পাটকেলঘাটা : তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় ৪ লক্ষ মানুষের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত মাত্র ৪ জন ডাক্তার। ফলে সাধারণ জনগণ রয়েছে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। ৩৪ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন মাত্র ৪ জন। এ হাসপাতালটি ১৯৬৫ সালে ৩১ শয্যার মধ্য দিয়ে যাত্রা শরু করলেও দীর্ঘ কালেও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-নজরদারির অভাবে পিছিয়ে রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাতক্ষীরা জেলার তালা ও পাটকেলঘাটা থানা নিয়ে এ উপজেলাটির একমাত্র সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র। উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের বিশাল আয়তনের ৩ লক্ষ ৩৫ হাজার ১৮২ জন নাগরিকের সু-চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, লোক-বল সংকটই মুখ্য বিষয়। হাসপাতালটিতে ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ শ্রেণির ২৩১ টি পদ থাকলেও ৭৩ পদই রয়েছে খালি। বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য সেবায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেও এর লেশ মাত্র লাগেনি হাসপাতালটিতে। সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী আ.ফ.ম রুহুল হক ২০০৯ সালে মন্ত্রীত্ব দায়িত্ব থাকা অবস্থায় অবহেলিত হাসপাতালটির ৩১ শয্যা হতে ৫০ শয্যায় উন্নতি করলেও জনবল নিয়োগ না হওয়ায় চিকিৎসা ব্যহত রয়েছে। ফলে সাধারণ জনগণের চিকিৎসা সেবার মান উন্নয়ন কোন ভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। জানা গেছে, হাসপাতালটির মোট লোক-বল ২৩১ এর মধ্যে ১ম শ্রেণির ৩৪ জন কর্মকর্তার মধ্যে ২৬ জনেরই পদ শূন্য এর মধ্যে ২ জন রয়েছে ডেপুটেশনে ও আরও ২ জন রয়েছে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে। ২য় শ্রেণির ২৫ কর্মতার মধ্যে ৭টি পদ শূন্য, তৃতীয় শ্রেণির ১৪৫ কর্মচারী মধ্যে ২৮ পদই শূন্য। ৪র্থ শ্রেণির ২৭ কর্মচারীর মধ্যে ১২ পদই শূন্য। ফলে জনবল সংকট অষ্টে-পিষ্টে জড়িয়ে ধরেছে তালা উপজেলা বাসীর স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রমে। এ ব্যাপারে হাসপাতালের সেবিকা শামছুর নাহার, ডালিয়াসহ অনেকেই সাতনদীর প্রতিনিধিকে জানিয়েছে জন বল সংকটে হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা বর্তমান শীত মৌসুমে ব্যহত না হলেও গ্রীষ্মে সেবা দিতে হিম-শীম খেতে হয়। তারা আরও জানায়, বিশাল আয়তনের এ উপজেলার জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্য সেবার মান নিশ্চিত করতে হাসপাতালের কোয়াটারে থেকেই নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার শেখ কুদরত-ই-খোদা ট্রেনিং জনিত কারণে বাইরে থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে তালা উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার জানিয়েছেন, সরকার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। এ বিষয়টিকে ইতিবাচক ভাবে দেখে যে কয়জন ডাক্তার দায়িত্বে আছে তাদের দায়িত্ব পালনে সাধারণ জনগণের স্বতস্ফূর্ত ভাবে সহযোগিতা থাকা প্রয়োজন। জননেত্রী শেখ হাসিনার স্পষ্ট নির্দেশ স্বাস্থ্য সেবা জনগণের দোড় গোড়ায় পৌছাতে হবে। তবে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাক্তার তওহিদুর রহমান জানিয়েছেন, হাসপাতালটিতে জনবল সংকট রয়েছে। এ সংকটকে পুঁজি করে কিছু অসাধুচক্র রং চং করলেও স্বাস্থ্য সেবার শত ভাগ মান নিশ্চিত হতে হলে আগামী বিসিএস ক্যাডার ডাক্তার নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত এ সমস্যা দূরভীত হবে না।