ডুমুরিয়াঃ ডুমুরিয়ায় মোটর সাইকেল চুরির ১৫দিনের মাথায় ৫টি চোরাই মোটর সাইকেল ও চুরির সরঞ্জামসহ আন্তঃ জেলা চোর চক্রের ২সদস্য পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। ৩দিনের একটানা অভিযান শেষে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ ও খুলনার জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে পুলিশ তাদের আটক করতে সক্ষম হয়। যা নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ডুমুরিয়া থানা পুলিশের আয়োজনে এক প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
প্রেস ব্রিফিং-এ ডুমুরিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেখ কনি মিয়া বিপিএম জানান, বিগত ২৬ জুলাই দুপুরে ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদ চত্ত্বর এলাকা থেকে একটি আরটিআর মোটর সাইকেল চুরি হয়। এ ঘটনার এর একদিন পরে অর্থাৎ ২৭ জুলাই বিকেলের দিকে উপজেলা মহিলা কলেজের পাশ থেকে আরও একটি মোটর সাইকেল চুরি হয়। পর পর দুই-দুইটি চুরির ঘটনা নিয়ে ডুমুরিয়া থানা পুলিশসহ জেলা পুলিশের উর্দ্ধতন অফিসারবৃন্দ তৎপর হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ মাহাবুব হাসান বিপিএম এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বি-সার্কেল মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের দিক-নির্দেশনামতে জোর তৎপরতা শুরু হয়। অভিযানে মুলতঃ তিনটি জেলা তথা খুলনা সাতক্ষীরা ও যশোর জেলাকে টার্গেট করা হয়। এই অঞ্চলে গাড়ি বিক্রির সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি বা তাদের নিকট জন’রা কে কোন অবস্থানে আছে এটা নিয়েই সোর্সদের কাজে লাগানো হয়। একই সাথে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে মোবাইল ট্যাকিং করে সিডিআর’র মাধ্যমে যশোর, খুলনা ও সাতক্ষীরার কয়েকটি স্পট চিহ্নিত হয়। এক পর্যায়ে যথেষ্ট ক্লু ও তথ্য আমাদের হাতে আসে। এরপরেই গত ৯আগস্ট থেকে শুরু হয় অভিযান। আর এ অভিযানে ৫টি চোরাই মোটর সাইকেল ও চুরির সরঞ্জামসহ আন্তঃ জেলা চোর চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে। আটক দু’জনের মধ্যে একজন হল সালাউদ্দিন (৩১)। সে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কাকশিয়ালি এলাকার মৃত আহছানের ছেলে। অপর জন হল মোঃ সম্রাট ইসলাম শান্ত (১৯)। সে খুলনার জিরো পয়েন্ট এলাকার কৃষ্ণনগর বাইতুল আকছা গলিতে ভাড়াবাড়িতে বসবাস করে। তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ উপজেলার সোনাখালী এলাকায়। তার বাবার নাম মোঃ বাহাদুর শেখ। তাদের শিকারোক্তি মতে আমরা ৫টি গাড়ি উদ্ধার করেছি। যার মধ্যে একটি ১৫০সিসি পালসার, একটি ১২৫সিসি ডিসকভার, একটি হিরো স্পালেন্ডার প্লাস, একটি ১২৫সিসি এফজেড ও একটি ১৬০ সিসি আরটিআর মোটর সাইকেল রয়েছে। এছাড়াও সিসি ক্যামেরা ফুটেজে সনাক্ত করা তিনটি ক্যাপ(টুপি) ও তাদের ব্যবহৃত ৩টি মাষ্টার চাবি উদ্ধার করা হয়।
ব্রিফিং-এ তিনি আরও জানান, মুলতঃ মোটর সাইকেল চুরির সাথে খুলনা সাতক্ষীরা ও যশোর জেলায় ৩০/৩৫টি চক্র বা চেইন কাজ করে। এরমধ্যে আমরা সবেমাত্র একটি গ্যাং তালু বন্দি করতে সক্ষম হয়েছি। ডুমুরিয়া থেকে চুরি যাওয়া দুইটি গাড়ীর মধ্যে একটি এদের মাধ্যমে উদ্ধার হয়েছে। গাড়িটির মালিক সাংবাদিক মোক্তার হোসেন। তবে গাড়িটি ঢাকা হয়ে চিটাগাং অঞ্চলে চলে গিয়েছিলো। আমরা আটক আসামীদের মাধ্যমে তা ফিরিয়ে আনতে পেরেছি।
এ সময় তিনি আরও জানান, মোটর সাইকেল চুরির সাথে অনেক কিছু মিশে আছে। যা এখুনি বিস্তারিত ভাবে জানানো যাচ্ছে না। আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে অত্যন্ত সর্তকতার সাথে কাজ করছি। তবে চুরির ঘটনা বর্ণনা করে তিনি বলেন- প্রাথমিক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, চুরির সাথে মুলতঃ ওরা ২/৩জন ফিল্ডে আসে। পছন্দমত জায়গায় এসে প্রথমে গাড়ী চয়েজ করে। এরপর বাইকের মালিকের গতিবিধি ফ্লো করার এক পর্যায়ে সুযোগ বুঝেই তা নিয়ে চম্পট দেয়। তবে ওদের কাছে এমন একটি চাবি আছে যা দিয়ে অধিকাংশ মোটর সাইকেল ওপেন করা সম্ভব। ওদের ভাষায় ওই চাবিকে মাষ্টার কি নামে পরিচিত।
বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহাবুব হাসান বিপিএম জানান, এটা আমাদের একটা সফলতা। এছাড়া চোর চক্রের বাকি কাজ সম্পন্ন করতে সময় সাপেক্ষ ব্যাপার মাত্র। আমরা সকল কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি।