মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা : রাস্তা থেকে অপহরণ করে ১৮দিন আটকে রেখে এক মাদরাসা ছাত্রীকে (১৬) পালাক্রমে ধর্ষণ করার অভিযোগে বাগেরহাটের শরণখোলা থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে মেয়ের বাবা বাদি হয়ে উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের মালিয়া রাজাপুর গ্রামের আবু হানিফ হাওলাদারের বখাটে ছেলে ধর্ষক রাকিব হাওলাদারসহ (২৮) পাঁজনের নামে মামলাটি দায়ের করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ধর্ষক রাকিব গত ১০জুন মাদরাসা ছাত্রী ওই কিশোরীকে গোপনে ঢাকা নিয়ে যাচ্ছিল। এমন সংবাদ পেয়ে ওইদিন দুপুর দুইটার দিকে উপজেলা সদর রায়েন্দা পাঁচরাস্তা বাদল চত্বর বাসস্ট্যান্ড থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় ধর্ষক রাকিব ও তার সহযোগীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মেয়েটিকে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। বর্তমানে ধর্ষিতা কিশোরী পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। মেয়ের বাড়ি একই ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজাপুর (তিনরাস্তা) গ্রামে। সে দক্ষিণ রাজাপুর দাখিল মাদরাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী। ধর্ষক রাকিব মালিয়ার মোড়ে ফ্ল্যাক্সি লোডের দোকান দেয় বলে জানায় পুলিশ।
কিশোরীর বাবা জানান, মাদরাসায় যাওয়া-আসার পথে রাকিব তার মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছে। তাছাড়া, বখাটে রাকিব ও তার সহযোগীরা বাড়ির সামনে এসে প্রায়ই আড্ডা দিত। গত ২২মে সকাল ১১টার দিকে তার মেয়ে বাড়ির সামনের রাস্তার বের হয়। সেখানে আগে থেকে দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে ওঁৎ পেতে ছিল রাকিব ও তার বন্ধু মুন্না। তখন তারা মেয়েকেটিকে মুখ চেপে ধরে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। এর পর বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ওইদনিই ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়।
ধর্ষিতা কিশোরী সাংবাদিকদের বলে, অহরণের পর রাকিব আমাকে মুন্নার বাড়িতে নিয়ে যায়। ওই বাড়িতে নিয়ে ঘরের দোতলায় আটকে রেখে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে পালাক্রমে ধর্ষণ করে রাকিব। এতে মুন্না সার্বক্ষণিক সহযোগীতা করেছে। তাছাড়া, মুন্নার ভাই খোকন ও তার মা খাদিজা বেগম আমাকে সবসময় চোখে চোখে রাখতো, যাতে আমি বাইরে বের হওয়া বা চলে যেতে না পারি। আমি বাড়ি যেতে চাইলে রাকিব বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখাতো। সে আমাবে জোর করে বিয়ে করতে চেয়েছিল।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসকে আব্দুল্লাহ আল সাইদ জানান, উদ্ধার করে মেয়েটিকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। এঘটনায় মেয়ের বাবা বাদি হয়ে রাকিব ও তার বন্ধু একই গ্রামের মোজাম্মেল ভূঁইয়ার ছেলে মুন্নাসহ পাঁচজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। শনিবার মেয়েটিকে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ২২ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি শেষে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালছে।