গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক ছাত্রীকে বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা ওই আইনজীবীর বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। গত শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শহরের পাঁচুড়িয়া এলাকার সামচুল হক রোডে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই দিন গভীর রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. মোরাদ হোসেন বাদী হয়ে অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেনের (৪৫) নামে গোপালগঞ্জ সদর থানায় ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ এনে একটি এজাহার দায়ের করেছেন। এ ঘটনার পর থেকে ওই আইনজীবী পলাতক রয়েছেন। গতকাল শনিবার তার মোবাইল ফোনে কল করলে বন্ধ পাওয়া যায়। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তিন/চার মাস আগে পাঁচুড়িয়া এলাকায় বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়ানোর কথা বলে অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেনের সঙ্গে ওই ছাত্রীর পরিচয় হয়, সেসময় তাদের মধ্যে মোবাইল নম্বর দেওয়া নেওয়া হয়। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে মোবাইলে কল করে বাচ্চাদের পড়ানোর কথা বলে ওই ছাত্রীকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সামনে আসতে বলেন আলমগীর হোসেন। ওই ছাত্রী হাসপাতালের সামনে গিয়ে আলমগীরকে ফোন দিলে তিনি বাসায় যেতে বলেন। তখন ওই ছাত্রী তার বাসায় যান। সেসময় পরিবারের অন্য কোনো সদস্য ছিল না। তখন তিনি আলাপ আলোচনার একপর্যায়ে ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেন এবং শরীরের পোশাক ছিঁড়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। সেসময় ওই ছাত্রীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করেন। ডেপুটি রেজিস্ট্রার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, বিষয়টি ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিতভাবে জানান। তখন রেজিস্ট্রার প্রোক্টারিয়াল বডির সব সদস্য ও ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ওই আইনজীবীর নামে থানায় অভিযোগ দায়েরের সিদ্ধান্ত নেন। অভিযুক্ত আইনজীবী আলমগীর হোসেন গতকাল রাতে এ ঘটনা অস্বীকার করে জানিয়েছিলেন, তাকে ব্লাকমেইল করতে ওই ছাত্রী এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা তার বাসায় হামলা করে ভাঙচুর চালিয়েছে। তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় তার স্ত্রীকে দিয়ে ওই ছাত্রী ও ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িতদের নামে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাবেদ মাসুদ জানিয়েছেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। প্রসঙ্গত, আলমগীর হোসেন গোপালগঞ্জ জেলা জজ কোর্টের একজন আইনজীবী। এছাড়া তিনি গোপালগঞ্জ শহরতলীর ঘোনাপাড়ার একটি রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড পার্টি সেন্টারের পরিচালক বলে জানা গেছে।