মো.নজরুল ইসলাম, ঝালকাঠিঃ ঝালকাঠির রাজাপুরে আইরিন আক্তার কবিতা (২০) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহত কবিতার লাশ উদ্ধার করেছে রাজাপুর থানা পুলিশ। মৃতদেহ আজ শুক্রবার ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে নিহতের স্বামী মিরাজ হাওলাদারকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আটক করা হয়েছে।
নিহত আইরিন আক্তার কবিতা উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের হাইলাকাঠি গ্রামের ইউনুস ভুইয়ার মেয়ে ও একই গ্রামের শ্রমিক মিরাজ হাওলাদারের স্ত্রী।তাদের দাম্পত্য জীবনে ৭ মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
নিহতের পিতার দাবি তার মেয়েকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে। এ মৃত্যুর পেছনে অন্য কোন রহস্য রয়েছে। তারা আরও জানান বিয়ের পর থেকে প্রায়ই শ্বশুরবাড়ির লোকজন কবিতাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। বৃহস্পতিবার বিকালে কবিতাকে তার স্বামী মিরাজ হাওলাদার শ্বাসরোধ করে হত্যা করে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। তখন কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় নিহতের শাশুড়ী জাহানুর বেগম সাথে ছিলেন।
নিহতের শাশুড়ী জাহানুর বেগম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে খাওয়ার পর ছেলে ও ছেলের বউ তাদের নিজেদের রুমে শুয়ে পড়েছে আর ৭ মাস বয়সী নাতি মাহিমাকে নিয়ে তার ছোট ছেলে বাহিরে চলে যায়। কিছুক্ষণ পরে শিশু মাহিমা কান্না শুরু করলে তাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য মায়ের কাছে নিয়ে আসে। এ সময় দেবরের ডাকে সাড়া না দেওয়ায় পরিবারের অন্যদের ডাক দেয়। তাঁরা এসে শিশুটির মা কবিতাকে অচেতন অবস্থায় পেয়ে শিশুটির বাবা মিরাজকে ডাকে মিরাজ তখন ঘরের বাইরে ছিল। সে ঘরে এসে অচেতন স্ত্রী কবিতাকে মা জাহানুরের সাহায্য ও সাথে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে সন্ধ্যার। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃতঘোসনা করে।
এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তা মো: আবুল খায়ের মাহমুদ রাসেল জানান, কবিতাকে মৃত অবস্থায় মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছিল।
রাজাপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, নিহতের পিতা ইউনুস ভূইয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে একটি হত্যা মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া ওই নারীর মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে ও ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আসলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলেও জানান তিনি।