খুলনা : খুলনায় পেশাজীবী সাংবাদিকেরা রয়েছেন চরম ঝুঁকিতে, ভুগছেন নিরাপত্তাহীনতায়। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালীন হরহামেশাই হামলা, হেনস্তা ও লাঞ্ছিত হচ্ছেন তারা। তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে নানা প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তি দ্বারা হুমকি পাচ্ছেন, হামলার শিকার হচ্ছেন। তেমনি আবার তাদের প্রতি বিদ্রুপ আচরণ, হেনস্তা ও হামলা করছেন নিজ পত্রিকার নীতিনির্ধারকরাও।
এভাবে দ্বিপক্ষীয় আক্রোশ ও আক্রমণের কারণেই খুলনায় সাংবাদিকদের জীবন ঝুঁকি বেড়ে গেছে মাত্রারিক্ত হারে। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন গোটা সাংবাদিক সমাজ। একের পর এক এমন অপরাধের ঘটনা পুনরাবৃত্তি ঘটলেও একটির প্রতিকার মেলেনি, হয়নি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। সঙ্গত কারণে এ অবস্থা থেকে উত্তরণ করা যাচ্ছে না বলে অভিমত সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের।
খুলনা প্রেস ক্লাব এবং সাংবাদিক সংগঠনগুলোর যৌথ সভায় এমন অভিমত ব্যক্ত করেন তারা। একই সাথে নিন্দা জ্ঞাপন করেন, করেন সুষ্ঠু বিচার দাবি ও প্রত্যেক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির। এছাড়া খুলনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মল্লিক সুধাংশু’র সাথে অশালীন আচরণকারী তেরখাদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিটন আলীকে ৭দিনের মধ্যে অপসারণ করার সাথে ঔদ্ধত্তপুর্ন ব্যবহারের দায়ে তার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি তোলা হয়।
অন্যথায় খুলনার সর্বস্তরের সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ ধারাবাহিক আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারন করেন তারা। পাশাপাশি দৈনিক সময়ের খবরের সাংবাদিক আল মাহমুদ প্রিন্সকে শারীরিকভাবে প্রহৃত করা এবং দৈনিক তথ্যের তুহিনকে প্রাণনাশের হুমকির নিন্দা জানানো হয়।
জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে দৈনিক খুলনাঞ্চল’র ফটোসাংবাদিক কাজী ফজলে রাব্বি শান্তকে জীবননাশের হুমকি দিয়েছে খানজাহান আলী থানার যুবদল কর্মী ও তেলিগাতী রাজাপুর এলাকার জনৈক রবিউল ইসলাম। গত শনিবার দুপুরে নগর ও জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ চলাকালে তিনি শান্তকে এ হুমকি দেয়।
আর খুলনাসহ গোটা দেশের সুধী সমাজে আলোড়ন সৃষ্টি হওয়া মহানগর মূখ্য হাকিম কতৃক নির্দেশে সিএমএম আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তার দায়ের করা সিনিয়র সাংবাদিক কাজী মোতাহার রহমান ও সাংবাদিক সোহাগ দেওয়ানের বিরুদ্ধে ৫৭ ও ৬৬ ধারার মামলা ঘটনাতো আছেই।
এর পর ১২ ফেব্র“য়ারি খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক অনির্বানের স্টাফ রিপোর্টার ও অনলাইন দৈনিক খুলনাটাইমস.কম এর সিনিয়র প্রতিবেদক সাংবাদিক ফকির শহিদুল ইসলামকে প্রাণনাশের হুমকি দেন কাস্টমস’র সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ।
১৪ ফেব্র“য়ারি খুমেক হাসপাতালে কেইউজে সদস্য, প্রথম আলো ট্রাস্ট এর মাদক বিরোধী সেরা প্রতিবেদক পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক, দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার জয়নাল ফরাজীকে নাজেহাল করেন হাসপাতালের প্রিজন সেলে ডিউটিরত পুলিশ সদস্য শফিক।
১৫ ফেব্র“য়ারী দৈনিক তথ্য পত্রিকার স্টাফ রিপোটার মোঃ তুহিনকে প্রানণাশের হুমকি প্রদান করা হয়। এ সকল ঘটনায় সাংবাদিকরা স্ব-স্ব থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করলেও পুলিশ দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি ।
গত ১৬ ফেব্র“য়ারি খুলনার তেরখাদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিটন আলী ফোনে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে উপজেলার বিআরবি আজগড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও খুলনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মল্লিক সুধাংশুর সাথে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকতার ফোনালাপ স্কুল কমিটির সভাপতিকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্ল অর্ডার করা, মূলত: মানহানিকর ও হুমুকি দেয়ার সামিল। ঘটনাটি সাংবাদিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলে প্রচার হওয়ার পর চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।