দশ দিনের রিমান্ডে জি কে শামীম

প্রকাশঃ ২০১৯-০৯-২২ - ১০:৫৮

ঢাকা অফিস : যুবলীগ নেতা পরিচয়ে ঠিকাদারি চালিয়ে আসা জি কে শামীমকে অস্ত্র ও মাদক আইনের দুই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দশ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। শনিবার রাতে অস্ত্র মামলার শুনানি নিয়ে শামীমের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মহানগর হাকিম মাহমুদা আক্তার। পরে মাদক মামলার শুনানি শেষে প্রভাবশালী এই ঠিকাদারকে আরও পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেয়া হয়।

রাজধানীর নিকেতনে যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত জি কে শামীমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে নগদ প্রায় দুই কোটি টাকা, পৌনে দুশ কোটি টাকার এফডিআর, আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ পায় র‌্যাব।

পরদিন অস্ত্র, মাদক ও মুদ্রাপাচার আইনের তিন মামলা দিয়ে গুলশান থানায় তুলে দেয়া হয় প্রভাবশালী এই ঠিকাদার ও তার সাত দেহরক্ষীকে। পুলিশ জানিয়েছে, অস্ত্র ও মুদ্রাপাচার মামলায় শামীমসহ আটজনকে আসামি করা হয়েছে। আর মাদকের মামলায় আসামি শুধু শামীমই। প্রায় তিন ঘণ্টা থানা হাজতে রাখা হয় তাদের।

শনিবার রাতে আসামিদের ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে অস্ত্র ও মাদক মামলায় সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে অস্ত্র মামলায় জি কে শামীমকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত। এই মামলায় তার সাত দেহরক্ষী আমিনুল, কামাল, শহিদুল, মুরাদ, দেলোয়ার, জাহেদ ও সায়েমের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। এরপর মাদক মামলায় একমাত্র আসামি শামীমকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হেমায়েত উদ্দিন খান বলেন, উদ্ধারকৃত অস্ত্র দিয়েই তিনি টেন্ডারবাজি এবং চাঁদাবাজি করতেন বলে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে পেশ করেছেন। বিজ্ঞ আদালত তা আমলে নিয়ে অস্ত্র মামলায় তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি মাদক মামলায়ও তাকে ৫ দিনের রিমান্ড দেয়া হয়। আর অস্ত্র আইনের মামলায় দেহরক্ষী প্রত্যেকের জন্য সাত দিন করে রিমান্ড চাইলেও চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবী  শওকত ওসমান বলেন, উনি বর্তমানে ১৮টি সরকারি প্রকল্পের কাজ করছেন, যার পরিমাণ প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। আমরা মনে করি এটি উদ্দেশ্যপ্রণেদিত। আমাদের সুনাম নষ্ট করার জন্যই ব্যবসায়ীক শত্রুরা এসব কাজ করছে।

শামীমকে এই দুই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। আর অর্থপাচার মামলার তদন্তভার সিআইডির কাছে।

শুক্রবার রাজধানীর গুলশানের নিকেতনের কার্যালয় থেকে সাত দেহরক্ষীসহ গ্রেপ্তার করা হয় শামীমকে। পর শামীমকে র‌্যাব-১ এর কার্যালয়ে নেয়া হয়। র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন শামীম।

‘আন্ডারওয়ার্ল্ডের’ সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়েও বিস্তারিত তথ্য দেন তিনি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার দুপুরে সাত দেহরক্ষীসহ শামীমকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে এ থানায় অস্ত্র, মাদক এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে আলাদা তিনটি মামলা করে র‌্যাব।

অস্ত্র দেখিয়ে ভীতি প্রদর্শন এবং মানি লন্ডারিং মামলায় তার সাত দেহরক্ষীকেও আসামি করা হয়। অস্ত্র ও মাদক আইনে দায়ের করা মামলা দুটি তদন্ত করবে পুলিশ। মানি লন্ডারিং আইনে দায়ের করা মামলার তদন্ত করবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ৪ মিনিটে হাতকড়া পরা অবস্থায় শামীমসহ মোট আট আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।