টাঙ্গাইলের গোপালপুরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বৈরাননদী। বর্ষায় থৈ থৈ পানি থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে নদীর তলদেশের বুকে চাষ হয় ধানসহ নানা ফসল। আর ফসল রক্ষায় বেছে নেয়া হয় অগ্রিম জাত। তেমনি সুন্দর গ্রামের বর্গাচাষি লথিফ প্রায় ১০ শতাংশ জমিতে রোপন করেছিলেন অগ্রিম কর্তনযোগ্য ব্রি-২৮ ধানের জাত।
দূর থেকে দেখতে সবুজাভ মনে হলেও ৭৫ শতাংশ জমির ধানই পেকে গেছে। এদিকে, বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়ায় শঙ্কা দেখা দেয় ধান ঘরে তোলার। তাই ছেলে সঙ্গে নিয়েই কাটছিলেন তিনি। ধান কাটা প্রসঙ্গে কৃষক আব্দুল লথিফ বলেন,’বন্যার পানিতে ধান নষ্ট হয়ে যায় তাই কাট ছিলাম। এদিক থেকে যাবার সময় তিনি দেখেন যে, আমরা ধান কাটছি। তিনি এসে বলেন যে, আমি দুই আটি ধান কাটবো আপনাকে উৎসাহ দিতে।’
এ সময় সংসদ ছোট মনির তাদের সাথে অল্পকিছু ধান কাটেন। আর সেটা ফেসবুক লাইভে প্রচার করেন তার কর্মীরা। পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে আলোচনার বিষয় ছিল সাংসদ পাকা ধান না কেটে কাঁচা ধান কেটেছেন। তবে স্থানীয়দের দাবী জাত ও বৈশিষ্ট্য না চেনায় বিতর্ক হয়েছে।
৮০ শতাংশ পাকলেও জাতের বৈশিষ্টগত কারনে ডাটা ও পাতা সবুজ থাকে। অন্য ধানের শীষ ও ডগার পাতা সমান সমান হলেও এটি সবুজাভ লম্বা হয়ে থাকে। হাওর অঞ্চলে এই জাতের ধান কাটা শেষ হলেও টাঙ্গাইলে কোথাও তা কাটা শুরু হয়েছে। এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, ‘বিরি-২৮ একটি অগ্রিম জাতের ধান। আগেই যাতে কৃষকরা ঘরে তুলতে পারে, সে জন্য এই জাতের ধান চাষ করা হয়। এই এলাকায় ৮০ থেকে ৯০ ভাগ ধান পরিপক্ক অবস্থায় আছে। ৮০ শতাংশ ধান পাকলেই আমরা কৃষকদেরকে দ্রুত ধান কেটে নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।’
নেতা-কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করার জন্যই পাকা ধান কেটেছেন বলে দাবি সাংসদের। টাঙ্গাইল-২ আসন গোপালপুর-ভূঞাপুরের সাংসদ ছোট মনির বলেন, ‘আমার সাঙ্গে যে নেতা কর্মী ছিলেন তাদেরকে উৎসাহ দিতে ধান কেটেছি। একজন এমপি যদি ধান কাটে, সে যতটুকুই হোক, তবে তারাও উৎসাহিত হয়।’
তবে অধিকাংশ ঘটনাই লোক দেখানো ও প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় তা কৃষকের কোন উপকারেই আসছে না বলে, যার যতটুকু দায়িত্ব সেটাই যথাযথ পালনের অনুরোধ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।