প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন সত্যবাদি নেতা। তিনি সত্য কথা বলতে কখনও কুন্ঠাবোধ করতেন না। যা অনেক নেতার মধ্যে নেই। গতকাল সোমবার বিকাল ৪টায় শহীদ হাদিস পার্কে সদর থানা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ্যাড. মো. সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর ছাত্রজীবনের বেকার হোস্টেলের ঘটনা তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধু ছাত্রজীবনে কলকাতার বেকার হোস্টেলে থাকতেন। রাজনীতি করার কারনে তিনি প্রতিনিয়ত গভীর রাতে হোস্টেলে ফিরতেন। এ বিষয়টি হোস্টেলের অন্যান্যরা বিরক্তি বোধ করতেন। ওই সময়ে বেকার হোস্টেলের সুপার ছিলেন, ড. সাইদুর রহমান। তাঁর কাছে অন্যান্য ছাত্ররা অভিযোগ করলেন যে, শেখ মুজিব গভীর রাত করে হোস্টেলে ফিরে এতে আমাদের সবার অসুবিধা হয়। তখন হল সুপার শেখ মুজিবকে ডাকলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন যে, তুমি প্রতি রাতে দেরী করে ফিরে কেন? তখন বঙ্গবন্ধু মুজিব নির্ভয়ে উত্তর দিলেন, স্যার আমি রাজনীতি করি। সেকারনে রাতে দেরী হয়। তখন হল সুপার বঙ্গবন্ধু মুজিবকে অনুমতি দিলেন এবং সবাই ডেকে বলে দিলেন মুজিব দেরী করে আসবে। উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধুর সত্য বলার যে অদম্য ইচ্ছা এটা খুবই বিরল। তিনি আরো বলেন, টুঙ্গিপাড়া একটি গ্রাম; যে গ্রামটিকে বিশে^র মানুষ নামে এবং ভৌগলিকভাবে চিনে। কিন্তু পৃথিবীর এমন কোন দেশের গ্রাম নেই যে গ্রামকে বিশে^র মানুষ নামে বা স্থানগত কারনে চিনে। ব্যতিক্রম শুধু টুঙ্গিপাড়া গ্রাম নিয়ে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুুকে যারা হত্যা করে টুঙ্গিপাড়া দাফন করেছিলো, তাদেরকে কর্নেল তাহের তাদেরকে বলেছিলো যে, শেখ মুজিবকে টুঙ্গিপাড়ায় দাফন না করে বঙ্গপোসাগরে ভাসিয়ে দিলে না কেন? তখন ডালিম রশিদ গংয়েরা বলেছিলো কেন? তখন কর্নেল তাহের বলেছিলো, টুঙ্গিপাড়া একদিন শেখ মুজিবের মাজার হবে আর দেশ বিদেশের মানুষ সেখানে আসবে, আর বঙ্গপোসাগরে ফেলে দিলে তার কোন অস্তিত্বই থাকতো না। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন প্রকৃত দেশ প্রেমিক রাজনীতিবিদ। তাঁর দেশপ্রেম তাঁকে তাঁর জন্মস্থানে দাফন করিয়েছে। কোন অপশক্তিই তাকে রুখতে পারেনি। তিনি বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুর সাথে বিশ^াসঘাতকতা করেছে তাদের কারো কারো লাশও পাওয়া যায়নি। শুধু মিথ্যে মরিচিকার মধ্যদিয়ে মানুষকে প্রহসন করা হয়েছে। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে উপাচার্য আরো বলেন, ড. সাইদুর রহমানকে একদিন বঙ্গবন্ধু মুজিব জিজ্ঞাসা করলেন স্যার দেশ কেমন চলছে? ড. সাইদুর রহমান বললেন, ভালো না। ড. সাইদুর রহমান তখন বললেন, তুমি মন্ত্রিপরিষদে কয়েকজন সৎ ও দক্ষ মানুষ নেও। বঙ্গবন্ধু তখন ড. সাইদুর রহমানকে বললেন, স্যার এই দায়িত্বটা আপনিই নেন এবং আগামী তিন মাসের মধ্যে দুই শ’ সৎ মানুষের নাম লিখে আমাকে দিন। তিন মাসেও ড. সাইদুর রহমান নাম দিতে পারেন নি। তিনমাস পরে ড. সাইদুর রহমান বুঝে ছিলেন দেশ পরিচালনা একটি সত্যই কঠিন কাজ আর সৎ মানুষ পাওয়া আরো কঠিন বিষয়। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং তাঁর রাজনৈতিক জীবনকে সামনে রেখে সকল স্বাধীনতাকামী মানুষকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
সদর থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ফকির মো. সাইফুল ইসলামের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী আলহাজ¦ তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি, খুলনা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, কলেজ শিক্ষকদের প্ক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন, আহসান উল্লাহ কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল হক মিন্টু, স্কুল শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন, পল্লী মঙ্গল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শেখ মো. রফিকুল ইসলাম, শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন, আসিফ আদনান অমি।