এস এম জামাল, কুষ্টিয়া :মাথায় আঘাত পাওয়া একটি শিশু কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে গত শুক্রবার দুপুরে পুলিশ তাকে ভর্তি করিয়েছে। বুধবার বিকেল পর্যন্ত তার কোনো পরিচয় জানা যায়নি। হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় এই শিশুকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনে পুলিশ। তাকে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে কুষ্টিয়ায় স্থানান্তর করা হয়েছে। হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্রে লেখা শিশুটি কুষ্টিয়া ভেড়ামারা রেললাইনে পাশে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে পড়ে ছিল। তাকে উদ্ধার করে ভেড়ামারা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বুধবার বিকেলে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ছয় ন¤॥^র ওয়ার্ডের মেঝেতে বিছানায় শুয়ে আছে শিশুটি। তার বয়স আনুমানিক ১০-১২ বছর। মাথায় ব্যান্ডেজ লাগানো। পাশে বসে ছিলেন মধ্যবয়সী এক নারী। তিনি নিজকে কাজলি খাতুন ও কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়া এলাকার বাসিন্দা বলে পরিচয় দেন। ছয় ন¤॥^র ওয়ার্ডে তিনি তাঁর মাকে ভর্তি করিয়েছেন। শিশুটিকে তার মায়ের বিছানার পাশেই মেঝেতে রাখা হয়েছে। শিশুর অবস্থা দেখে গত চার দিন ধরে তিনিই সেবা দিচ্ছেন। খাওয়ানো থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ করে দিচ্ছেন। কোলে তুলে আদর করছেন। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোহনা আফরোজ বলেন, মনে হচ্ছে মাথায় শক্ত কিছুর আঘাত লেগেছে। সিটিস্ক্যান করতে বলা হয়েছে। এখনো করা হয়নি। গত চার দিন ধরে সে কোনো কথা বলেনি। মাঝে মধ্যে আম্মু আম্মু বলে ডাকছে। চোখ তুলে তাকায়ওনি। মোহনা আফরোজ আরও বলেন, মাথায় রক্ত জমাট বেঁধেছে কিনা সিটিস্ক্যান করে দ্রুত জানা দরকার। কিন্তু তার স্বজন না থাকায় সেটা কেউ করছে না। দায়িত্বরত সেবিকা মনিরা পারভীন বলেন, হাসপাতাল থেকে যাবতীয় ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। তার সেবার কোনো ত্রুটি হচ্ছে না। তবে সিটিস্ক্যান ব্যয়বহুল হওয়ায় সেটা বাইরে থেকে করতে হয়। হাসপাতালে সিটিস্ক্যান নেই। এক রোগীর স্বজন শিশুটির সেবা করছেন। সেবা করা কাজলি খাতুন বলেন, শিশুটির মুখের দিকে তাকিয়ে খুব মায়া হয়। সে জন্য তাকে দেখা হচ্ছে। যা খাবার পাচ্ছি তাকে খাওয়ানো হচ্ছে। আরেক রোগীর স্বজন শিশুটির জন্য এক সেট জামা প্যান্ট দিয়েছে। এই প্রতিবেদক যখন হাসপাতালে ছিলেন তখনো শিশুটি যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিল। মাঝে মধ্যে তাকে আম্মু আম্মু ডাকতে শোনা গেছে। হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের সদস্য ইমরান হোসেন বলেন, শিশুটির জন্য তিনি নিজে টাকা সংগ্রহ করছেন। তার ওষুধ ও খাওয়ার ব্যবস্থা করছেন। আরও কিছু টাকা হলে সিটিস্ক্যানটা করানো যেতো।