মো:নজরুল ইসলাম, ঝালকাঠি : স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক ও নির্যাতনের মামলা করে দুই পুত্র সন্তান নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন রাজাপুর উপজেলার গালুয়াদূর্গাপুর গ্রামের মরিয়ম বেগম। দুই শিশুপুত্র নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে মরিয়মের । দুই ছেলে শাওন (১২) ও লিয়ন (৭) কে নিয়ে মরিয়ম গতকাল সোমবার হাজির হন ঝালকাঠি প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সামনে। নির্যাতিত মরিয়ম বেগম (৩১) স্বামী শাহীন আহসান সাবুর বিরুদ্ধে নির্যাতনের নানা অভিযোগ তুলে ধরেন সাংবাদিকদের সামনে। মরিয়ম বেগম জানান, ২০০৩ সালের ২৫ মে রাজাপুর উপজেলার গালুয়া দূর্গাপুর গ্রামের মৃত নেছার উদ্দিনের প্ত্রু শাহীন আহসান সাবুর মরিয়ম বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সাবু মরিয়ম এবং তার বাবা রব সিকদারের কাছে নানাভাবে যৌতুক দাবী করে আসছিল। এক পর্যায় মরিয়মের বাবা রব সিকদার নিজ খরচায় জামাইকে সৌদি আরব পাঠান। কিছুদিন চাকুরী করে সাবু সৌদি আরব থেকে পালিয়ে চলে আসেন। গ্রামের বাড়িতে এসে সাবু শ্বশুর বাড়িতে থাকা শুরু করে। শ্বশুর বাড়িতে থাকা অবস্থায় নগদ টাকার জন্য সে মরিয়মকে প্রায়ই মালধর করা শুরু করে। নির্যাতনের মাত্র বেড়ে গেলে গত ১৪ মে ২০১৭ মরিয়ম স্বামী শাহীন আহসান সাবুর বিরুদ্ধে ঝালকাঠি জেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে একটি মামলা দায়ের করেনে। এ মামলায় সাবু কিছুদিন হাজত খেটে আদালত থেকে জামিন লাভ করে। জমিন পাওয়ার পরে সাবু স্ত্রী মরিয়মকে শায়েস্তা করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে এবং নিজের বিবাহের কথা গোপন করে রাজাপুরের ফুলহার গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে ইসরাতজাহান শিবলিকে বিবাহ করে ভান্ডারিয়া উপজেলায় বসবাস শুরু করেন। এ ঘটনায় চরম বিপদে পড়েন মরিয়ম বেগম। দুই সন্তান এবং নিজের ভোরণ পোষনের খরচ দাবী করলে গত ১৬ ডিসেম্বর শাহীন আহসান মরিয়মকে গালমন্দ এবং হত্যার হুমকি দিয়ে বলে তোর জন্য আমি জেল খেটেছি। তুই আমাকে আরও টাকা দিবি। মরিয়ম শাহীনের বক্তব্যের প্রতিবাদ করলে শাহীন তার দ্বিতীয় স্ত্রী ইসরাতজাহান ও অজ্হাতনামা ৫/৬জন নিয়ে মরিয়মের উপর হামলা করে। মরিয়মকে কুপিয়ে গুরতর আহত করা হয়। স্থানীয় লোকজন মরিয়মকে উদ্ধার করে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ব্যাপারে মরিয়ম বেগম বাদী হয়ে ঘটনার দিনই রাজাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের কিছুদিন পর রাজাপুর থানার এসআই রফিকুল ইসলাম আসামী সাবু ও ইসরাতজাহানের কাছ থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের পর সাবু ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী ইসরাতজাহান আরো বে-পরোয়া হয়ে মরিয়মকে আদালত থেকে যৌতুক মামলা তুলে নেয়ার জন্য নানারকম হুমকি দিয়ে আসছে। মামলা তুলে না আনলে মরিয়ম ও তার দুই সন্তানকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়া হচ্ছে। অসহায় মরিয়ম তার স্বামীর কাছ থেকে খোরপোষ পাওয়ার জন্য ঝালকাঠির পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। মরিয়ম বেগম অভিযোগ করেন স্বামীর ভয়ে আমি এখন বাড়িতে থাকতে পারি না। বাড়িতে এসে সে আমাকে হুমকি দিতে থাকে। তাই আমি এখন পালিয়ে বেড়াই।