মোংলা বন্দরে অর্থনীতির পালে নতুন হাওয়া     

প্রকাশঃ ২০২৩-০১-১৯ - ১২:১৯

মোংলা : পদ্না সেতু চালু হওয়ায় পাল্টে গেছে মোংলা বন্দরের সার্বিক চিত্র। অর্থনীতির পালে লেগেছে নতুন হাওয়া। অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি সুবিধা পাচ্ছেন এ বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা। ২০০৯-১০ অর্থবছরে কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ১৬ দশমিক ৪৮ লাখ টন। কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ২০ হাজার ৬৫১টিইইউএস। আর গাড়ি এসেছে তিন হাজার ৩১৯টি। ধারাবাহিকভাবে প্রতি অর্থবছরে কার্গো, কন্টেইনার ও গাড়ি আমদানি বাড়তে বাড়তে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১১৩ দশমিক ৯২ লাখ টন কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে। কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩২ হাজার ২৬৯ টিইইউএস। আর গাড়ি এসেছে সর্বোচ্চ ২১ হাজার ৪৮৪ টি। মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী এস এম মোস্তাক মিঠু জানান, অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় এ বন্দর ব্যবহারে সর্বোচ্চ সেবা পাচ্ছেন। এছাড়া বন্দরে আধুনিক ব্যবস্থাপনা এবং উন্নত যন্ত্রপাতি আমদানি হওয়ায় পণ্য খালাসে তাদের অর্থ ও সময় দুটোই অনেক কমেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলেন, উন্নত হিন্টারল্যান্ড যোগাযোগ ও অবকাঠামো সক্ষমতার সুযোগে পণ্য আমদানি-রফতানিতে মোংলা বন্দরের ওপর ব্যবসায়ীদের নির্ভরতা দ্রুত বাড়ছে। এছাড়া অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় এ বন্দরে বিদেশি জাহাজ বেশি ভিড়ছে। ভারতের পাশাপাশি নেপাল ও ভূটান নিয়মিত এ বন্দর ব্যবহার করলে এ সংখ্যা আরো বাড়বে। বর্ধিত এ সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে ২০৪১ সাল নাগাদ কার্গো ও কন্টেইনার হ্যান্ডেলিংয়ের যে প্রাক্কলন, তা বাস্তবায়নে মোংলা বন্দর ভূমিকা রাখতে পারবে বলে জানান তিনি। সঠিক পরিকল্পনা ও বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্তের ফলে দক্ষতা বাড়ানোয় এসব কার্যক্রম সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন মোংলা বন্দর কর্র্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মূসা। তিনি বলেন, পশুর চ্যানেল থেকে জেটি পর্যন্ত ড্রেজিং করে খনন কাজের পর বন্দর জেটিতে এখন সাড়ে ৯ মিটার থেকে ১০ মিটার ড্রাফটের (গভীরতা) জাহাজ ভিড়তে পারে। এতে বন্দরে প্রতি বছর অতিরিক্ত ১০০ টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করা হচ্ছে। এছাড়া অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হচ্ছে ২৪০ কোটি টাকার মতো। একসঙ্গে ৩০ টি জাহাজের বার্থিং দিতে সক্ষম হচ্ছে মোংলা বন্দর। এর মধ্যে বন্দরের নিজস্ব জেটিতে পাঁচটি, মুরিং বরায় তিনটি, নোঙরে ২২ টি এবং বেসরকারি কোম্পানীর জেটিতে সাতটি জাহাজের বার্থিং একই সময়ে সম্ভব হচ্ছে। সব মিলিয়ে মোংলা বন্দর এখন সব ধরনের আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত আধুনিক এক সমুদ্র বন্দরের নাম। বন্দর চেয়ারম্যান আরো বলেন, পদ্মা সেতুর সৌভাগ্যে মোংলা বন্দর থেকে এখন গার্মেন্টস পণ্য রফতানি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের জন্য শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইন্টারন্যাশনাল শিপ অ্যান্ড পোর্ট ফ্যাসিলিটি সিকিইউরিটি (আইএসপিএস) কোড চালু করা হয়েছে। এছাড়া অত্যাধুনিক হ্যান্ডলিং সরঞ্জামের সুবাদে স্বল্পতম সময়ে পণ্য লোড-আনলোড সম্ভব হচ্ছে। কার্গো ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা আরো বাড়তে ৪৩৩ কোটি ৫২ লাখ টাকার একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে বলে জানান বন্দর চেয়ারম্যান।