ঢাকা অফিস : পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ২২ মাস পর আত্মনিয়ন্ত্রণের পূর্ণ অধিকারের দাবি নিয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটে আওয়ামী লীগের। তারপর থেকেই ঘাত-প্রতিঘাত, উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে সাবলীলভাবে এগিয়ে চলেছে দলটি। একাত্তরে স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেয়ার পর এখন সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারে কাজ করছে আওয়ামী লীগ।
এক তেইশে জুন অস্তমিত হয়েছিল বাংলার সূর্য। আরেক তেইশে জুন এসেছিল নব আলোর রেখা নিয়ে। পলাশী যুদ্ধের ১৯১তম বার্ষিকীতে ১৯৪৯ সালের ২৩শে জুন রোজ গার্ডেনে আত্মপ্রকাশ ঘটে আওয়ামী লীগের। এর বাইশ বছরের মাথায় এই দলটির নেতৃত্বেই স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে রাজনৈতিক সংগ্রাম, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, চুয়ান্নর নির্বাচনে বিজয়সহ নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে পঞ্চাশের দশকেই পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হয়ে ওঠে আওয়ামী লীগ। পরে দীর্ঘসময় সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন করে জনতার নেতা হয়ে ওঠেন দলটির সে সময়ের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান। ছেষট্টিতে ছয় দফা দেন তিনি, যার ভিত্তিতেই সত্তরের নির্বাচনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ।
তবে নির্বাচনে জয়ী আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে একাত্তরের পঁচিশে মার্চ রাত থেকে বাঙালি নিধনে মেতে ওঠে পশ্চিম পাকিস্তানিরা। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। আর এরই ধারাবাহিকতায় স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকে আলোর স্ফুরণের সাথে তুলনা করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা ঔপনিবেশিক আমলের সেই অন্ধকার সময়ে একটা আলোর স্ফুরণ ঘটে। সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে বাঙ্গালি জনগনের মাঝে একটা আশার আলো নিয়ে এসে ছিলো আওয়ামী লীগ। এ দেশের যত প্রগতিশীল আন্দোলন সংগ্রাম, অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের চিন্তা-চেতনা সব কিছুর মূল ভীত হচ্ছে আওয়ামী লীগ’।
সত্তর বছর পূর্ণ করে একাত্তরে পা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এই দীর্ঘ পরিক্রমায় দলটির ওপর সবচেয়ে বড় আঘাত এসেছে পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্ট- সপরিবারে খুন হন বাঙালি জাতির জনক। এরপর সামরিক শাসনের নির্যাতন আর নিপীড়নের মধ্যে পড়ে দলটি। একাশিতে দেশে ফিরে দলীয় সভাপতির দায়িত্ব নেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। স্বাধীন বাংলাদেশেও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকে আওয়ামী লীগ।
একুশ বছর পর ছিয়ানব্বইয়ে ফের ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। দুহাজার একের নির্বাচনে হারলেও দুহাজার আটের নির্বাচনের পর থেকে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশকে এখন উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টায় রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ মনেকরেন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত না হলে, বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু দুটি স্বপ্ন নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। একটি বাংলাদেশকে স্বাধীন করা। আরেকটি, বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত শস্য-শ্যামলা সোনার বাংলা রুপান্তরিত করা’।
ইতিহাস নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাধারী আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বহুদূর, প্রত্যাশা সবার।