ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে মাদক সম্রাট জাহিদের আস্তানায় ঝালকাঠি ডিবি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হানা দিয়েছে। তবে, কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি এখনো তারা।
গত কয়েকদিন পত্রিকায় ছবিসহ সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর । এরপর শুরু হয় অভিযান। তবে, অভিযানের আগাম খবর পেয়েই ওই আস্তানা ছেড়ে গা ডাকা দিয়েছে মাদক ব্যাবসায়ী ও সেবনকারীরা বলে একটি সুত্র জানিয়েছে।
ঝালকাঠি জেলার নিরাপদ মাদক জোন খ্যাত নলছিটি উপজেলার মগড় ইউনিয়নে বিগত ২/৩ বছর স্বাভাবিক থাকলেও সম্প্রতি কাচারীবাড়ি এলাকার একটি বাগানে গড়ে উঠেছে মাদকের আস্তানা। শুধু এলাকার মাদকসেবী যুবকরাই নয়, দূর-দূরান্ত থেকেও মাদকাসক্ত যুবকরা আসে মাদক সেবনের সাথে সাথে পাইকারী ও খুচরা ক্রয় করতে। যুব সমাজ ধ্বংসের পথে থাকলেও সংশ্লিষ্টদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারণে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না। মাদকাসক্তরা নতুন কৌশলে মাদকের আস্তানা গড়ায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর থাকলেও ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
অনুসন্ধানকালে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, কাচারীবাড়ি এলাকার রাস্তার উত্তর পার্শে বাগানবাড়ি’র মধ্যে সন্ধ্যা হলেই বসে মাদকের আসর। এলাকার জন সাধারণের দৃষ্টি আড়াল করতে পলিথিন-কলাপাতার বেড়া দিয়ে ভিতরে কুপি জ্বালিয়ে বসে। পূর্ব থেকেই পরিকল্পনা থাকে কোন দিন কে কে আসরে বসবে। রাত বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে প্রকৃত মাদকাসক্তদের সংখ্যা।
মাদক সেবনের উপকরণ হিসেবে থাকে গাঁজা, ইয়াবা, ফেন্সিডিল, হিরোইন, সিসা ও দেশী-বিদেশী মদ। এ আখড়ার (আস্তানা) মূল আয়োজক বরিশাল সদর থানার পলাশপুর এলাকার জামাল হোসেনের পুত্র জাহিদ হোসেন। আর প্রশ্রয়ে রয়েছে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও একাধিক মামলার আসামী আঃ বারেক মাঝি এবং উজ্জল। এ সিন্ডিকেট এখান থেকে মাদকের চালান ঝালকাঠি, বরিশালসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার নিয়োগকৃত কতিপয় যুবকদের মাধ্যমে বিক্রি করছে। এমনকি বিক্রি ও পাচারের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নারী ও শিশুদের। এলাকাবাসীর দাবি, এদের রুখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এখনই ভূমিকা নিতে হবে। নয়তো এভাবে চলতে থাকলে সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে।
কাচাড়ীবাড়ী এলাকার আবুল কালাম আজাদ, লেলিনসহ কয়েকজন যুবক জানান, জাহিদ নামের ওই সন্ত্রাসী প্রথমে ওই এলাকায় কয়েকজন নিরীহ মানুষকে জিম্মি করে। তারপর শুরু করে নানা অপকর্ম। বর্তমানে বেপরোয়া হয়ে মাদকের আস্তানা তৈরী করে রাম রাজত্ব কায়েম করতে চাইছে। এলাকার মানুষ এখন অতিষ্ঠ হয়ে ফুঁসে উঠেছে। এলাকাবাসী দ্রুত জাহিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবী তুলেছে।
উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে মাদকের আসর ও সেবনের ছবি ছড়িয়ে পড়লে সংবাদটির অনুসন্ধান কাজ শুরু হয়। এদিকে ঝালকাঠি গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর (ডিবি ওসি) মোঃ শফিউল্লাহ জানান, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম এম মাহমুদ হাসান বলেন, মাদক নির্মূলে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। মাদকের সাথে জড়িত সে যেই হউক না কেনো কোন ছাড় নাই । আমরা আমিরাবাদের বিষয়টি পত্রিকায় দেখেছি। এ ব্যাপারে আমাদের যথেষ্ট নজরদারী ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।