দেশের উন্নয়ন চাইলে আইন অনুযায়ী রাজস্ব দিতে হবে : কেসিসি মেয়র

প্রকাশঃ ২০২৩-০১-২৬ - ১৭:১০

তথ্যবিবরণী : আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস-২০২৩ উপলক্ষ্যে সেমিনার আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে খুলনা নগরীর হোটেল সিটি ইন-এ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। কাস্টমস দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের লালন: কাস্টমসে জ্ঞানচর্চার সংস্কৃতি ও উত্তম পেশাদারিত্বের বিকাশ’।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সিটি মেয়র বলেন, দেশের উন্নয়ন চাইলে আইন অনুযায়ী রাজস্ব দিতে হবে। একই সাথে রাষ্ট্রের জন্য রাজস্ব আদায়ের কাজে নিয়োজিতদের ব্যবসায়ী ও করদাতাবান্ধব হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। এধারা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালে দেশ উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হবে। তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পরে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ গড়ার কাজে হাত দেন। তিনি দক্ষ ও গতিশীল রাজস্ব প্রশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৭২ সালে রাজস্ব বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেন। এখন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন অনেক। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির ফলে বর্তমানে আমাদের জাতীয় বাজেট তৈরির ক্ষেত্রে পরনির্ভরশীলতা অনেকটাই কমেছে। পদ্মা সেতু ও রূপসা সেতু নির্মাণ এবং খুলনা-মোংলা মহা সড়কের উন্নয়নের ফলে মোংলা বন্দর আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশের মোট রাজস্ব আয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অংশ এখন প্রায় ৮৫ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তিন লাখ এক হাজার ছয়শত ৩৪ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করে, যার মধ্যে কাস্টমস বিভাগ ৮৯ হাজার চারশত ২৪ কোটি টাকা আদায় করেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর-রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তিন লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে কাস্টমস এর রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে এক লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা। অনুষ্ঠানে আরো জানানো হয়, আমদানিকৃত পণ্য দ্রুত খালাসের জন্য দেশে কাস্টমস ব্যবস্থাকে অনেকাংশেই অটোমেটেড করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন আমদানি ও রপ্তানির জন্য ১৭ হাজারের বেশি বিল অব এন্ট্রি কাস্টমস এর নিকট দাখিল ও নিষ্পত্তি হয়ে থাকে। দ্রুত সময়ে সঠিকভাবে পণ্যের চালান স্ক্যানিং ও ইমেজ বিশ্লেষনের জন্য বিভিন্ন কাস্টম হাউস ও এলসি স্টেশনে বর্তমানে ১১টি কন্টেইনার স্ক্যানার, ২২টি ব্যাগেজ স্ক্যানার এবং একটি হিউম্যান বডি স্ক্যানার কার্যকর রয়েছে। চোরাচালান প্রতিরোধ অভিযানের অংশ হিসেবে ২০২০-২১ অর্থবছরে কাস্টমস বিমান বন্দর ও স্থলবন্দর এলাকা থেকে অবৈধভাবে আনা ৫১২ কেজি স্বর্ণ আটক করতে সক্ষম হয়েছে।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কাস্টমস: রপ্তানি, বন্ড ও আইটি) হোসেন আহমদ, খুলনা কর অঞ্চলের কমিশনার মোঃ সিরাজুল করিম, খুলনা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার মুহম্মদ জাকির হোসেন এবং বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডস্ট্রি এর সভাপতি শেখ মোঃ লিয়াকত হোসেন। মোংলা কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে স্বাগত বক্তৃতা করেন যুগ্ম কমিশনার মুহাম্মদ মাহফুজ আহমদ। কী-নোট পেপার উপস্থাপন করেন খুলনা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিল কমিশনারেটের কমিশনার ড. নাহিদা ফরিদী। সেমিনারের সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, ব্যবসায়ি, আমদানি-রপ্তানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্টসহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। কাস্টমসের খুলনা-মোংলা আঞ্চলিক কমিটি এ সেমিনারের আয়োজন করে।