খুলনা : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর ২১শে ফেব্রুয়ারীর ঠিক একদিন আগেই কানায় কানায় ভরে ওঠে খুলনার বই মেলা চত্বর। বিকেল থেকেই লোকসমাগম শুরু হয়। তবে বই কেনার চেয়ে দর্শনার্থীর ভীড় উল্লেখযোগ্য। মেলায় বই বিক্রেতাদের অনেকেই ক্ষোভে দু:খে বললেন ‘বইমেলা এখন বাণিজ্য মেলায় পরিণত হয়েছে’।
ঠিক বিকেল পাঁচটার পরেই গণগ্রন্থাগারের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই দেখা যায় উৎসুক যুবক-যুবতীর সেল্পি তোলার দৃশ্য। তারা যেন নতুন সাজে সজ্জিত হয়ে বাণিজ্যমেলায় ঘুরতে এসেছে। তাদের মধ্যে বই কেনার কোন প্রবনতা লক্ষ্য করা যায়নি। একটু ডান দিকে যেতেই কয়েকটি স্টলের সামনে দু’চারজন ক্রেতাকে বই হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করতে দেখা যায়। দু’একটা বইও তারা কিনছেন।
মেলায় বই ক্রয়ে আসা বটিয়াঘাটা সরকারি মহাবিদ্যালয়ের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র হাসিন সাহাদ নিশান জানান, তিনি প্রথম মেলায় বই কিনতে এসেছেন। আলফা বুক হাউজের মনোজ কুমার দে তাকে বিভিন্ন লেখকের বই দেখাচ্ছেন। তবে তার পছন্দ মোশতাক আহমেদের লেখা বই। তিনি জানান, লেখকের ‘ স্বপ্ন স্বর্গ’, ‘ছায়া আত্মা’, ‘মন জোছনার কান্না’, ‘জোছনা রাতের জোনাকী’, ‘মায়া স্বগর্¦’, ‘ লালু চোর’ বই গুলো তার দৃষ্টি কেড়েছে। তাই এ গুলোসহ মোট সাতটি বই কিনেছেন।
স্টল ঘুরে দেখার সময় বিক্রেতাদের অনেকেই বলেন, মেলায় শুধু দর্শনার্থীর ভিড়। বই কেনার মানুষ খুবই কম। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ হাজার টাকার বই বিক্রি করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। বইয়ের চেয়ে প্রসাধনী এবং খাবারের দোকানে বিক্রি হয় বেশী। দর্শনার্থীরা মেলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঘুরে খাবারের দোকানে যেয়ে বসে। তারা খেয়ে আবার ঘুরতে শুরু করে। পরে রাত হলে মেলে থেকে বেরিয়ে যায়।
মেলায় স্টল দিয়েছেন নতুন লেখক এবং কবি রূপা বাড়ৈ। তিনি ক্ষোভ এবং দুখের সাথে বলেন, বই মেলা যেন বাণিজ্যিক মেলায় পরিণত হয়েছে। যে দিকে প্রসাধনী এবং খাবারের দোকান সেদিকেই মানুষের ভিড়। বই মেলায় বইয়ের স্টল ছাড়া অন্য কিছু থাকলে কোন দিন বিক্রি বাড়বে না। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষকে এসব জানিয়েও কোন লাভ নেই। কোন ফল পাওয়া যায় না।