পাইকগাছা প্রতিনিধি : আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক না হলেও নির্বাচন কমিশনারের ঘোষিত মার্চে নির্বাচন হতে পারে এমন ঘোষণায় পাইকগাছায় সম্ভাব্য প্রার্থীরা গণসংযোগ শুরু করে দিয়েছেন। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচনে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও বিএনপি-জামাতের এক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আগামী মার্চে নির্বাচন হবে এমন একটি সম্ভাব্য সময় ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ ঘোষণার পর থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা গণসংযোগ শুরু করে দিয়েছেন। ১০ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ গঠিত। এ উপজেলায় বিগত ২০০৯ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাড. স. ম. বাবর আলীকে পরাজিত করে আওয়ামী লীগের মো. রশীদুজ্জামান মোড়ল নির্বাচিত হন। আবার ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. রশীদুজ্জামানকে পরাজিত করে ২০ দলীয় জোটের অ্যাড. স. ম. বাবর আলী নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকলেও তৃণমূল নেতাকর্মীদের ভোটে রশীদুজ্জামান, গাজী মোহাম্মদ আলী ও ছাত্রনেতা শেখ আবুল কালাম আজাদ অংশ নিলে রশীদুজ্জামান সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে প্রার্থী নির্বাচিত হন। এদিকে আগামী মার্চে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে যাদের নাম সর্বত্রই শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব মো. রশীদুজ্জমান মোড়ল, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও জেলা সহ-সভাপতি গাজী মোহাম্মদ আলী, সাবেক এমপি অ্যাড. শেখ মো. নূরুল হকের জ্যেষ্ঠ পুত্র জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মনিরুল ইসলাম ও ছাত্রলীগের খুলনা জেলা সহ-সভাপতি, পাইকগাছা উপজেলা সাবেক সভাপতি শেখ আবুল কালাম আজাদ। যেহেতু দলীয় প্রতীকে এবারই প্রথম উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সে কারনে দলীয় মনোনয়ন একটি ফ্যাক্টর বলে মনে করছে সকলেই। ফলে সকলেই দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। তবে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করবেন বলেও জানান সম্ভাব্য প্রার্থীরা। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রশীদুজ্জামান মোড়ল জানান, দলের কাছে তিনি মনোনয়ন চাইবেন। কেননা বিগত ২০০৯ সালে তিনি দলের মনোনয়নে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। কিন্তু ২০১৪ সালে দলীয় মনোনয়ন পেলেও দলীয় কোন্দলের কারনে তিনি হেরে যান। সম্ভাব্য প্রার্থী গাজী মোহাম্মদ আলী জানান, আজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে দল করে আসছি। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং উপজেলা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েও তিনি পাননি। জীবনের শেষ সময়ে আবারও বেশ জোরে শোরে দলীয় সভানেত্রীর কাছে মনোনয়ন চাইবেন। শেখ মনিরুল ইসলাম জানান, ১৯৯১ সাল থেকে আমার পিতা (সাবেক এমপি) অ্যাড. শেখ মো. নূরুল হকের সাথে এই এলাকার মাটি ও মানুষের সাথে মিশে আছি। যেহেতু এই এলাকার মানুষের সাথে আমার এবং আমার পরিবারের নাড়ির সম্পর্ক সে কারনে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে আগ্রহী। ছাত্রলীগের জেলা সহ-সভাপতি ও উপজেলা সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ জানান, ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমি মনোনয়ন চেয়েছিলাম এবং সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিকট থেকে ৬৬টি ভোট পেয়েছিলাম। আগামী নির্বাচনে আমি দলীয় প্রার্থী হতে পারব বলে আশাবাদী এবং তৃণমূলের মতামত নিলে আমি সর্বোচ্চ সমর্থন পাব বলে আশাবাদী। তবে দলীয় মনোনয়ন না পেলেও যিনি পাবেন তাকে সাথে নিয়ে কাজ করবেন এবং এলাকার মানুষের সুখে দুঃখে পাশে থাকবেন বলে জানান। এদিকে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও তৎকালীন বিএনপি জোট মনোনীত প্রার্থী অ্যাড. স ম বাবর আলী বর্তমান রাজনৈতিক পেক্ষাপট এবং শারীরিক অসুস্থতার কারনে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়েছেন। তবে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে দলটির উপজেলা আহবায়ক ডা. মো. আব্দুল মজিদের নাম শুনা যাচ্ছে। অপরদিকে জামায়াত ইসলামীর সাবেক উপজেলা আমীর ও বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওঃ শেখ কামাল হোসেন জানিয়েছেন, দলগতভাবে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। দলীয় সিদ্ধান্ত হলে তখনই বলা যাবে কে হবেন প্রার্থী? এখন অপেক্ষার পালা আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী কে হচ্ছেন? আর ঐক্য ফ্রন্ট কিংবা অন্য দল থেকে কে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন?