বিজ্ঞপ্তিঃ খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতিগ্রস্ত রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম শুরুর দাবি করেছেন সাধারন শিক্ষার্থীরা। এক বিবৃতিতে তারা জানান, চলমান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের হুমকি ও নিপীড়নের স্বীকার হয়েছে এবং বিভিন্ন শিক্ষকরাও রেজিস্ট্রার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার (শাহজাহান)-এর সহযোগিতা করেছেন। এমনকি তিনি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের ১৬ই জুলাই, ২০২৪ তারিখে ৩৭.০১.০০০০.০৩১.৯৯.০০৪.২১.৩১৭ স্মারক পত্র মোতাবেক কোন সিন্ডিকেট মিটিং করা ছাড়াই ভিসি ও রেজিস্টার ছাত্রদের হল ত্যাগের আকস্মিক নির্দেশনা জারি করে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন ছাত্রদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় না রেখে কোন সিন্ডিকেট মিটিং করা ছাড়াই ভিসি ও রেজিস্টার তাদের জোরপূর্বক হল ত্যাগে বাধ্য করেন। যেটা কোন ভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় আইনসম্মত নয়।
শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের শুরু থেকে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার (শাহজাহান) বিভিন্নভাবে প্রতিকূল অবস্থান তৈরি করেছেন । তিনি বিভিন্ন সময় নিয়োগ বাণিজ্য, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, নারী কেলেঙ্কারি ও বিশ্ববিদ্যালয় কে একচ্ছত্র দলীয়করণের মাধ্যমে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে খন্দকার মাজহারুল আনোয়ারকে। বিষয়টি নিজে স্বীকারও করেছেন।
খুকৃবির নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী, রেজিস্ট্রার হতে হলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এডিশনাল রেজিস্ট্রার/সমমান পদে চার বছর এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার/সমমান পদে চার বছরের অভিজ্ঞতাসহ প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়/সরকারি/স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কাজে ১৫ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কিন্তু খন্দকার মাজহারুল আনোয়ারের চাকরির বয়স মোট ১৩ বছর হলেও তিনি যোগসাজশের মাধ্যমে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
তিনি তার ক্ষমতা বলে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে এমন ভাবে দলীয়করণ করেছেন যে শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলাকালীন রুটিন বাস সার্ভিস বন্ধ করে, ছাত্রলীগের বিভিন্ন প্রোগ্রাম, মিটিং, মিছিলে বাস ব্যবহার করতে দিয়েছেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভেতরে নানা সময়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু তার এই অনিয়মের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের কথা বলতে দেওয়া হয় নাই। এ নিয়ে ছাত্রদের মাঝে এখনো ক্ষোভ বিদ্যমান রয়েছে। এছাড়াও তার মাধ্যমে ছাত্ররা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের বুলিং এর শিকার হয়েছে। এমনকি অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী দাঁড়ি রাখার জন্য তাকে সরকার বিরোধী ট্যাগ দেয়া হয়েছে।
চলমান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা যখন ফেসবুকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে লাইক, কমেন্ট, পোস্ট, শেয়ার করা শুরু করেছে, তখন তিনি তার অনুগত লোকদের দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষার্থীকে, লাইক, কমেন্ট, পোস্ট ইত্যাদি শেয়ার করা হতে বিরত থাকতে বাধ্য করেছেন।
এজন্য খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ সংগ্রামী শিক্ষার্থীরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সফল হওয়ার পর, এই দুর্নীতিগ্রস্ত রেজিস্টার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার (শাহজাহান) কে ২৪ ঘন্টা আল্টিমেটাম দিয়ে গতকালই চাকরি হতে অব্যহতি দাবি করছে। কিন্তু ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও তার পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। যদি তিনি স্বেচ্ছায় চাকরি হতে অব্যহতি না করেন তবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করবে।