ইমতিয়াজ উদ্দিন, কয়রা(খুলনা): কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশাী ইউনিয়নের বতুলবাজার গ্রামের দারিদ্র পরিবারের সন্তাান সমিরা খাতুন সম্বনিত চাষাবাদ করে তার পরিবারের ভাগ্যর পরিবর্তন ঘটিয়েছে। আর ধান,মাছ,সবজি চাষ প্রকল্পের মাধ্যমে সংসারের অভাব ঘুচিয়ে স্বামী ছেলে সন্তান নিয়ে ভাল আছে বলে অবিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
সরেজমিনে ঘুরে সামিরার সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৯ সালে “আইলায়” বতুলবাজ গ্রাম সহ কয়রা উপজেলার ৫ টি ইউনয়ন সম্পুর্ন বিধস্থ হয়। দিঘ দিন লবন পানি আটকে থাকার কারনে কয়রা উপজেলার সামাজিক পরিবেশ মরুভুমিতে পরিনিত হয়। বাদ যায়নি সামিরার খাতুনের ঘরবাড়ি,পানির তোরে ভাষিয়ে নিয়ে যায় তার ঘরবাড়িসহ সকল সহায় সম্পদ। পাউবোর বেড়ি বাঁধের উপর ২/৩ মাস অতিকষ্টো করে কোন রকম বসবাস করে। দুই বছর পর লবন পানির ছোবল থেকে কোন রকম রক্ষা পেয়ে পরবর্তিতে স্বামীর ভিটায় কোন রকম মাতা গোজার ব্যবস্থা করেন সামিরা। তার স্বামী খোরশেদ গাজী দারিদ্র জীবন থেকে খুরে দারাবার জন্য নিজের উপজেলা কয়রা সহ ঢাকা,খুলনা, যশোর সহ বিভিন্ন জেলায় কাজ করে সংসার চালায়ি আসছিনল। সেই উপার্জন থেকে পরিবারে খরচের পাশাপাশি কিছু কিছু করে টাকা সঞ্চয় করে রাখে। সামিরা চেষ্টায় গচ্ছিত অর্থ আর স্থানীয় সমিতি থেকে লোন নিয়ে এবং কিছু টাকা ধার করে বাড়ির পার্শ্বে ৩৩ শতক জমি ক্রয় করে সামিরার পরিবার। সেই জমিতে থাকার ব্যবস্থা সহ কৃষি কাজ শুরু করে। তার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়ায় জেজেএস রেজিলিয়েন্স প্রকল্প।
প্রকল্পের কয়রা উপজেলা ম্যানেজার আঃ রব রায়হান বলেন,বতুলবাজার গ্রামের দুর্যোগ ঝুকি এবং লবনাক্ততার কথা বিবেচনা করে জেজেএস রেজিরিয়েন্স প্রকল্প উক্ত গ্রামে কাজ শুরুকরে ২০১৫ সালের প্রথম দিকে। প্রকল্পোর মাধ্যমে সামিরার পরিবারের অসহাত্য এবং পানির সমস্যার কথা বিবেচনায় করে জেজেএস রেজিরিয়েন্স প্রকল্পের সদস্য করা হয় তাকে। প্রতি মাসের মিটিং এ নিয়মিত হাজির হয়ে দুর্যোগে খাপখাওয়ান ,ডাইবে সবজিচাষ, সমন্বনীত চাষা বাদ (ধান ,মাছ,সবজি) বাড়ির আঙ্গিনায় সবজি চাষ ,পানি বাহিত বিভিন্ন রোগ বিষয় ধারনা পান এবং সমন্বনীত(একই জমিতে ধান,মাছ ও সবজি) চাষা বাদ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন সামিরা।রেজিলিয়েন্স প্রকল্পের মাধ্যমে কয়রা উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে সমন্বনীত চাষা বাদ এর উপর প্রশিক্ষ পান তিনি। রেজিলিয়েন্স প্রকল্পের কর্মকর্তারা সমিরা খাতুনের জমি পরিদর্শন করে ২০১৫ সালের শেষের দিকে কৃষি কাজে সহযোগিতা হিসাবে প্রায় ১০ হাজার টাকা সহয়তা প্রদান করেন। উক্ত টাকা দিয়ে লেবার নিয়ে নিজেরা সাথে থেকে ক্যানেল কেটে মাটি দিয়ে চার পার্শ্বের ডাইক তিন হাত চওড়া সহ উচু করে। উক্ত ক্যানেল ও পুকুরে রুই,কাতলা, তেলাপিয়া,কালবাউস, গল্দা চিংড়ি এবং কার্প জাতিয় মাছ চাষ করেন। ডাইকে পুইশাক,কুমড়া,শশা,লাউ, বেগুন,করল্লা, মিনা ,বরবটি ,কচুরমুখি,ওল, আলু চাষ করেন এবং জমিতে ধান চাষ করে ৪৮ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকার উৎপাদিত ফসল বিক্রয় করে। সেই অর্থ দিয়ে ভালভাবে সংসার চালাচ্ছে। বর্তমানে তাদের জমিতে বেগুন,কুমড়া,ঝাল,ঢেড়শ,পুইশাক এর চাষাবাদ চলমান রয়েছে। সামিরার দেখাদেখি ঐ এলাকার অনেক কৃষকরা সম্বনিত চাষাবাদ শুরু। উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আয়ুব আলী বলেন,সম্বনিত চাষাবাদের জন্য স্থানীয় কৃষি অফিসের মাধ্যমে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।
শুকনা েেমৗসুমে পানির সমস্যার কারনে সামিরা খাতুন কে জেজেএস রেজিলিয়েন্স প্রকল্পের মাধ্যমে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ,সংরক্ষন ,সঠিক রক্ষনা বেক্ষন ,ইত্যাদি বিষয় কয়রা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রশিক্ষন গ্রহন করেন। পরবর্তিতে রেজিলিয়েন্স পকল্পের আওতায় ২০১৭ সালের শেষের দিকে সিম কার্ডের মাধ্যমে প্রায় ১৪ হাজার টাকা সহযোগিতা পান। উক্ত টাকা সামরা খাতুন ১৫ শ লিটারের একটি পদ্ম ট্যাংকি এবং সেটিং এর মালামাল ক্রয় সহ সাইন বোর্ড ও কিছু সবজি ক্রয় করেন। নিজেদের টাকা দিয়ে ট্যাংকি বসানের ভিত পাকা করেন । ঘরের টিনের চালায় ট্যাংকি স্থাপন করেন। সামিরা বলেন,এখন তাদের পরিবারের সুপেয় পানির সমস্যা সমাধান হবে। সবজি চাষ করে পুষ্টির চাহিদা পুরন করতে পারবে।জেজেএস রেজিরিয়েন্স প্রকল্পের সহযোগিতার জন্য তাদের পরিবারের যে উন্নতি হয়েছে তার জন্য জেজেএস,কনসার্ন ওয়ার্ল্ডো ওয়াইডের প্রতি বেশ খুশি। উপজেলা জন স্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রশান্ত কুমার পাল বলেন,এ ধরনের পানির ট্যাংকির ব্যবস্থা করা গেলে স্থানীয় কৃষকদের সবজি চাষ সহ খাবার পানির চাহিদা পুরুন হবে।