খুলনার লবণচরা থানাধীন দক্ষিন টুটপাড়া অঞ্চলের একজন সমিতি ব্যবসায়ী এবং ৩০ নং ওয়ার্ড কৃষকলীগের যুগ্ম—আহবায়ককে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবার। বৃহস্পতিবার বলো ১১টায় খুলনা প্রেস ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সমিতি ব্যবসায়ীর নাম আব্দুল্লাহ আল মামুন। সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল্লাহ আল মামুনের মা ও স্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। শাশুড়ির পক্ষে পুত্রবধু তানিয়া আক্তার সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার ছেলে আব্দুল আল মামুনকে মিথ্যা মামলা মোকদ্দমায় জড়ায়ে হয়রানির শিকার করছে একটি চক্র। আমার ছেলেকে গত ২৯ শে জানুয়ারী দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে বাসা থেকে ডেকে কথা বলার জন্য নিয়ে যায় কিছু লোক। এ সময় তারা বলেন, আব্দুল্লাহর নামে ওয়ারেন্ট আছে। বাসা থেকে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে আব্দুল্লাহকে মোটর সাইকেলে করে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। কিন্তু ডিবি পুলিশ কোন ওয়ারেন্ট কপি দেখাননি। এরপর আব্দুল্লাহর অবস্থান লবণচরা থানায় জানতে পারি। থানা পুলিশ জানান, আমার ছেলে আব্দুল্লাহর একটা মারামারি মামলার ওয়ারেন্ট আছে। কিন্তু ওয়ারেন্টের কোন কাগজ পুলিশ তখনো দেখাতে পারেননি। এজন্য থানায় আমি সকাল ৬টা পর্যন্ত অবস্থান করি। আমি ৬টার সময় বাসায় চলে যাই আবার সকাল আমি ১০টার দিকে থানায় যাই। এ সময় জানতে পারি, আমার ছেলে আব্দুল্লাহ ও আরো একজনকে অস্ত্র মামলা দিয়ে কোর্টে চালান করবে পুলিশ। কিন্তু আমার ছেলেকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়নি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, পুরো ঘটনাটি সাজানো নাটক। তিনি বলেন, ২৯শে জানুয়ারী রাতে র কিছু অসাধু পুলিশ সবকিছু ধোয়াশা রেখে আমার ছেলেকে অস্ত্র মামলা দিয়ে ফাসিয়েছেন। আর এই অস্ত্রের যোগানদাতা নুর আজিম নামে একটি। কারন হিসেবে তিনি বলেন, পুলিশের দেখানো অস্ত্রের ছবি ও নুর আজিমের ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করা অস্ত্রের ছবি একই। অসাধু কিছু পুলিশের সাথে নুর আজিমের যোগসাযোশ রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে সোহাগ ও পালসার সোহেলের কোন সখ্যতা নেই বলে তিনি দাবী করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, আমার ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন আলোড়ন সমবায় কল্যান সমিতির ব্যবসা করে এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অংগ সংগঠন খুলনা কৃষকলীগের ৩০ নং ওয়ার্ড কমিটির যুগ্ম—আহবায়ক হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছে। বেশ পূর্বে আমার ছেলের নামে নুর আজিম ও তার লোকজন দুইটি মারামারির মিথ্যা মামলা দিয়েছে। নুর আজিম এবং তার লোকজন প্রকাশ্য দিবালোকে টুটপাড়ায় পলাশ নামে এক যুবককে হত্যা করে। হত্যার শিকার হওয়া পলাশ আলোড়ন সমবায় কল্যান সমিতির একজন সদস্য ছিলেন। এ হত্যা মামলার সাক্ষী হওয়ায় তার ছেলেকে বিভিন্ন সময় সাক্ষী না দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে নুর আজিম। আমার ছেলেকে বিদেশ চলে যেতে বলেছে এবং সমিতি চালাতে হলে প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা নুর আজিমকে দিতে হবে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানায় নুর আজিম। এ বিষয়ে আমার এলাকাধীন টুটপাড়া পুলিশ ফাড়িতে জানালেও ফাড়ি পুলিশ কখনো লিখিত অভিযোগ নিতে রাজি হননি। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পুলিশ আমার ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার আগে আমার ছেলেকে কিছুদিন যাবৎ নুর আজিম বার বার ফেইসবুক মেসেঞ্জেরে কল করে হুমকি দিয়েছে আর বলছে তোরে পিস্তল দিয়ে চালান করে দিলে তোর দেয়া সাক্ষী—সবুতের কোন গুরুত্ব থাকবে না। আমার ছেলে এর প্রতিবাদ করায় এক পর্যায়ে নুর আজিম পুলিশ দিয়ে ধরানোর ভয় দেখায়। তারপর ২৯ তারিখ রাতে পুলিশ এসে আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে যায় আর পরে জানতে পারি, তাকে অস্ত্র দিয়ে চালান দিয়েছে পুলিশ। যা পরিকল্পিত বলে তিনি দাবী করেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঘটনার দিন রাতে আব্দুল্লাহ বাসায় ছিলো। হঠাৎ করে পুলিশ এসে ওয়ারেন্টের কথা বলে তাকে নিয়ে যায়। পরে অস্ত্র মামলা দিয়ে আদালতে চালান করেছে। যা পুরো মিথ্যা এবং সাজানো। আব্দুল্লাহ আল মামুনের পরিবার পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন, ২৯ তারিখ দিবাগত রাতের ঘটনাটি বিশ্লেষন করে সঠিক তদন্ত করে এ মিথ্যা অস্ত্র মামলার সাথে জড়িতদের খুজে বের করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করছি।