ফকিরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার বেতাগার ধনপোতা এলাকায় রং মিস্ত্রি বাবুল শিকারি হত্যার ক্লু অবশেষে উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। প্রতিনিয়ত নেশাখোর স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে স্বামীকে হত্যার পথ বেছে নেয় স্ত্রী। স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দীতে এমন কথা স্বীকার করেছে স্ত্রী রিক্তা বেগম। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই বিধান চন্দ্র রায় জানান, তিনি অতি সুকৌশলে হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন ৪ ফেব্রুয়ারী দুপুরে বাগেরহাট সিনিঃ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আসিফ আকরামের নিকট আসামী নিহতের স্ত্রী রিক্তা বেগম নিজ কার্যাবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেন। জবানবন্দীর সংক্ষিপ্ত বিবরনে জানা গেছে, রিক্তা একটি জুট মিলে কর্মরত ছিল। আর নেশাখোর স্বামী বাবুল রং মিস্ত্রির কাজ করে আসছিল। কিন্তু অধিকাংশ দিন সে কাজে না গিয়ে বিভিন্ন নেশাদ্রব্য সেবন করে বেড়াতো। যার ফলে প্রায় স্ত্রীর কষ্টের অর্জিত টাকা জোর পূর্বক নিয়ে সে নেশা করে আসছিল। যেদিন তাকে নেশার টাকা দিতে চাইনি সেদিন স্ত্রীকে ধরে মারপিট করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় অর্থাৎ ২ ফেব্রুয়ারী রাতে বাবুল শিকারী তার স্ত্রীর কাছে নেশা করার জন্য টাকা চাইলে স্ত্রী তাকে টাকা না দেয়ায় মারপিট শুরু করে। এতে স্ত্রী রিক্তা বেগম স্বামীর নির্যাতনে ক্ষীপ্ত হয়ে উঠে। একপর্যায়ে স্বামীর গলাই পরিহিত মাফলার ধরে জোরে টান দিলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তখন রিক্তা বেগম তাকে ঝাপটে ধরে গলার মাফলার খুব জোরে ধরে টানতে থাকে। একসময় সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। শ^াসরুদ্ধ হয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর বিষয়টি অন্য খাতে প্রভাবিত করার জন্য সে তার স্বামীর মৃতদেহ টেনে-হেচড়ে ঘরের পিছনের ডোবায় ফেলে দেয়। উল্লেখ্য, ৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশ বেতাগার ধনপোতা এলাকার একটি ডোবা থেকে বাবুল শিকারি নামের এক রং মিস্ত্রির লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই হাকিরপুর গ্রামের আশরাফ শিকারী নিজ বাদী হয়ে ফকিরহাট মডেল থানায় ৩ জনের নাম উল্লেখ্য করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং-৪, তারিখ-০৩/০২/২০১৮ইং, ধারা-৩০২,২০১/৩৪ পেনাল কোড। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে মামলার আসামী নিহতের স্ত্রী রিক্তা বেগমকে পুলিশ আটক করে।