শরণখোলা : শরণখোলার লোকালয়ে বাঘের খোঁজে বনবিভাগ শনিবার বনসংলগ্ন চার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গ্রামের বাগান ঝোপঝাড়ে তল্লাশী অভিযান চালিয়েছে। গ্রামে এখন বাঘ নেই বনবিভাগ এমন ঘোষণা দিলেও অনেক জায়গায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখায় আতংক কাটেনি গ্রামবাসীদের।
বনসুরক্ষায় নিয়োজিত সিপিজি (কমিউনিটি পেট্রোল গ্রুপ) সহসভাপতি মো: শহীদুল ইসলাম সাচ্চু বলেন, গ্রামে বাঘের খোঁজে শনিবার সকালে বনরক্ষী, সিপিজি, ভিটিআরটি সদস্যরা যৌথভাবে গ্রামবাসীদের সহায়তায় সোনাতলা, পানিরঘাট ও ঢালিরঘোপ এলাকায় তল্লাশী অভিযান চালিয়েছে। বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গেলেও বাঘের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। বনসংলগ্ন ভোলা নদী ভরাট হওয়ায় ভাটার সময় নদীতে পানি থাকেনা বললেই চলে। এ অবস্থায় প্রতিনিয়ত শুকর, বানর, হরিণ, বাঘ, সাপসহ বিভিন্ন বণ্যপ্রাণী অনায়াসেই গ্রামে চলে আসে। বিশেষ করে বণ্যশুকরের উপদ্রবে গ্রামবাসী অতিষ্ঠ। শুকর গ্রামের কৃষিখেত নষ্ট করছে জানালেন সাচ্চু। সোনাতলা গ্রামের গৃহবধু মারুফা বেগম, বিলকিস বেগম, কৃষক হেমায়েত উদ্দিন ও হাবিব আকন বলেন, আমরা সর্বদা বাঘ আতংকে থাকি। বাঘের ভয়ে রাতের বেলা ঘর থেকে বের হইনা। বণ্যশুকর কলা কচুসহ বিভিন্ন সব্জিখেত নষ্ট করে থাকে বলে জানালেন ঐ কৃষকরা। গত ৫ জানুয়ারী সুন্দরবনের দাসেরভারানী এলাকার বন থেকে বাঘ এসে ভোলা নদীর চরে ঘাস খাওয়া অবস্থায় দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের সোহরাফ ফরাজীর একটি ছাগল ধরে নিয়ে যায়। ধানসাগর টগড়া বাড়ী এলাকার গ্রাম পুলিশ তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, বনসংলগ্ন বনের ধারে প্রতি রাতে বাঘের হুংকারে গ্রামবাসী ভয়ে রাত কাটায়। নদী ভরে যাওয়ায় যে কোন সময়ে বাঘ গ্রামে চলে আসতে পারে বলে ঐ গ্রামপুলিশ জানিয়েছেন।
গত বুধবার দিবাগত রাতের কোন এক সময় সুন্দরবন থেকে দুটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার ভোলা নদী পাড় হয়ে সোনাতলা গ্রামের আবু ভদ্রের বাড়ির দক্ষিণ পাশ দিয়ে গ্রামে ঢুকে পড়ে।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা ফরেস্ট রেঞ্জার সুফল রায় বলেন, লোকালয়ে বাঘের খেঁজে শনিবার দিনব্যপী বনসংলগ্ন চার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তল্লাশী হয়েছে। বাঘের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বাঘ সুন্দরবনে ফিরে গেছে। গ্রামাবাসীদের নিরাপত্তায় বনরক্ষীরা সিপিজি ও ভিটিআরটি সদস্যদের নিয়ে টহল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে ঐ স্টেশন কর্মকর্তা জানান।