রবিউল ইসলাম মিটু, যশোর : যশোর সদর আসনের এমপি কাজী নাবিল আহমেদের নির্দেশে সদর আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহিতকুমার নাথ দলীয় প্রতিপক্ষ হত্যা মিশনে নেমেছেন বলে দাবি করেছেন যশোর জেলা ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার সকালে প্রেসক্লাব সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছালছাবিল আহমেদ জিসান। এসময় জেলা শাখার সভাপতি রওশন আলী শাহী, সাবেক সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, ‘যশোর সদর আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে কাজী নাবিল আহমেদ নিজ দলের প্রতিপক্ষদের দমনে হত্যামিশনে নেমে পড়েন। তার নির্দেশেই সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিতকুমার নাথ এসব হত্যাকা- ঘটাচ্ছেন।’
ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, ‘দলের সভানেত্রী যখন আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সংগঠনের মধ্যে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ীরা ঠাঁই না পায়, সে ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দিচ্ছেন, তখন এমপি নাবিল আহমেদ নিজের শক্তিমত্তা প্রদর্শনের জন্য দলে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের স্থান করে দিচ্ছেন। শহরের চিহ্নিত সন্ত্রাসী মেহবুব রহমান ম্যানসেলকে দলে ভিড়িয়ে একের পর এক হত্যাকা- ঘটাচ্ছেন তিনি। সর্বশেষ কাজী নাবিল আহমেদ ও মোহিত নাথের ইন্ধনে ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মনোয়ার হোসেন ইমনকে হত্যা করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, মোহিত নাথের মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করায় ইমনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আর এ হত্যাকা-ের পুরো পরিকল্পনা হয় মোহিত নাথের বাসায় বসে। এখন এমপি কাজী নাবিল আহমেদ হত্যাকান্ডকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে প্রশাসনের ওপর হস্তক্ষেপ করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, ‘২০১৪ সালের পর থেকে এমপি নাবিল আহমেদের নির্দেশনায় মোহিত নাথ দলের প্রতিপক্ষ নেতাকর্মীদের হত্যা করে আসছেন। এর আগে যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুর রশিদ, যশোর পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান, এক নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ঝাউদিয়া আওয়ামী লীগ কর্মী শহিদুল ও এজাজ আহমেদসহ আরো বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এসব হত্যাকা-ের সাথে মোহিত নাথ ও তার পালিত সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য ম্যানসেল, রাকিব, ডিম রিপন, পেচো, শিশির, শুভ, নয়ন, পিচ্চি ইয়াসিন, মোমিন, রবিউলসহ অন্যান্য সন্ত্রাসীরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মনোয়ার হোসেন ইমন হত্যায় জড়িতদের আটক ও শাস্তি দাবিতে তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ৪ নভেম্বর জেলা ছাত্রলীগ, ৫ নভেম্বর সব উপজেলা শাখা ও ৬ নভেম্বর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মানববন্ধন করা হবে।
প্রসঙ্গত.গত সোমবার রাত ১১টার দিকে যশোর শহরের বেজপাড়া গুলগোল্লার মোড় এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে ছাত্রলীগের যশোর জেলা শাখার সাবেক সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন ইমন খুন হন। হত্যাকা-ের পর বিচারের দাবিতে যশোর জেলা আওয়ামীলীগের বিবদমান দুই গ্রুপ এমপি কাজী নাবিল আহমেদ পক্ষ ও দলের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার পক্ষ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করছে। শাহীন চাকলাদার পক্ষ এ সংবাদ সম্মেলন করেন।