ডিঙ্গি নৌকা ও একটি মাছ ধরা জাল জব্দ করা হয়। অভিযানকালে এক জেলে পালিয়ে যান। এই অসাধু ব্যক্তিরা পাস না নিয়ে গোপনে বনে প্রবেশ করেছিল।
সুন্দরবন সংলগ্ন স্থানীয়রা জানান, সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ঢাংমারী, মরাপশুর, জোংড়া, ঝাপসি, ভদ্রা, নীল কমল, হরিণ টানা, কোকিলমুনী, হারবাড়িয়াসহ শরণখোলা, সাতক্ষীরা ও খুলনা রেঞ্জের আশপাশ এলাকার বন সংলগ্ন স্থানীয় অসাধু কিছু জেলে নামধারী মৎস্য দস্যু বিষ দিয়ে মাছ ধরছেন। বেশি মুনাফার আশায় সুন্দরবনের বিভিন্ন নিষিদ্ধ খালেও বিষ দিয়ে মাছ শিকার করা হয়। বিষাক্ত পানি সুন্দরবনের বিভিন্ন খাল থেকে ভাটার সময় নদীতে নেমে আসে। এ কারণে মাছ মরে যাওয়ায় এখন নদীতে আর ছোটো-বড়ো মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। বেশি মুনাফার আশায় সুন্দরবনের বিভিন্ন নিষিদ্ধ খালেও তারা বিষ দিয়ে মাছ শিকার করেন জেলেরা।
সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকার লোকজন বলেন, জেলে নামধারী মৎস্য দুর্বৃত্তরা স্থানীয় কিছু মৎস্য আড়ৎদার, দাদনদাতা ও ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় কিছু নেতার লোকজন। তাঁরা মূলত জেলেদের মোটা অঙ্কের দাদন দিয়ে এ কাজ করিয়ে থাকেন। তাঁদের সঙ্গে আছে এক শ্রেণীর অসাধু কীটনাশক বিক্রেতা। চক্রের লোকজন ওই বিক্রেতাদের কাছ থেকে অবাধে কীটনাশক সংগ্রহ করে তা মাছ ধরার কাজে অপব্যবহার করছেন। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে বন বিভাগের কতিপয় অসাধু বনরক্ষী ও কর্মকর্তা উৎকোচের বিনিময়ে এসব জেলেকে বনে মাছ ধরার অনুমতি দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অথচ এসব আড়ৎদার, দাদনদাতা ও স্থানীয় নেতার নামের তালিকা নেই বন বিভাগ বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে।
মোংলা বাজার মৎস্য সমিতির সভাপতি আফজাল ফরাজি সুন্দরবনে বিষ প্রয়োগ করে ধরা মাছ স্থানীয় বাজারে বিক্রিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয় বলে স্বীকার করে বলেন, স্থানীয় কিছু আড়ৎদার এ চক্রকে নিয়মিত মোটা অংকের টাকা দাদন দিয়ে সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ ধরতে পাঠায়। এদের কারণে এখন বাজারে সুন্দরবনের মাছ তেমন একটা পাওয়া যায় না। তবে তিনি এ চক্রের কোন সদস্যর নাম বলতে রাজি হননি।
বন বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, বিষ দিয়ে মাছ ধরায় জেলেদের অনেকই একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু তথ্য প্রমাণের অভাবে দ্রুত জামিনে বেরিয়ে এসে আবার একই কাজে জড়িয়ে পড়েন। প্রভাবশালী ব্যক্তি এদের জামিন প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।
মুলত কৃষি কাজে পোকা দমনে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরণের কীটনাশক বা বিষ দিয়ে এসব মাছ শিকার করা হয়। এর মধ্যে ডায়মগ্রো, ফাইটার, রিপকর্ড এবং পেসিকল নামক কীটনাশকই বেশী ব্যবহার করে জেলেরা। জেলেদের দাবি, এই বিষ বাজারের যে কোনো কীটনাশক দোকান থেকে সংগ্রহ করা যায়।
মোংলা শহরের ১ নম্বর লেবার জেটি এলাকার তাহের এন্টারপ্রাইজ নামে সার ও কীটনাশক দোকানের মালিক আবু তাহের জানান, ডায়মগ্রো, ফাইটার, রিপকর্ড এবং পেসিকল নামের কীটনাশক কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য চাষিরা কিনে থাকেন। এগুলো দিয়ে সুন্দরবনের খালে মাছ মারা হয় কিনা তা তার জানা নেই বলে দাবি করেন। কৃষি বিভাগ অনুমোদন দেওয়ার পরই এই কীটনাশক বিক্রি করেন বলেও জানান তিনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিষ দিলে মাছের সঙ্গে সব প্রজাতির জলজ প্রাণীই মারা যায়। এটা জীববৈচিত্রের জন্য খুবই মারাত্মক। পরিবেশের ওপর যেমন বিরূপ প্রভাব পড়ে অন্যদিকে বিষে মারা ওই মাছ খেয়ে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন মানুষসহ অন্যান্য প্রাণী। কীটনাশক বা বিষ যেখানে প্রয়োগ করা হয়, সেখানে ছোট-বড় সব প্রজাতির মাছ মারা যায়। দুষ্কৃতকারীরা সেখান থেকে শুধু বড় মাছগুলো সংগ্রহ করেন। ছোট মাছগুলো তারা নেয় না। কিন্তু এই ছোট মাছগুলো ছিল বড় মাছের খাবার। ফলে ওই এলাকার খাদ্যচক্রেও ব্যাপক প্রভাব পড়ে। আবার এই কীটনাশক মিশ্রিত পানি ভাটার টানে যখন গভীর সমুদ্রে যায়, তখন সেই এলাকার মাছও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সুন্দরবনের পাখির প্রধান খাবার নদী ও খালের ছোট মাছ। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে সুন্দরবনের নদী-খাল থেকে মাছ শিকার করতে ব্যবহার করা হচ্ছে কীটনাশক ও বিষ। এই বিষে মাছের পাশাপাশি খালের পানিতে থাকা বিভিন্ন পোকা-মাকড়ও বিষাক্ত হয়ে পড়েছে। বিষাক্ত এসব প্রাণী খাবার হিসেবে গ্রহণ করে পাখি। ফলে বিষক্রিয়ায় অনেক প্রজাতির পাখি মারা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সুন্দরবনের বনজীবীরা।
বনজীবিরা আরো জানায়, হঠাৎ করেই কয়েক বছর বনে পাখি কম দেখা যাচ্ছে। বনের গভীরে গেলে মাঝে মাঝে কিছু পাখির দেখা মেলে। খালে ভেতর অনেক পাখি মরে পড়ে থাকতে দেখেছি। নদীতে মরা পাখি ভেসে যেতেও দেখি মাঝে মাঝে। অনেকে খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার করে। সেই বিষাক্ত মাছ খেয়ে এসব পাখি মারা যাচ্ছে।

মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান চিকিৎসক ডা. মোঃ শাহিন বলেন, বিষাক্ত পানির মাছ খেলে মানুষের পেটের পীড়াসহ কিডনি ও লিভারে জটিলতা দেখা দেয়। তিনি বিষ মিশ্রিত মাছ না খাওয়ার জন্য জনসাধারণকে সজাগ থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন।

মোংলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবনের অভ্যন্তরে বিষ দিয়ে মাছ শিকার বন্ধে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি এর ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। তিনি বিষ দিয়ে মাছ শিকার বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ স্থানীয় জনগণকে আরো সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান।

মোংলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মাছ ধরতে যেসব কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে, তা ধানসহ বিভিন্ন শাকসবজির খেতের ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ মারার কাজে ব্যবহার করা হয়। এটি খুবই বিষাক্ত। মোংলার কীটনাশক বিক্রেতা ও ডিলারদের নির্দেশনা দেওয়া আছে, যেন তাঁরা তালিকাভুক্ত চাষি ছাড়া অন্য কারও কাছে এসব বিক্রি না করেন।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, এসব কীটনাশক যেখানে প্রয়োগ করা হয়, সেখানে ছোট-বড় সব প্রজাতির মাছ মারা যায়। দুষ্কৃতকারীরা সেখান থেকে শুধু বড় মাছগুলো সংগ্রহ করে। ছোট মাছগুলো তারা নেয় না। কিন্ত এই ছোট মাছগুলো ছিল বড় মাছের খাবার। ফলে ওই এলাকার খাদ্যচক্রেও ব্যাপক প্রভাব পড়ে। আবার এই কীটনাশক মিশ্রিত পানি ভাটার টানে যখন গভীর সমুদ্রের দিকে যায়, তখন সেই এলাকার মাছও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো যেসব খালে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়, তার বিষক্রিয়া সংশ্লিষ্ট এলাকায় চার মাস থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত থাকে। এর চেয়ে সর্বনাশা কাজ আর কিছুই হতে পারে না।

সুন্দরবন নিয়ে গবেষনাকারী বেসরকারি সংস্থা ‘সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশন’র চেয়ারম্যান লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, কীটনাশক দিয়ে মাছ ধরায় শুধু সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না, এই বিষাক্ত পানি পান করে বাঘ, হরিণ, বানরসহ অন্য বন্যপ্রাণীরাও মারাত্মক হুমকির মধ্যে রয়েছে। এতে উপকূলীয় এলাকায় মানুষের পানীয় জলের উৎসগুলোও বিষাক্ত হয়ে পড়ছে। কীটনাশক প্রয়োগে বনজ সম্পদ পাচার, বন্যপ্রাণী নিধন, জলবায়ুজনিত পরিবর্তন, দস্যুবৃত্তির চেয়েও ভয়াবহ বিপর্যয়। সরকারের এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ও স্থানীয় সাংসদ (মোংলা-রামপাল) হাবিবুন নাহার বলেন, অপ্রতুল লোকবল দিয়ে সুন্দরবনের সব নদী-খাল পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়। তার পরও আমরা যতটুকু সম্ভব আইন প্রয়োগ করার চেষ্টা করছি। বনবিভাগসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি। ব্যক্তিগতভাবেও সভা-সমাবেশে কীটনাশক প্রয়োগের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে স্থানীয় মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি।

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, সুন্দরবনে অসাধু মাছ ব্যবসায়ী ও জেলে বিষ দিয়ে মাছ শিকারের সাথে সম্পৃক্ত। প্রায় সময়েই অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু তারা দ্রুত আদালত থেকে জামিনে এসে আবার একই কাজ করেন। গ্রেফতারের পর কেন দ্রুত জামিনের বেরিয়ে আসেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষ দিয়ে শিকার করা মাছ শনাক্ত করার মেশিন আমাদের কাছে নেই। তাই এ বিষয়ে প্রমাণ আদালতে উপস্থান করা যায় না।
বিষ দিয়ে মাছ শিকার ও এ প্রক্রিয়ার সাথে বন বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা ও সদস্য সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তবে এমন অভিযোগ একেবারেই কম বলে তিনি মন্তব্য করেন।

মোংলায় ১২ কেজি হরিণের মাংসসহ আটক ২

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : মোংলায় হরিণের মাংস কিনতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়লেন দুই ব্যক্তি। এ সময় মাংস ফেলে রেখে পালিয়ে যান দুই পাচারকারী। পরে ঘটনাস্থল থেকে ১২ কেজি হরিণের মাংস জব্দসহ দুই ক্রেতাকে আটক করেছেন পুলিশ। মুলত লোভের বশত মাংস কিনতে গিয়ে ধরা খেলেন রাজমিস্ত্রী ও ভ্যান চালক, এ যেন ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু’। স্থানীররা বলেন, পাচারকারীরা পালিয়ে গেলেন, আর লোভ মাংস কিনতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন নিরীহ দুইজন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার চিলা ইউনিয়নের জয়মনি এলাকার জনৈক হাসান ও চাঁদপাই ইউনিয়নের চাঁদপাই গ্রামের জনৈক কাদের সোমবার সকাল ১০টার দিকে পৌর শহরতলীর নারকেলতলা এলাকায় হরিণের মাংস বিক্রি করতে আসেন। এরপর স্থানীয় বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন (৩২) ও বেল্লাল শরীফ (৩০) ৭শ টাকা দরে দুই কেজি করে মাংস কিনতে গেলে লোকজন দেখে ফেলেন। হরিণের মাংস বিক্রির খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি মেম্বর হারুন মল্লিক ও গ্রামবাসী ছুটে আসলে পাচারকারী হাসান ও কাদের মাংস ফেলে রেখে পালিয়ে যান। রাস্তার উপর মাংস ফেলে যাওয়ার বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১২ কেজি হরিণের মাংস জব্দসহ মাংস ক্রেতা সাদ্দাম ও বেল্লালকে আটক করেন। আটক সাদ্দাম ও বেল্লাল পুলিশের সামনে বলেন, জয়মনির হাসান ও চাঁদপাইর কাদের এ মাংস বিক্রি করতে আসেন। এরপর ৭শ টাকা কেজি দরে ২কেজি করে মাংস কিনতে যান তারা। পরে লোকজন টের পেয়ে তাদেরকে ধরে পুলিশে খবর দেয়। আর লোকজন জড়ো হতেই পাচারকারী ও বিক্রেতা জনৈক হাসান ও কাদের মোটরসাইকেল করে দ্রুত পালিয়ে যান। আটক সাদ্দাম উপজেলার চাঁদপাই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নারকেলতলা আবাসনের বাসিন্দা হাবিবুর রহমানের ছেলে। সাদ্দাম পেশা রাজমিস্ত্রী। আর বেল্লাল একই এলাকার সুলতান শরীফের ছেলে। বেল্লায় পেশায় ভ্যান চালক।
মোংলা থানার এসআই মোঃ মিরাজ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ১২ কেজি হরিণের মাংসসহ সাদ্দাম ও বেল্লাল নামের দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর আটককৃতদেরকে জব্দকৃত মাংসসহ বাগেরহাট কোর্টে প্রেরণ করা হবে।

খুবিতে কটকা ট্রাজেডি স্মরণে শোক দিবস পালিত

বিজ্ঞপ্তি : আজ ১৩ মার্চ (সোমবার) নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে কটকা ট্রাজেডি স্মরণে পালিত হয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস। ২০০৪ সালের এ দিনে সুন্দরবনের কটকায় সফরে গিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের ৯ জন এবং বুয়েটের ২ জনসহ মোট ১১ জন ছাত্র-ছাত্রী সমুদ্রগর্ভে নিমজ্জিত হয়ে শাহাদতবরণ করেন। সেই থেকে প্রতিবছর দিনটি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে সাজানো হয় শোকাবহে।
শোক দিবস পালন উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্বরে সকাল ৯টায় কালোব্যাজ ধারণসহ ৯টা ১৫ মিনিটে একটি শোকর‌্যালি শুরু হয়ে প্রশাসনিক ভবন প্রদক্ষিণ করে কটকা স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে শেষ হয়। শোকর‌্যালিতে উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, বিভিন্ন স্কুলের ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধান, ছাত্রবিষয়ক পরিচালক, প্রভোস্ট ও বিভাগীয় প্রধানসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন। এর পরপরই কটকা স্মৃতিস্তম্ভে উপাচার্যের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা। পরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপত্য ডিসিপ্লিনসহ বিভিন্ন ডিসিপ্লিন, সকল হল, শিক্ষক সমিতি ও অফিসার্স কল্যাণ পরিষদের পক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।
এছাড়া সমুদ্রগর্ভে নিমজ্জিত শাহাদতবরণকারী শিক্ষার্থীদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। অতঃপর সেখানে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেনের পক্ষে অভিব্যক্তি পাঠ করে শোনান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস।
আলোচনা অনুষ্ঠানে সেই ঘটনাকে স্মরণ করে উপ-উপাচার্য বলেন, ২০০৪ সালের এ দিনটিকে আমরা প্রতি বছর শোক দিবস হিসেবে পালন করে আসছি। যখন এই কটকা স্মৃতিস্তম্ভে আসি তখন আমরা শোকে বিহ্বল হয়ে পড়ি। ১৩ মার্চের ঘটনা ও হাদী চত্বরের ঘটনা খুবই বেদনাদায়ক। এরকম ঘটনার যাতে আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের সেশনাল ট্যুর বা অন্যান্য ভ্রমনের স্থান নির্ধারণ ও সময়ের ব্যাপারে আরও সচেতন হতে হবে। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, কটকায় সেদিন যে ঘটনাটি ঘটেছিলো তা সারা দেশে গভীর আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো। দুর্ঘটনায় পীড়িত এ জনপদের মানুষও সেদিন মেধাবী এই ছাত্র-ছাত্রীদের অকাল মৃত্যুকে কোনোভাবেই মানতে পারেনি। তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও সাবধান থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
স্থাপত্য ডিসিপ্লিন প্রধান ও সংশ্লিষ্ট কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. শেখ সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের শিক্ষক গৌরী শংকর রায়, ছাত্র-বিষয়ক পরিচালকের পক্ষে সহকারী ছাত্র-বিষয়ক পরিচালক মোহাম্মদ রাকিবুল হাসান সিদ্দিকী। পরে শাহাদতবরণকারী শিক্ষার্থীদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি আব্দুল কুদ্দুস। আলোচনা পর্ব শেষে উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, ডিনবৃন্দ, রেজিস্ট্রারসহ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ শাহাদাতবরণকারীদের আলোকচিত্র নিয়ে আয়োজিত প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। এছাড়া দিনের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বাদ যোহর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল, এতিমদের জন্য মধ্যাহ্ন ভোজ, সন্ধ্যা ৬.৪৫ মিনিটে শোকসভা ও স্মৃতিচারণ এবং সন্ধ্যা ৭.১৫ মিনিটে কটকা স্মৃতিস্তম্ভে আলোকসজ্জা।

কয়রায় নছিমন উল্টে চালকের মৃত্যু

কয়রা প্রতিনিধি : খুলনার কয়রায় বালু ভর্তি নছিমন উল্টে মনি কান্ত মন্ডল (৪১) নামের এক চালকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার ১৩ মার্চ সকাল ৯ টায় উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের মহেশ্বরীপুর নয়ানি পাউবোর বেড়ি বাঁধে এঘটনা ঘটে। ঘটনা স্থলে তার মৃত্যু হয়। সে একই এলাকার হরিপদ মন্ডলের ছেলে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের দফাদার রাজা গাজী বলেন, মনি কান্ত ভাড়ায় নছিমন চালক। সে আজ সকালে ভাড়ায় বালু ভর্তি নছিমন নিয়ে মহেশ্বরীপুর নয়ানি পাউবোর রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নছিমন উল্টে চালক মনি কান্ত নছিমনের নিচে চাপা পড়ে ঘটনা স্থলে তার মৃত্যু হয়।

লোহাগড়ায় প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

লোহাগড়া (নড়াইল) : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা প্রাণী সম্পাদ কর্মকর্তা ডা: মো: জিন্নু রাইনের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে স্থানীয় খামারীরা মানববন্ধন করেছেন।
সোমবার (১৩ মার্চ) বেলা ১১ টায় লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের সামনে কালনা-নড়াইল মহাসড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে শতাধিক খামারীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঘন্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন খামারী মো: মনিরুজ্জামান, মো: আসাদুজ্জামান, হুমায়ুন কবীর, রবি মোল্যা, ইমরান হোসেন কচি, হাসান মোল্যা, লক্ষী রাণী বিশ্বাস প্রমূখ।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: জিন্নু রাইন লোহাগড়ায় যোগদানের পর থেকেই নানা অনিয়ম, দূর্নীতি এবং স্বেচ্ছাচারিতায় জড়িয়ে পড়েছেন। তিনি খামারীদের রোগাক্রান্ত পশু-প্রাণী সঠিক ভাবে দেখভাল করেন না। স্থানীয় খামারীরা প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে আসলে সেখান থেকে কোন ঔষুধ সরবরাহ করা হয় না। এনিয়ে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে খামারীদের প্রায়শই বাক-বিতন্ডা হয়ে থাকে। এছাড়া তিনি খামারীদের রোগাক্রান্ত পশু-প্রাণীর চিকিৎসাপত্র দিয়ে হাসপাতাল সংলগ্ন নিদিষ্ট একটি দোকান থেকে ঔষুধ কিনতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী প্রত্যেক উপজেলায় একটি ‘স্মার্ট খামার’ বরাদ্দের ক্ষেত্রে ওই কর্মকর্তা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারীতার আশ্রয় নিয়ে জনৈক আফসার নামে একজন অখ্যাত খামারীকে স্মার্ট খামার বরাদ্দ দিয়েছেন। এতে করে, ওই এলাকার খামারীরা ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন।
মানববন্ধন থেকে স্থানীয় খামারীরা অভিযুক্ত ওই প্রানী সম্পদ কর্মকর্তার দ্রুত অপসারনসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

খুকৃবির সাবেক ভিসি ও বর্তমান রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা নেয়ার নির্দেশ

খুলনা : খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুকৃবি) সাবেক উপাচার্য (ভিসি) ড. শহীদুর রহমান খান ও বর্তমান রেজিস্ট্রার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ারের নামে সোনাডাঙ্গা থানায় ধর্ষণের মামলা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালত সূত্রে জানা যায়, খুকৃবির অস্থায়ী অফিসের পঞ্চম তলায় থাকতেন সাবেক উপাচার্য। সেখানে খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় রেজিস্ট্রার ওই নারীকে খাবারের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব দেন। ওই নারী প্রতিদিন খাবার পৌঁছে দিতেন। সেই সুবাদে তাকে বিভিন্ন সময়ে ‘কুপ্রস্তাব’ দিতে থাকেন উপাচার্য। একপর্যায়ে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে খাবার দিতে গেলে পরিকল্পিতভাবে রেজিস্ট্রারের সহযোগিতায় ওই নারীকে ধর্ষণ করেন উপাচার্য।

পরে রেজিস্ট্রার ওই নারীকে বলেন, ‘আজকের ঘটনা তুমি কাউকে বলবে না। তাহলে তোমার চাকরি থাকবে না। আর স্যারকে বলে স্যারের সাথে তোমার বিবাহ করিয়ে দিব। তুমি তোমার স্বামীকে তালাক দিয়ে দাও।’

আদালত সূত্রে আরও জানা যায়, ওই নারী চাকরি বাঁচাতে কাউকে কিছু না জানিয়ে স্বামীকে তালাক দেন। এরপর থেকে ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ভিসি ওই নারীর সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে মেলামেশা করতে থাকেন। একপর্যায়ে মেয়াদ শেষ হলে খুলনা বদলি হয়ে যান উপাচার্য। তিনি ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।

পরবর্তী সময়ে ২০২৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সাবেক ভিসি খুলনায় এলে ওই নারী তার সঙ্গে দেখা করেন। একপর্যায়ে পায়ে ধরে কান্নাকাটি করে বিয়ে করার আকুতি জানান, তবে ভিসি তাতে রাজি হননি।
পরে ওই নারী স্বজনদের বিষয়টি জানিয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা করতে যান। থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ না করে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়।

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণের অভিযোগকারী ওই নারী প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টোর কিপার হিসেবে চাকরি করতেন। পরে তাকে উপাচার্যের ব্যক্তিগত সরকারি (পিএ) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

উপাচার্য গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর তার মেয়াদ শেষ করেছেন। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহে নিজের বাড়িতে থাকেন। উপাচার্যের বিরুদ্ধে স্ত্রী, ছেলে-মেয়েসহ আত্মীয়-স্বজনকে অবৈধভাবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

ধর্ষণের অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. শহীদুর রহমান খানের সঙ্গে মুঠোফোন একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার বলেন, ‘ওই ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। ‘আর যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটেই থাকে, তাহলে সেটি ওই নারী ও ভিসির একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। সেটি আমার জানার কথা নয়।’