তাপস কুমার বিশ্বাস, ফুলতলা (খুলনা)// বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জনগণ পরিবর্তন চাই। গত ১৬-১৭ বছরে যে দুঃশাসন, নির্যাতন, নিষ্পেশন ও অপকর্ম জনগণ দেখেছে সেই নির্যাতন নিষ্পেষণ অপকর্মের দিকে আর ফিরে যেতে চাই না। জনগণ এক ফ্যাসিবাদকে বিদায় দিয়ে নতুন করে আর এক ফ্যাসিবাদকে ক্ষমতায় আনতে চায় না। তারা এমন একটি রাষ্ট্র গঠন করতে চায় যা পরিচালিত হবে ন্যায় ও ইনসাফের ভিত্তিতে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঠিক তেমন একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র গড়তে চাই যেখানে থাকবে না কোন অন্যায়, অত্যাচার, জুলুম, নির্যাতন, দুর্নীতি ও দুঃশাসন। থাকবে পরস্পর পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান, ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্ববোধ। রাষ্ট্রের মালিকানা থাকবে জনগণের আর শাসক হবে সেবক। যেখানে শাসক কখনো শোষক হবে না, লুটপাট করবে না, দুর্নীতি, অন্যায়, অত্যাচার, জুলুম নির্যাতন করবে না।
বুধবার বিকাল ৫টায় ফুলতলা উপজেলার শিরোমণি হাফিজিয়া মাদ্রাসা অডিটোরিয়ামে খুলনা- ৫ আসনের ভোট কেন্দ্র পরিচালক, থানা পরিচালক ও সদস্য সচিব, ইউনিয়ন পরিচালক ও সদস্য সচিব এবং আসন কমিটির সদস্যবৃন্দের আসন ভিত্তিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। নির্বাচনী আসন কমিটির আহবায়ক মুন্সি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুসের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন জেলা জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারী মুন্সি মঈনুল ইসলাম, জেলা কর্ম পরিষদ ও শূরা সদস্য মাস্টার শেখ সিরাজুল ইসলাম, জেলা অফিস সেক্রেটারি আশরাফুল আলম, বায়তুলমাল সেক্রেটারি হাফেজ আমিনুল ইসলাম, আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্যা, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি ইউসুফ ফকির, ফুলতলা উপজেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল আলীম মোল্যা, খানজাহান আলী থানা আমীর ডাক্তার সৈয়দ হাসান মাহমুদ টিটো, ডুমুরিয়া উপজেলা আমীর মাওলানা মোক্তার হোসেন, ফুলতলা উপজেলা সেক্রেটারী ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা সাইফুল হাসান খান, খানজাহান আলী থানা সেক্রেটারি গাজী মোর্শেদ মামুন, ডুমুরিয়া উপজেলা সেক্রেটারী মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, জামাত নেতা শেখ মোঃ আলাউদ্দিন, ড. আজিজুল হক, মাস্টার মফিজুল ইসলাম, মোঃ শরিফুল ইসলাম, হাফেজ আল আমিন গাজী, মাস্টার মিজানুর রহমান, মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান, ফম আঃ রহমান, রফিকুল ইসলাম খানঁ, গোলাম হোসেন শেখ, নুর আলী আকুঞ্জী, শিবির নেতা ইরান মোল্যা, আশিকুল ইসলাম প্রমুখ।
তিনি আরও বলেন, সংসদ হলো পার্লামেন্ট-আইনসভা। যেখানে রাষ্ট্র কিভাবে চলবে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন হবে, দেশের উন্নতি অগ্রগতি কেমন হবে, দেশের অর্থ ব্যবস্থা কেমন হবে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে দেশ পরিচালিত হবে। অথচ আমাদের দেশের শাসকগণ ক্ষমতায় গিয়ে এসব ভুলে নিজেদের পকেট ভারি করতে সীমাহীন লুটপাট ও দুর্নীতি, অন্যায়, অত্যাচার ও জুলুম- নির্যাতন করে থাকে। ফলে দেশের মানুষ রাষ্ট্র থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবা পায় না। একটা দেশের উন্নতি অগ্রগতি নির্ভর করে তার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা, অর্থ ব্যবস্থার শৃংখলার উপর। কিন্তু গত ৫৪ বছরে কোন সরকার ই দেশের টেকসই উন্নয়ন করতে পারেনি। আপনারা জানেন গত জোট সরকারের আমলে জামায়াতের দুইজন মন্ত্রী ছিল কিন্তু দুইটা মন্ত্রণালয়ে আলহামদুলিল্লাহ একটিও দুর্নীতির রেকর্ড খুঁজে পাইনি। সুতরাং টেকসই উন্নয়ন ও সুখী, সমৃদ্ধ ও কল্যাণকর রাষ্ট্র গড়তে জামায়াতে ইসলামীর কোন বিকল্প নাই।
এর পূর্বে সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার সকালে ফুলতলার জামিরা ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে গণসংযোগ, পথসভা ও মহিলা সমাবেশে বক্তৃতা করেন।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের শতকরা ৯০ ভাগেরও বেশি মুসলিমের বসবাস হলেও গত ৫৪ বছরে কুরআনের শাসন কায়েম হয়নি। দেশে যদি কোরআনের শাসন কায়েম থাকতো তাহলে মানুষ প্রকৃত সুখ শান্তি ভোগ করতে পারত। শাসকের ভিতর যদি আল্লাহর ভয় থাকে তাহলে ওই শাসক কখনও দুর্নীতি, অত্যাচার, লুটপাট, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, দখলবাজি করতে পারে না। তাই কুরআনের শাসন কায়েম করতে আগামী নির্বাচনে ইসলামপন্থী আল্লাহ ওয়ালা লোকদেরকে ভোট দিয়ে সংসদে পাঠাতে হবে।