আর্ন্তজাতিক ডেস্কঃ ছেলেমেয়েকে মনের মতো মানুষ করে নাতি নাতনির মুখ দেখবেন। অধিকাংশ বাবা-মায়েরই এই স্বপ্ন থাকে। কিন্তু, কম বয়সে ছেলের মৃত্যু হলে তাঁদের মনের অবস্থা কী হয় তা বলে বোঝানোর প্রয়োজন হয় না। ছেলেকে হারানোর পাশাপাশি নাতি নাতনির মুখও দেখা হল না। এতদিন এটাই ছিল বাস্তব। কিন্তু, এখন সময় বদলেছে। বিজ্ঞানের সৌজন্যে ছেলে মারা যাওয়ার পরও যে নাতি, নাতনির মুখ দেখা সম্ভব তার প্রমাণ দিলেন পুনের এক মহিলা। মৃত ছেলের স্পার্ম নিয়ে মা হওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন তিনি। কিন্তু, তিনি ভ্রূণ ধারণে সক্ষম না হওয়ায় মা হলেন তাঁরই এক তুতো বোন।
২০১৩ সালে ব্রেন টিউমার হয় পুনের যুবক প্রথমেশ পাটিলের (২৭)। উচ্চশিক্ষার জন্য তখন তিনি জার্মানিতে। কেমোথেরাপি চললে নষ্ট হতে পারে সন্তানের জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা। তাই থেরাপি শুরুর আগে সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো সংরক্ষণ করে রাখা হয় তাঁর স্পার্ম। ওই বছরই মে মাসে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় প্রথমেশকে। মুম্বইয়ে অস্ত্রোপচার হয়। তারপর সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। কিন্তু, দু’বছর পর একই সমস্যা দেখা দেয়। শুরু হয় ব্লাডিয়েড ভিশন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাকশক্তি। ২০১৬ সালে মৃত্যু হয় তাঁর।
এরপর জার্মানির স্পার্ম ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করেন প্রথমেশের মা রাজশ্রী পাতিল (৪৯)। নাতি, নাতনির মুখ দেখতে চেয়ে সন্তানের স্পার্ম ধারণ করে সারোগেট মাদার হতে চান তিনি। জার্মানি থেকে আনানো হয় ছেলের স্পার্ম। পুনের এক হাসপাতালের ইনফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ সুপ্রিয়া পুরানিকের সাহায্য নেন। কিন্তু, রাজশ্রীদেবীর জরায়ু ওই ভ্রূণ ধারণে সক্ষম নয় বলে জানান চিকিৎসক। তখন তাঁর ৩৮ বছরের এক তুতো বোন এগিয়ে আসেন। প্রথমেশের কথা ভেবে সারোগেট মাদার হওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন ওই মহিলা। প্রথম চেষ্টাতেই সফল হন তিনি। ১২ ফেব্রুয়ারি জন্ম দেন যমজ সন্তানের।