খুলনা : দল বেঁধে তরুণ-তরুণীদের আড্ডা, বই নাড়াচাড়া, বই কেনায় জমে উঠে খুলনার একুশে বইমেলা। মহানগরীর বয়রা এলাকার বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থগার প্রাঙ্গণের মাসব্যাপী মেলায় রবিবার বিকেল এবং সন্ধ্যার চিত্র ছিল এমনই। বইমেলার শেষ সময়ে পদচারণাও ছিল চোখে পড়ার মতো। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত অবধি মুহূর্তে পাঠক-লেখক-দর্শনার্থীদের ছিল উপচেপড়া ভিড়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, খুলনা জেলা প্রশাসন আয়োজিত বইমেলা গতকাল রবিবার ছিল জমজমাট। সকাল থেকেই ক্রেতা-পাঠকের আগমনে মেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে ওঠে। কেউ কিনছেন বই, কেউ বা দেখছেন ঘুরে ঘুরে। নতুন বইয়ের সমারহে মেলার প্রায় সব স্টল ছিল ভরপুর। নতুন বইয়ের নানা রংয়ের অঙ্গসজ্জার আকর্ষণীয় প্রচ্ছদের সম্মিলন মেলায় দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। সব বয়সের মানুষ স্টলের সামনে দাঁড়িয়েই হাতে বই তুলে নিচ্ছেন।
গতকাল সন্ধ্যায় কথা হয় লেখক, কবি ও সাংবাদিক মো. হারুন অর রশিদ এর সাথে। খুলনার পার্শ্ববর্তী অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া থেকে খুলনার একুশে বই মেলায় এসেছেন তিনি। বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি তার শ্যালকসহ তিনজন মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। এসময় তিনি বিভিন্ন লেখকের ৮-১০ বই ক্রয় করেন। তিনি জানান, সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরণের প্রবন্ধ, কাব্য , গল্প লিখে থাকেন। আগামী বছর বই মেলায় তার লেখা বই পাওয়া যাবে।
গতকাল বিকালে খুলনা পুলিশ লাইল’স স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ২৫তম দিনের অনুষ্ঠানমালার সূচনা হয়। পরবর্তীতে বিয়ন মনি কালচারাল এর বাচিক শিল্পীদের পরিবেশনায় আবৃত্তি অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। সন্ধ্যায় ছিল সেমিনার পর্ব। সেমিনার পর্বে আজকের প্রবন্ধকার ছিলেন সরকারি এম.এম.কলেজ যশোরের সহযোগী অধ্যাপক ড.খ.ম. রেজাউল করিম। প্রবন্ধের শিরোনাম ‘ একুশের সামাজিক প্রেক্ষাপট ’।
উপস্থাপিত প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর অসিত বরণ ঘোষ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন খুলনা বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের লাইব্রেরিয়ান ও একুশে বইমেলা, খুলনার সদস্য সচিব ড. আহছান উল্যাহ। সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তর, খুলনার পরিচালক হাবিবুল হক খান। পরিশেষে রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী সংস্থা এবং নান্দিক একাডেমীর শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। মেলার সামগ্রিক আয়োজনে উল্লেখযোগ্য দর্শক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।