খুলনায় রোজার আগেই খেজুরের দামে অস্থিরতা

খুলনা : আর মাত্র কয়েকদিন পরই শুরু হবে মাহে রমজান। এই রমজানকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। বিশেষ করে রোজার ইফতার সামগ্রীর দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যায়। প্রতিবারের মতো এবারও যেন এর ব্যত্যয় নেই। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে গত বছরের চেয়ে এবার আরও বেশি দামে কেনাবেচা হচ্ছে। এরইমধ্যে খেজুরের দাম কার্টুনপ্রতি এক হাজার থেকে এক হাজার দুইশ টাকা বেড়েছে। খুলনা নগরীর বেশ কয়েকটি ফলের দোকান ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। উচ্চ পুষ্টিমানের কারণে রোজায় ইফতারে  প্রায় সবাই খেজুর রাখেন। ফলে রোজা এলেই এ পণ্যটির চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এই সুযোগটি যেন লুফে নিতে ভুল করেন না ব্যবসায়ীরা। তবে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখানে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা যেভাবে কিনি সেভাবেই বিক্রি করি। আমাদের লাভের পরিমাণ খুবই সামান্য। এখানে বরাবরই সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা সুবিধা ভোগ করেন। তাছাড়া এবার ডলার সংকটের কারণেও খেজুরের দাম বেড়েছে।

এরইমধ্যে মমতাজ-মরিয়ম জাতের খেজুরের কার্টন এক হাজার ৫০০ থেকে বেড়ে দুই হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ফরিদা জাতের খেজুরের কার্টন ৮০০ থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার টাকায়। বর্তমানে ডালবারালি খেজুর ৪৫০ টাকা, বরই খেজুর ৩০০-৪০০ টাকা, দাবাস ২০০ টাকা, জিহাদি ১৮০ টাকা, কামরাঙ্গা ৪০০ টাকা, তিউনিসিয়া ৩৫০ টাকা, আজোয়া ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সর্বনিম্ন দামে যে খেজুরটি আগে কেজিপ্রতি বিক্রি হতো ৯০ টাকায় গত কয়েকদিন ধরে সেই খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকায়।

আলী হাসান নামে এক ক্রেতা বলেন, রমজান শুরু হতে এখনো প্রায় এক সপ্তাহ বাকি। অথচ এখনই খেজুরের দাম কয়েকগুণ হয়েছে। ভেবেছিলাম এখন কিনলে হয়তো কম দামে খেজুর কিনতে পারবো। এসে দেখি দাম বেড়ে গেছে। বাধ্য হয়েই বেশি দামে খেজুর কিনে নিয়ে যেতে হচ্ছে।

মনির নামে এক খেজুর বিক্রেতা ক্ষোভ  প্রকাশ করে বলেন, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রমজান মাসে খেজুরের চাহিদা বেশি থাকায় নানা অজুহাত দেখিয়ে খেজুরের মূল্যবৃদ্ধি করা হয়। সরকার কঠিন মনিটরিং করে না বিধায় সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা নিজের মনমতো দাম বাড়ান। এবার খেজুরের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। চিন্তা করেছি আর ব্যবসা করবো না। কারণ পোষাতে পারি না। ঈদের পর বিদেশ চলে যাবো। হাফিজ নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের এখনই বাড়তি দাম দিয়ে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে খেজুর কিনতে হচ্ছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। দাম তো আমরা বৃদ্ধি করি না। বর্তমানে বাড়তি দামে খেজুর কেনার ফলে আমাদের লাভের পরিমাণ কমে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যবসা করে আসছি, তাই কম লাভ হলেও ছাড়তে পারছি না।

শহরের ফলপট্টিতে প্রায় ১০ বছর ধরে ব্যবসা করেন আসাদ আলী। তিনি  বলেন, আমার দোকানটিতে ১০-১২ আইটেমের ফল রয়েছে। রোজার আগে সবসময় খেজুরের চাহিদা বেশি থাকে। কিন্তু এবার চাহিদা কম থাকায় বিক্রি খুবই কম হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমরা এখনই ঠিকমতো খেজুর কিনতে পারছি না। বেশি দামে বিক্রি না করে কোনো উপায় নেই।

এদিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর খুলনা জানায়, আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করে আসছি। রমজান মাসেও আমাদের এই মনিটরিং অব্যাহত থাকবে। যদি কোনো ব্যবসায়ী অযৌক্তিকভাবে খেজুরের দাম বেশি রাখে আর আমাদের কাছে অভিযোগ করা হয় তাহলে অবশ্যই সে ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।

বেনাপোলে ছয় চোরাকারবারী আটক

বেনাপোল প্রতিনিধি : যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের অভিযানে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় শাড়ী ও বিভিন্ন প্রসাধনী সহ ৬ চোরাকারবারিকে আটক করেছে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে বেনাপোল পোর্ট থানার ছোট আঁচড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে আটক করা হয়।

আটকৃতরা হলো ভারতের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার স্বরুপ নগর থানার সাকদাহ জাদবপুর গ্রামের আজগর মন্ডলের ছেলে কুদ্দুস মন্ডল, যশোর জেলার কোতোয়ালি থানার রামনগর খাঁপাড়া গ্রামের, মৃত আব্দুস সুবহানের ছেলে মোঃ মানিক মিয়া, বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামের মোঃ আব্দুর রশিদের ছেলে মোঃ আলী হোসেন,বেনাপোল পোর্ট থানার ছোট আঁচড়া গ্রামের মৃত সালেক শেখের ছেলে মোঃ তরিকুল ইসলাম, বেনাপোল পোর্ট থানার গাতিপাড়া গ্রামের মোঃ আব্দুল আজিজের ছেলে মোঃ ইমরান হোসেন, বেনাপোল পোর্ট থানার সাদীপুর গ্রামের মোঃ ইউসুফ আলীর ছেলে মোঃ তানভির হোসেন।

নাভারন সার্কেলের এএসপি নিশাত আল নাহিয়ান জানান, যশোর জেলা পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, বিপিএম (বার) পিপিএম এর নির্দেশক্রমে বেনাপোল পোর্ট থানাধীন ছোট আঁচড়া সাকিনস্থ বেনাপোল স্থলবন্দরের ২২নং শেডের সামনে পাঁকা রাস্তার উপর অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় শাড়ী ও বিভিন্ন প্রসাধনী জব্দ ৬ জন চোরাকারবারী আটক করা হয়েছে।

আটককৃত শাড়ী ও বিভিন্ন প্রসাধনীর আনুমানিক বাজার মূল্য (১৮,৭৫০,৬০/- (আঠারো লক্ষ পঁচাত্তর হাজার ষাট টাকা।

এবিষয়ে বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ কামাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, গ্রেফারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে যশোর আদালতে পাঠানো হবে।

রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ানো যাবে না : সিটি মেয়র

খুলনা : আসন্ন পবিত্র মাহে রমজান এর পবিত্রতা রক্ষা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিটি কর্পোরেশনের শহিদ আলতাফ হোসেন মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।

সভাপতির বক্তব্যে সিটি মেয়র বলেন, পবিত্র মাহে রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ানো যাবে না। খাদ্যপণ্যে কোন প্রকার ফরমালিন ব্যবহার করা যাবে না। রজমান মাসে সাধারণ ক্রেতার জন্য দ্রব্যমূল্যের দাম যেন অস্থিতিশীল না হয়, সহনশীল পর্যায়ে থাকে এবিষয়ে সকল পর্যায়ের ব্যবসায়ীকে সহানুভূতিশীল থাকার আহবান জানান মেয়র। তিনি আরও বলেন, রমজান মাসে অতিরিক্ত মুনাফার আশায় পঁচা, বাসি এবং ভেজাল খাদ্যদ্রব্য যেন বিক্রয় না হয় সেদিকে ব্যবসায়ীদের নজর দিতে হবে। পবিত্র মাহে রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা জোরদার করা হবে।

সভায় জানানো হয়, মহানগরে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জনগণের পণ্য ক্রয়ের সুবিধার্থে পণ্যের বিক্রয় মূল্যের তালিকা টাঙিয়ে রাখতে হবে। এ বছর রমজানে প্রতি কেজি গরুর মাংস সাতশ’ টাকা এবং খাসির মাংসের মূল্য নয়শ’ ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় আশ^াস দেন ব্যবসায়ীরা।

কেসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম, সচিব মোঃ আজমুল হক, কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ সাজিদ হোসেন, কেসিসি’র নির্বাহী ম্যাজিস্টেট জান্নাতুল আফরোজ স্বর্ণা, বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর, সরকারি কর্মকর্তাসহ ব্যবসায়ীরা এ মতবিনিময় সভায়  অংশগ্রহণ করেন।

যশোর খাজুরা বাসস্ট্যান্ডের ট্রাফিক আইল্যান্ড বেদখলে

যশোর অফিস : যশোর উপশহর খাজুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকার যশোর ঝিনাইদহ, খুলনা, মাগুরা সড়কে যত্রতত্র বালি বোঝাই ট্রাক, বাস রেখে ফুটপাতসহ সরকারি চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে রাখায় প্রতিনিয়ত যানজটে জনজীবনে নাভি:শ্বাস হয়ে পড়ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তাছাড়া, যানজট নিরসনে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের জন্য করা ট্রাফিক আইল্যান্ড রাজনৈতিক ব্যানারে দখল করে রাখায় ট্রাফিক পুলিশ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত দায়িত্ব পালন করলেও যানজট নিরসনে চরমভাবে হিমশিম খাচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত সদস্য ও জনসাধারণ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

যশোর উপশহর খাজুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ট্রাফিক পুলিশ অভিযোগ করেন, তারা প্রতিনিয়ত চরম ঝুঁকি নিয়ে যানজট নিরসনে দায়িত্ব পালন করছেন। এখানে যশোর মাগুরা,খুলনা,জেলরোড ও ঝিনাইদহ সড়কের সংযোগ স্থনে ট্রাফিক আইল্যান্ড রয়েছে। ট্রাফিক আইল্যান্ডে বছর খানেক পূর্বে জনৈক ব্যক্তি বিল বোর্ড তৈরী করে ট্রাফিক আইল্যান্ডের কার্যক্রম বিনষ্ট করেন। এরপর জেলা প্রশাসনের নজরে আসলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লোহার খুঁটি দিয়ে তৈরী করা বিলবোর্ড অপসারণ করে সেখানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ  থেকে একটি নোটিশ সম্বলিত প্যানা টাঙ্গিয়ে দেয়া হয়। যাতে লেখা ছিল এখানে কেউ কোন সাইন বোর্ডসহ কোন কিছু ব্যবহার করবেন না। আদেশক্রমে জেলা প্রশাসন লেখা সম্বলিত সাইন বোর্ড রাতারাতি উধাও হয়ে ট্রাফিক আইল্যান্ড দখল করে যুবলীগ পরিচয় এক যুবক তার ছবি ও রাজনৈতিক ব্যক্তির ছবির সাথে প্যানা বোর্ড সৃষ্টি করে ট্রাফিক আইল্যান্ড পুলিশের দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ন অকার্যকর সৃষ্টি করেছেন। যার ফলে উপশহর খাজুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকা প্রতিদিন সকাল থেকে দিনের অধিকাংশ সময় যানজট লেগেই থাকে। সরেজমিনে যেয়ে দেখাগেছে,খাজুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে মাগুরা ঢাকা মহাসড়কের দু’পাশে বালি বোঝাই ট্রাক,খালি ট্রাক, ওই সড়কে চলাচলরত বাস রাস্তার পশ্চিম ও পূর্ব পাশ দখল করে ফুটপাতসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। যার ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পথচারী ও ট্রাফিক আইল্যান্ড বিহীন ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন। মাগুরা সড়কের ন্যায় ঝিনাইদহ,খুলনা সড়কের রাস্তার দু’পাশ বিভিন্ন বাস রাস্তা দখল করে পথচারীদের ঝুঁকির মধ্যে  ফেলে। এ ব্যাপারে প্রতিনিয়ত চলাচলরত পথচারীরা যশোরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

মেহেরপুরে শিশু ধর্ষণ, যুবক গ্রেফতার

মেহেরপুর : মেহেরপুর সদর উপজেলায় ১২ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে রিগান (৩৫) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গতকাল বুধবার (১৫ মার্চ) দিনগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে গাংনীর খাসমহল গ্রাম থেকে রিগানকে গ্রেফতার করে মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল।

গ্রেপ্তারকৃত রিগানের বাড়ি সদর উপজেলার তেরঘরিয়া গ্রামে। এর আগে তার বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবার।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী নানার বাড়ি তেরঘরিয়া গ্রামে বেড়াতে আসে। গতকাল বুধবার দুপুরে নানার বাড়িতে তাকে একা পেয়ে প্রতিবেশী রিগান ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় স্বজনরা।

মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জমির মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তার বলে, ‘শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।’

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফ বলেন, ‘ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর গা ঢাকা দেয় রিগান। পরে তাকে আত্মীয়ের বাড়ি খাসমহল গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’

কুষ্টিয়ায় ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা

কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সদর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য কাজল হোসেনকে (৪২) কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তার বাড়ি ওই ইউনিয়নের দৌলতখালী গ্রামে।

বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাড়ির পাশে সর্দারপাড়া মোড়ে কাজলকে ধারালো হাসুয়া দিয়ে পিঠে ও ঘাড়ে কুপিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহত কাজলের প্রতিবেশী মহব্বত হোসেন বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন এবং এলাকায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে সর্দারপাড়ার লোকজনের সঙ্গে কাজলের বিরোধ চলছিল। এর জেরে তারা এ হামলা করতে পারে।’

দৌলতপুরে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবর রহমান বলেন, ‘কাজলের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এখনও এ ঘটনায় মামলা হয়নি। তবে, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

ঝালকাঠিতে বাসচাপায় স্কুলছাত্রসহ নিহত ২

ঝালকাঠি : ঝালকাঠির নলছিটিতে যাত্রীবাহী বাসের চাপায় স্কুলছাত্রসহ দুইজন নিহত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে বরিশাল-পটুয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের শিমুলতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র তুর্য্য ভট্টাচার্য্য ও ভ্যানচালক মো. আকাশ। এ ঘটনায় স্কুলশিক্ষার্থীরা দুই ঘণ্টা বরিশাল-পটুয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ এবং দোষীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে। এতে শিমুলতলা এলাকায় সড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে সকাল ১১টার দিকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

স্থানীয়রা জানান, সকালে বাসা থেকে স্কুলে যায় তুর্য্য ভট্টাচার্য্য। সে স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে ভ্যানচালক আকাশের সঙ্গে কথা বলছিল। এ সময় বরিশাল থেকে পটুয়াখালীগামী দ্রুতগতির আল আমিন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘নিহত তুর্য্যের বাড়ি বাকেরগঞ্জে। তবে ভ্যানচালক আকাশের এখনও পুরো পরিচয় জানা যায়নি। দুর্ঘটনা কবলিত বাসটি জব্দ করা হয়েছে এবং চালক পালিয়ে গেছে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।’

গোপালগঞ্জে বাসের ধাক্কায় নারী নিহত

গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে বাসের ধাক্কায় মালেকা বেগম (৬০) নামে এক নারী নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকাল ৭টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পাথালিয়া এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মালেকা বেগমের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা গ্রামে।

এই ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসী গাছের গুঁড়ি ও ডালপালা ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় সড়কের উভয় পাশে অনেক যানবাহন আটকা পড়ে। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শীতল চন্দ্র পালের আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার করেন তারা।

গোপালগঞ্জের ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ওই নারী রাস্তা পারাপারের সময় ফাল্গুনী পরিবহনের একটি বাস ধাক্কা দেয়। এতে তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান। মরদেহ উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’ তবে, এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি বলে জানান ওসি।

এদিকে, এ ঘটনায় নিহতের ছেলে হুমায়ূন কবিরের অভিযোগের ভিত্তিতে গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলে জানান পরিদর্শক (তদন্ত) শীতল চন্দ্র পাল।

সন্তানের দাবি মায়ের মৃত্যুর জন্য ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পিতা দায়ী নয়!

লোহাগড়া প্রতিনিধি : সন্তান মকিদ মীর (১৬) এর দাবি আমার মায়ের মৃত্যুর জন্য ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আমার পিতা দায়ী নয়। পারিবারিক সূত্র জানায়, ২০০৭ সালে নড়াইলের লোহাগড়ার চরবকজুড়ি গ্রামের লায়েব আলী মীরের ছেলে লাবলু মীর এর সাথে বাকা গ্রামের ফটিক খন্দকারের মেয়ে মুক্তা (মনি) বেগমের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। নাম মকিদ মীর। বর্তমান বয়স প্রায় ১৬-১৭ হলেও মায়ের মৃত্যুর সময় বয়স ছিলো আনুমানিক ৬-৭ বছর। মকিদ মীর জানান, ২০১২ সালের ২১ মে বেলা ১২টার দিকে আমার মা আমাকে কোলে নিয়ে বাড়ির পাশে মধুমতি নদীতে গোসল করতে যান। আমাকে ঘাটের উপরে বসিয়ে রেখে মা নদীতে ডুব দেন কিন্তু মা দীর্ঘ সময় পার হলেও পানির নিচ থেকে উঠছিলেন না।

সূত্র আরো জানায়, প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন মোঃ লাবলু মীর। সে ঘরে স্ত্রীসহ দুটি সন্তান রয়েছে। দ্বিতীয় স্ত্রী চাম্পা বেগম বলেন, নদী ভাঙ্গনে জমিবাড়ি সবই হারিয়েছি। আমার গর্ভের দুটি সন্তান। মেয়ে মাহেরা ৮বছর, ছেলে হুসাইন মাত্র ৪মাস বয়সী। স্বামী এখন জেলে। সংসার চালাতি পারছি না। পরের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাই।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মুক্ত (মনি) বেগমকে হত্যার দায়ে তার বোন সালেহা সুলতানা লোহাগড়া থানায় ২০১২ সালের ৪ জুন ৫জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। যার নং-০৭। ওই মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নড়াইলের বিজ্ঞ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সানা মোঃ মাহরুফ হোসাইন ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর মামলার রায় ঘোষণা দেন। রায়ে মোঃ লাবলু মীর এর মৃত্যু দণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন। এছাড়াও মামলার আসামী লায়েব আলী মীর, লাভলী বেগম, মোঃ মামুন মীর ও মোসাঃ লিজা বেগমকে খালাস প্রদান করেন আদালত। রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন।  মকিদ মীরের(১৬) গর্ভধারিনী মা বেঁচে নেই আর মাকে হত্যার অভিযোগে জন্মদাতা পিতার মাথার উপর ফাঁসির দঁড়ি ঝুলছে! সন্তান মকিদসহ পরিবারটি মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাধারণ ক্ষমা প্রার্থনা করছেন।