কয়েদি নম্বর ৩৮৪৮

প্রকাশঃ ২০১৯-০৪-২৩ - ১১:১৫

জাহালামের মতোই বিনা দোষে জেল খাটার আরও একটি ঘটনার খোঁজ পাওয়া গেছে। নাম, পিতার নাম, ঠিকানা, বয়স কোনো কিছুরই মিল নেই। তবু ১০ বছরের সাজা পাওয়া মাদক মামলার আসামির বদলে জেলে পাঠানো হয়েছে আরমান নামে একজনকে। তিন বছরেরও বেশি সময় কাশিমপুর কারাগারে জেল খাটছেন তিনি।

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারগার। কয়েদি নম্বর ৩৮৪৮ (তিন আট চার আট)। নাম মো: শাহবুদ্দিন ওরফে আরমান। পল্লবী থানার ৬১(৮)০৫ নম্বর মামলা এবং ঢাকার জননিরাপত্তা বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাদক মামলা নম্বর ২৫২১/২০১৫। কারগারের নথি অনুযায়ী মাদক মামলায় ১০ বছরের সাজা হয়েছে তার। কিন্তু তার জায়গায় কারাগারে আছেন মো: আরমান নামে একজন। ২০১৬ সালের ২৯শে জানুয়ারি মো: আরমানকে শাহাবুদ্দিন ওরফে আরমান দেখিয়ে গ্রেপ্তার করেন পল্লবী থানার তখনকার এসআই রাসেল।

মো: আরমানের পরিবারের অভিযোগ, সাজা পাওয়া পলাতক আসামী মাদক ব্যসায়ী শাহবুদ্দিনকে বাঁচাতেই তার সঙ্গে যোগসাজশ করে আরমানকে শাহবুদ্দিন ওরফে আরমান সাজিয়ে কারগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

মামলার নথিতে দেখা গেছে, থানার এফআইআরে আসামীর নাম রয়েছে মো: শাহবুদ্দিন। পরে চার্জশিটে নাম হয়েছে মো: শাহবুদ্দিন ওরফে আরমান। এমনকি মামলার নথিতে জেলে থাকা মো: আরমানের সাথে নাম, পিতার নাম, ঠিকানা ও বয়সের গড়মিল রয়েছে।

আরমানের আইনজীবী মো: গোলাম ছারোয়ার খান বলেন, ‘এই আরমান শাহবুদ্দিন আরমান নয়। অর্থাৎ শাহবুদ্দিন জামিনের পর পলাতক হয়ে যায়। চার্জ শিটে শাহবুদ্দিন বিহারি ওরফে আরমান লাগানোর কারণেই সাজার পরে আমার আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে।‘

আরমানের পরিবারের দাবি, সাজা পাওয়া শাহবুদ্দিন এখনও পলাতক। মোবাইলে আরমানের পরিবারকে কিছুদিন আগেও হুমকি দিয়েছে সে।

এদিকে, সাজা পাওয়া মাদকব্যবসায়ী শাহবুদ্দিনের বদলে নিরাপরাধ আরমানকে গ্রেপ্তার ও জেলে পাঠানো নিয়ে একে অন্যের ওপর দায় দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট দুই পুলিশ কর্মকর্তা। এসআই রাসেল (আরমানকে গ্রেপ্তার করা পুলিশ কর্মকর্তা) ও  ইনসপেক্টর সিরাজুল ইসলাম (মামলার চার্জশিট দেয়া পুলিশ কর্মকর্তা)।

আরমানের পরিবার চায়, এই মিথ্যের অবসান ঘটিয়ে দ্রুত আরমানকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হোক।