খুলনা : আসন্ন খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। কেউ যদি দলের প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কাজ করে তাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করার কঠোর সিদ্ধান্ত দিয়েছেন দলীয় প্রধান। রবিবার রাতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় আসন্ন খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে দলের মেয়র প্রার্থীর হিসেবে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি’র নাম ঘোষণার পর তিনি এ সিদ্ধান্ত জানান। বৈঠকে অংশ নেওয়া নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মল্লিক আবিদ হোসেন কবির মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদককে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেককে বিজয়ী করতে হবে। কেউ যদি নৌকার বিপক্ষে কাজ করে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল টিম’র মাধ্যমে দল থেকে চিরতরে বহিষ্কার করা হবে। নির্বাচন মনিটরিং এর জন্য কেন্দ্র থেকে একাধিক কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটি সব কিছু দেখভাল করবে। প্রতিটি থানায় পৃথক কমিটি করে কাজ করতে হবে। যদি কারও বিরুদ্ধে বিরোধীতার অভিযোগ শোনা যায়, সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সূত্র জানায়, ১৯৫২ সালের ১ জুন বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার মল্লিকের বেড় গ্রামে জন্ম নেওয়া তালুকদার আবদুল খালেক ছাত্র অবস্থায় সম্পৃক্ত হন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে। পরবর্তী সময়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন দীর্ঘদিন। ২০০৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সভাপতি তিনি। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত খুলনা পৌরসভার মহসিনাবাদ ইউনিয়নের কমিশনার হিসেবে জনপ্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বাগেরহাট-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন ১৯৯৬ সালে। ২০০৮ সালে কেসিসি নির্বাচনে অংশ নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৩ সালের নির্বাচনে ফের তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। কিন্তু ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনির কাছে প্রায় ৬০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন তালুকদার আব্দুল খালেক। ওই সময় বিভিন্ন ইস্যুর সাথে যুক্ত হয় দলীয় কোন্দলের বিষয়টি। এই পরাজয়ে কিছুটা সংক্ষুব্ধ হন তালুকদার আব্দুল খালেক। আর এ কারণেই মেয়র পদে নির্বাচনে অনিচ্ছা জন্ম নেয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাগেরহাট-৩ আসনের সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।
মূলত ওই সময় দলের কোন্দলে তালুকদার আব্দুল খালেকের পরাজিত হওয়ার বিষয়টি দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের নজরে আসে। যার জন্য স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবছর কেসিসি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য সকল নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান এমপি, নগর সহ-সভাপতি শেখ হায়দার আলী, মল্লিক আবিদ হোসেন কবিরসহ অন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।