খুলনা : খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা সদর ও থুকড়া বাজারে দু’টি মোবাইল ফোনের দোকানে চুরির ঘটনার দেড় মাস পর চোর সিন্ডিকেটের মূল হোতা সান্টু শেখ (২৮) কে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খুলনা নগরী থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে গত রোববার চোরের সহযোগি রিপন হাওলাদারকে মোবাইল ফোনসহ গ্রেফতার করে তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক সান্টুকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সজীব খানের নেতৃত্বে এ এস আই এখলাছুর রহমান ও রূপসা থানা পুলিশের সহায়তায় গত রোববার চোরের সহযোগি খুলনার রূপসা উপজেলার পশ্চিমনন্দনপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর হাওলাদারের পুত্র রিপন হাওলাদারের (২৭) কে ১৩টি মোবাইলসহ আটক করা হয়। পরে তার স্বীকার উক্তি মোতাবেক সিসি টিভি ফুটেজ দেখে অন্য সহযোগী মোঃ সেন্টুকে সনাক্ত করা হয়। পরে মোবাইল ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার গজালিয়া গ্রামের মৃত আকব্বর শেখের পুত্র সেন্টু শেখ(২৮) কে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খুলনা নগরী থেকে আটক করা হয়।
উলেখ্য গত ১৯শে ডিসেম্বর দিবাগত রাতে ডুমুরিয়া সদর বাজারস্থ সামিয়া মোবাইল ফোনের দোকানের টিনের চাল কেটে চোরেরা বিভিন্ন ব্রান্ডের ৩ শতাধিক মোবাইল ফোন সেট, ৩টি ট্যাব, দু’টি সিসি ক্যামেরা, নগদ টাকা সহ প্রায় ৯ লাখ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। এ ব্যপারে দোকান মালিক শাহারিয়ার রহমান খান বাদী হয়ে অজ্ঞাত চোরদের বিরুদ্ধে ডুমুরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। অপর দিকে গত ১৩ জানুয়ারী দিবাগত রাতে উপজেলার থুকড়া বাজারের ইলিয়াজ হোসাইনের মোবাইল ফোনের দোকান থেকে অজ্ঞাত চোরেরা ৬২টি মোবাইল ফোন সেট, মেমরী কার্ড ও রিচার্জ কার্ড চুরি করে নিয়ে যায় অজ্ঞাত নামা চোরেরা। ওই ঘটনায় ১৬ই জানুয়ারী ইলিয়াজ হোসাইন বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা চোরদের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। দুই দু’টি দোকানে পরপর চুরির ঘটনায় থানা পুলিশ পড়ে যায় বিব্রতকর অবস্থায়। তারা চুরির রহস্য ও মালামাল উদ্ধার করতে বেশ তৎপর হয়ে ওঠেন। দুটি চুরির ঘটনা একই ধরনের হওয়ায় অতিরিক্ত পুরিশ সুপার মোঃ সজীব খান বিষয়টি নিয়ে নিজেই চোর ধরতে এবং মোবাইল ফোন উদ্ধারের অভিযানে নামেন। এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে জানতে পারেন কয়েকটি চোরাই মোবাইল ফোন সেট খুলনা শহর ও রূপসা এলাকায় ব্যবহৃত হচ্ছে। ব্যবহৃত ফোনে অবস্থান সনাক্ত করে অতিরিক্ত পুরিশ সুপার মোঃ সজীব খান তার অফিসে কর্মরত এ এস আই মোঃ একলাছুর রহমানসহ মালার তদন্তকারী অফিসার এস আই কেরামত ্ও রূপসা থানা পুলিশ রূপসা উপজেলার নন্দনপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে রিপন হাওলাদারকে ১৩টি মোবাইল ফোন সহ গ্রেফতার করে। রিপন সিসি টিভি ফুটেজ দেখে মোবাইল ফোন চুরির ঘটনার মূল হোতা সান্টুর নাম প্রকাশ করে স্বীকারোক্তি দেয়। পুলিশ রিপনকে আদালতে সোপর্দ করার পর শুরু হয় চক্রের মূল হোতা সেন্টুকে গ্রেফতারের অভিযান। গত মঙ্গলবার তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সেন্টুর অবস্থান নির্নয় করে পুলিশ। ঐদিন দুপুরে খুলনার কদমতলা এলাকা থেকে দুইটি চোরাই মোবাইল সহ সেন্টুকে আকট করে। তার দেওয়া তথ্য মতে খুলনার রূপসা থেকে আরো দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা থানা পুলিশের এস আই কেরামত আলী জানান, গ্রেফতারকৃত চোরদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মোবাইল ফোন সেট উদ্ধার ও এর সাথে জড়িত অন্যানদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামী রিপন হওলাদারকে ২ দিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে। এছাড়া সান্টুকে আদালতে প্রেরণ করে ৫ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।
থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাবিল হোসেন জানান, প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে চুরি যাওয়া মোবাইল ফোনের আইএমই নাম্বার দিয়ে চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার ও চোরদের ধরা হয়েছে। ডুমুরিয়া বাজারে চুরির সময় দোকানের সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত ফুটেজ দেখে চোর সান্টুকে সনাক্ত কার হয়েছে। আশা করি অচিরেই চুরির ঘটনার রহস্য উন্মোচনসহ চোরদের গ্রেফতার করা এবং মোবাইল ফোন সেট উদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।