সাতক্ষীরায় পিডিবিএফ কর্মীদের বিক্ষোভ

প্রকাশঃ ২০১৮-০১-২৭ - ১৪:৩৮

রাহাত রাজা, সাতক্ষীরা: পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি ( পিডিবিএফ ) এর ১০০ কর্মীকে চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে। বহুজনের বেতন ভাতা বন্ধ রাখা হয়েছে । এ সবের বিরুদ্ধে যারা আইন সহায়তার জন্য আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন তাদেরকেও চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে। এতো সবের পর কর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতে সমস্যা সমাধানের কথা বলে পিডিবিএফএর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মদন মোহন সাহা ও প্রকল্প পরিচালক সহিদ হোসেন সেলিম ৭৫ জন কর্মীকে চাকুরীচ্যুতির জন্য সতর্কীকরন নোটীশ করে এক অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছেন।
শনিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে একথা বলেন পিডিবিএফএর সৌর শক্তি প্রকল্পে কর্মরত সদস্যরা। এতে ভারপ্রাপ্ত সোলার কর্মকর্তা মো. সুমন হোসেন তার লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন । এ সময় বিভিন্ন পর্যায়ের কর্র্মকর্তা হরপ্রসাদ বিশ্বাস, মেহেদি হাসান মারুফ, জাহাঙ্গির হোসেন ,আবদুল আজিজ, আমিনুল ইসলাম, শাহ আলম, কালাম সানা , আশরাফ হোসেন , আলমগীর হোসেন, পিয়ার মন্ডল , মো. আশরাফুজ্জামান , আবদুল গফফার , মশিউর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন পিডিবিএফএর সৌর শক্তি প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মদন মোহন সাহার নিয়োগ অবৈধ বলে রিপোর্ট দিয়েছিল সংসদীয় কমিটি। তা সত্ত্বেও তিনি এই প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করে যাচ্ছেন বহাল তবিয়তে। এরই মধ্যে তিনি ও প্রকল্প পচিালক সহিদ হোসেন সেলিম মামলার খরচের নামে ৪০ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন। টিআর ও কাবিখা প্রকল্প থেকে শতকরা ৫ টাকা কমিশন নিয়ে ৬০ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন। কর্মীরা বলেন এই দুই দুর্নীতিবাজের কারণে পিডিবিএফএর অসংখ্য কর্মী এখন নানা ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন। এরই মধ্যে তারা বহুজনের চাকুরি খেয়ে ফেলেছেন। সামান্য বেতনভূক কর্মীরা এখন এক অমানবিক অবস্থায় রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন মদন মোহন সাহা পিডিবিএফ সরকারি প্রতিষ্ঠানকে একটি এনজিও বানানোর পাঁয়তারা করছেন। তার অদক্ষতার কারণে এই প্রতিষ্ঠানে ২৫ কোটি টাকা খেলাপি বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা আরও বলেন মদন মোহন সাহা তিনটি গাড়ি ব্যবহার করেন। তিনি অত্যন্ত বিলাসবহুল জীবন যাপন করেন। ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমন করেন। সে সময় অনেক অনৈতিকতার খবরও পাওয়া যায়।
সংবাদ সম্মেলনে তথ্য উপাত্ত তুলে ধরে বলা হয় ৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকার টিআর কাবিখার কাজ করে ৬০ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা আরও বলেন পিডিবিএফ কর্মীদের বহুমুখী সমস্যা নিয়ে তারা ২৬ ডিসেম্বর এমডি মদন মোহন সাহার সাথে খুলনা সার্কিট হাউসে সাক্ষাত করেন। সেখানে আলোচনা অনুযায়ী এমডি বলেন ঢাকায় বসে সব বিষয়ে তিনি সমাধান করবেন। এসব তথ্য তুলে ধরে কর্মীরা আরও বলেন ঢাকায় যেয়ে মদন মোহন ৭৫ জন কর্মীকে চাকুরীচ্যুত করতে সতর্কীকরন নোটীশ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা আরও বলেন ‘ আমরা চাকুরি স্থায়ীকরনের জন্য হাইকোর্টে রিট পিটশন করেছিলাম। এর সাথে সম্পৃক্ত কয়েকজনকে চাকুরিচ্যূুত করেন তারা। এর বিপরীতে আমরা হাইকোর্টে রিট করলে হাইকোর্ট চাকুরিচ্যুতির আদেশ স্থগিত করে দেন। অথচ সেই স্থগিতাদেশও বাস্তবায়ন হয়নি উল্লেখ করে তারা বলেন তারা তাদের চাকুরিতে যোগদান করতে পারেন নি। তারা আরও বলেন মদন মোহন সাহা ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক , অর্থ পরিচালক, মানব সম্পদ উন্নয়ন পরিচালকসহ চারটি পদ দখল করে রয়েছেন। এভাবে তিনি তার দুর্নীতির জাল বিস্তার করে চলেছেন।
তারা বলেন আমরা আমাদের চাকুরি স্থায়ীকরন চাই। আমাদের সমুদয় বকেয়া বেতন চাই। যাদেরকে অন্যায়ভাবে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের চাকুরি ফিরিয়ে দিতে হবে। এছাড়া দুই কর্মকর্তা মদন মোহন সাহা ও সহিদ হোসেন সেলিমের অবৈধ নিয়োগ এবং তাদের টাকা আত্মসাত ও অন্যান্য অনিয়ম দুর্নীতির বিচার চাই।
সংবাদ সম্মেলনের পর বিক্ষুব্ধ কর্মীরা সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এক মানব বন্ধন করে তাদেতর দাবি তুলে ধরেন। পরে পিডিবিএফএর এমডি মদন মোহন সাহাকে সাতক্ষীরা জেলা অফিসে ঘেরাও করে অবস্থান ধর্মঘট করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বিপুল সংখ্যক কর্মী।