ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি : খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় বিধিবহির্ভূতভাবে অনুমোদন দেওয়া উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার নতুন কেন্দ্রটি বাতিলের দাবি উঠেছে। অবিলম্বে কেন্দ্রটি বাতিল করে আগের ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা গ্রহণের দাবিও জোরদার হচ্ছে। কেন্দ্রটি বাতিল করে উপজেলা সদরের পরীক্ষার্থীদের অনাকাঙ্খিত বিড়ম্বনা ও হয়রাণির হাত থেকে রক্ষা করতে বুধবার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
ডুমুরিয়া কলেজের দাতা সদস্য (আজীবন) আব্দুল লতিফ মোড়ল লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, নতুন কেন্দ্রের অনুমোদনের জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মতামত গ্রহণের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা না নিয়েই বিধিবহির্ভূতভাবে উপজেলার বান্দা কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রটির অনুমোদন দেয় যশোর শিক্ষা বোর্ড। অথচ: এ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গিয়ে উপজেলা সদরের পরীক্ষার্থীদের চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হবে। তিনি এ বিষয়ে আইনগত ও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক আগের ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী ডুমুরিয়া কলেজের পরীক্ষার্থীদের শহীদ স্মৃতি মহিলা কলেজ ভেন্যুতে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে, ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা-ইউএনও মোহাম্মদ আশেক হাসান জেলা প্রশাসক বরাবর দেওয়া এক পত্রে উল্লেখ করেন একটি নতুন পরীক্ষা কেন্দ্র করতে হলে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মতামত এবং সুপারিশ নেওয়ার বিধান রয়েছে। এছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে ২শ’ পরীক্ষার্থী থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও রয়েছে মাত্র ৫২জন। এছাড়া এ ক্ষেত্রে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মতামত এবং সুপারিশ নেওয়া হয়নি। কেন্দ্রটি বিধিবহির্ভূতভাবেই করা হয়েছে। যেহেতু স্থানীয় প্রশাসনের কোন মতামত নেওয়া হয়নি, সেহেতু এর সকল দায়-দায়িত্ব বোর্ডকেই নিতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, বিগত বছরগুলোতে স্ব স্ব কেন্দ্র কলেজের পরীক্ষার্থীরা বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজ কলেজ কেন্দ্রের পরিবর্তে ডুমুরিয়া কলেজের পরীক্ষার্থীরা পাশ্ববর্তী শহীদ স্মৃতি মহিলা কলেজ ভেন্যু, বান্দা কলেজিয়েট স্কুল, শহীদ স্মৃতি মহিলা কলেজ, মাওলানা ভাষানী মেমোরিয়াল কলেজ ও স্বর্ণদ্বীপ কলেজের পরীক্ষার্থীরা ডুমুরিয়া কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়ে আসছিল। কিন্তু চলতি বছর অন্যসব কেন্দ্র ঠিক থাকলেও বান্দা কলেজিয়েট স্কুলে নতুন কেন্দ্র করা হয়েছে। যেখানে ডুমুরিয়া কলেজের পরীক্ষার্থীদের সদর থেকে ৮/১০ কিলোমিটার দূরে অপর্যাপ্ত যোগাযোগ ব্যবস্থার মধ্যদিয়ে যেতে হবে। নতুন কেন্দ্র অনুমোদনের ক্ষেত্রে স্থানীয় উপজেলা প্রাসনের একটি অনুমতি বা ছাড় পত্র নেয়ার বাধ্য বাধকতা থাকলেও বোর্ড কর্তৃপক্ষ সেটি নেননি। শুধুমাত্র বান্দা কলেজিয়েট স্কুলের আবেদনের প্রেক্ষিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এমপির ডিও লেটারে কেন্দ্র অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। অজপাড়াগায়ের এ বান্দা কলেজিয়েট স্কুলে কেন্দ্র অনুমোদনের ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ স্থানীয় প্রশাসনেও চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড যশোরের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র এ প্রতিবেদককে বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সুপারিশ ও বোর্ডের নিজস্ব কমিটির সিদ্ধান্তে কেন্দ্রটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন উদ্বুধ পরিস্থিতির বিষয়টিও কর্তৃপক্ষের নলেজে রয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যেই দশ জেলায় পরীক্ষার সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রস্তুতিও প্রায় শেষের পথে। যে কারণে এবার কেন্দ্র পরিবর্তন বা সিদ্ধান্ত স্থগিত করার কোন সুযোগ নেই। তবে, আগামী বছর থেকে উপজেলার সকল ভেন্যু তুলে দেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।