কুষ্টিয়া: বৃহস্পতিবার থেকে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব। সেই সঙ্গে বসবে গ্রামীণ মেলা। দোল পূর্ণিমার রাতে আনুষ্ঠানিভাবে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের মাজারে এ স্মরণোৎসবের উদ্বোধন করা হবে। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে দেশি ও বিদেশি লাখো বাউল ভক্তের আগমন হবে লালন আখড়াবাড়িতে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমির আয়াজনে এ লালন উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এবারের লালন মেলার প্রতিপাদ্য বিষয় ফকির লালন শাহের অমর বাণী ‘সময় গেলে সাধন হবে না’। প্রথম দিনে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক জহির রায়হানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে স্মরণোৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব-উল-আলম হানিফ। আলোচনা সভা শেষে মঞ্চে শুরু হবে লালন সঙ্গীত। যা গাইবেন লালন একাডেমির শিল্পীরা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত বাউল শিল্পী ও ভক্তরা। ইতোমধ্যে মাজার প্রাঙ্গণ পরিষ্কার করে বর্ণিল পরিবেশের সৃষ্টি করেছে একাডেমি কর্তৃপক্ষ। ভক্ত অনুসারীরা আগে থেকেই লালন আখড়ায় জায়গা করে নিতে শুরু করেছেন। আসতে শুরু করেছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাউল, সাধু আর বিদেশি লালনভক্ত অনুরাগীরাও। বাউল সম্রাট লালন শাহের জীবদ্দশায় চৈত্র মাসের প্রথম সপ্তাহে পূর্ণিমার রাতে দোল পূর্ণিমার উৎসব পালন করা হতো। সেই থেকে লালন ভক্তরা প্রতি বছরই তাদের কাঙ্খিত এ উৎসব পালন করেন। কুষ্টিয়া লালন একাডেমির সার্বিক তত্বাবধায়ক (খাদেম) মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘মরমি এ সঙ্গীত সাধকের বার্ষিক স্মরণোৎসব উপলক্ষে তার সাধন-ভজনের তীর্থস্থান ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ি প্রাঙ্গণ পরিণত হয় উৎসবের আমেজে। দেশ-বিদেশ থেকে লালনভক্ত, বাউল অনুসারী ও সুধীজনসহ অসংখ্য মানুষের আগমন ঘটে এখানে। এবারো তার ব্যতিক্রম হবে না। ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশের সাধুরা মাজারে আসছেন। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. জহির রায়হান বলেন, লালন স্মরণোৎসব ও গ্রামীণ মেলাকে কেন্দ্র করে মাজার প্রাঙ্গণ ও তার আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুরো মাজার এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। জেলা পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। সেই সঙ্গে আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা সেখানে দায়িত্বে থাকবেন। আগামী শনিবার স্মরণোৎসব ও গ্রামীণ মেলার সমাপনী ঘটবে।