কারাবন্দিরাও যেন একতারা তৈরীর কারিগর

প্রকাশঃ ২০১৮-০২-২৭ - ১২:৩৩

কুষ্টিয়া, সংবাদদাতা : কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে আটককৃত হাজতিদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের কাজে লাগাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর তাঁরা জামিনে মুক্ত হয়ে কেউ নিজে দোকান দিয়ে ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি মেরামত করে রেকারত্ব ঘোচাচ্ছে, আবার কেউ অন্যের দোকানে চাকরি নিয়ে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কারা সুপার জাকের হোসেন গত বছরে এখানে যোগদানের পর বিভিন্ন প্রশিক্ষণের আয়োজন করছে। এসব প্রশিক্ষনের মাধ্যমে অপরাধ সংশোধনও হচ্ছে আবার তাদের কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হচ্ছে। কারা সুপার জাকের হোসেন জানান, এর আগে জেলা প্রশাসক মো. জহির রায়হান জেলা কারাগার পরিদর্শনে এসে বন্দীদের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বন্দীদের দিয়ে একতারা তৈরীর কথা জানান কারা সুপারকে। আমরা কারাবন্দিদের প্রশিক্ষনের দিয়ে একতারা তৈরী করতে শুরু করি এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে তা সরবরাহ করি। গতকাল সকালে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. জহির রায়হানের পক্ষে একতারাগুলো নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) শরীফ উল্যাহ কবীরের হাতে তুলে দেন কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের সুপার জাকের হোসেন। কারা সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৮ সালে ২৯ একর জায়গার উপর কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে ৬শ জন ধারণকক্ষমতাসম্পন্ন হলেও বর্তমানে পুরুষ-মহিলাসহ সাড়ে ৬শ হাজতি-কয়েদি অবস্থান করছে। বন্দি মহিলা ও পুরুষদেরকে বিভিন্ন কাজে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এসব কাজে সার্বিক তত্বাবধায়নে রয়েছেন জেলা কারাগারের সুপার জাকের হোসেন। তাকে সহযোগীতা করছেন কারারক্ষি বনি আমিন নয়ন। কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের সুপার জাকের হোসেন বলেন, আমাদের কারা মহাপরিদর্শক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন জেলখানাকে বন্দীদের হাতকে কর্মীর হাতে রুপান্তরিত করতেই নানান উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এখানে আসা অল্প বয়সী হাজতিদের হাতে-কলমে কিছু শিক্ষা দিতে তাই এখানকার শিক্ষিত কয়েদিদের দিয়ে অশিক্ষিত নিরক্ষর বন্দিদের স্বাক্ষর শেখানো এবং অকক্ষর চেনানোর কাজও শুরু করা হয়েছে। নিয়ম করে দেওয়া হয়েছে অশিক্ষিত কোনো বন্দি এখানে এলে তাকে বাধ্যতামূলকভাবে অক্ষর চেনা ও স্বাক্ষর করা শিখতে হবে।’ ইতিমধ্যে একহাজারেরও বেশি মানুষ অন্তত স্বাক্ষর করা শিখেছে। কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. জহির রায়হানে বলেন, কারাগার শুধু অপরাধীদের বন্দিশালা এমনটা নয়, সময়ের প্রয়োজনে ক্রমে এতে পরিবর্তন এসেছে। বিভিন্ন অপরাধে বন্দি হাজতি-কয়েদিদের মানসিক শোধনাগার ও প্রশিক্ষিত দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করার একটি প্রতিষ্ঠানের দিকে এগুচ্ছে। তিনি আরও জানান, বন্দিদের সংশোধনের মাধ্যমে তাদের কর্মসৃজন করে গড়ে তুলতে কারা অভ্যন্তরে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে জেনে খুবই ভালো লেগেছে। তারা যেন সমানভাবে হাতের কাজ করে দক্ষ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গিয়ে স্বাবল¤॥^ী হতে পারে।