বাগেরহাট অফিস : দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টায় ট্রেইনি পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নিয়োগ প্রত্যাশী ও অভিভাবকদের সম্মুখে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক এই ফলাফল ঘোষণা করেন। একে-একে প্রাথমিকভাবে ট্রেইনি পুলিশ কনস্টেবল পদের জন্য নির্বাচিত ৪৮ জন ছেলে ও ৮জন মেয়েসহ মোট ৫৬ জনের নাম ঘোষণা করেন তিনি। ঘুষ সুপারিশ ও হয়রানি ছাড়া মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা। ভবিষ্যতে দেশের জন্য কাজ করার অঙ্গিকার করেন নতুন চাকুরী প্রাপ্তরা।
নতুন চাকুরী পাওয়া মোহাম্মদ হাসান শৈকত বলেন, শুনেছি সরকারি চাকুরীর জন্য অনেক টাকা পয়সা লাগে। অনলাইনে ১২০ টাকা ফী দিয়ে আবেদন করেছিলাম, আর কোন টাকা লাগেনি। কাউকে দিয়ে সুপারিশও করাতে হয়নি।
সম্মিলিত মেধা তালিকায় প্রথম হওয়া চিতলমারী উপজেলা সদরের বাসিন্দা জুই আক্তার বলেন, ভাল লেখাপড়া করলে যে চাকুরী পাওয়া যায় তার প্রমান পেলাম। আমার কাছে মনে হয়েছে অনেক স্বচ্ছভাবে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এভাবে চললে মেধাবীরা আসতে পারবে সরকারি চাকুরীতে।
শুধু জুই আর শৈকত না, চাকুরী প্রাপ্ত প্রত্যেক তরুণ-তরুণীর অভিব্যক্তি একই রকম।
অন্যদিকে চাকুরী প্রাপ্তিতে বিভিন্ন কোটাকে তেলে মাথায় তেল দেওয়ার পদ্ধতি দাবি করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নতুন চাকুরী পাওয়া এক তরুণ বলেন, কঠিন প্রতিযোগিতাপূর্ণ নানাধাপ ও পরীক্ষায় পাশ করে আমরা মৌখিক পরীক্ষা পর্যন্ত পৌছাই। কিন্তু পোশ্য কোঠা, মুক্তিযোদ্ধা কোঠা, আনছার ভিডিবি কোঠাসহ নানা কারণে অনেক কম মেধাবীর চাকুরী হয়ে যাচ্ছে। আসল মেধাবীরা বাদ পড়ে যাচ্ছেন। এখনই সকল চাকুরীর ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি বাতিল করা প্রয়োজন। না হলে চাকুরীজীবীর সন্তান চাকুরীজীবী হব, আর কৃষকের মেধাবী ছেলে-মেয়ে বেকার থাকবে।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক বলেন, আমরা খুবই স্বচ্ছতার সাথে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। কোন প্রকার অসাধুপায় অবলম্বনের কোন সুযোগ দেওয়া হয়নি কাউকে। কোন রাজনৈতিক সুপারিশ বা চাপ ছিল না। মেধাবী এবং শারীরিক যোগ্যতা সম্পন্ন তরুণ-তরুনীদের আমরা চাকুরী দিয়েছি। আশাকরি নতুন নিয়োগ প্রাপ্তরা পুলিশ বিভাগ ও দেশের সম্মান বৃদ্ধি করবে।
এবারের নিয়োগ পরীক্ষায় বাগেরহাট জেলার ৫৬টি পদের বিপরীতে এসএসসি পাশ ৪ হাজারের অধিক তরুণ-তরুনী অনলাইনে আবেদন করেছিল। বয়স, ফলাফল ও সঠিকভাবে আবেদন না করায় স্বয়ংক্রীয়ভাবে ২ হাজারের বেশি তরুণ তরুণীর আবেদন বাতিল হয়ে যায়। ১ হাজার ৯৩৫ শারীরিক মাপ ও শারীরিক কসরতের সুযোগ পান। এদের মধ্যে ৫৩৫ জন লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হন। লিখিত পরীক্ষায় পাশ করেন মাত্র ১২১জন। এদের মধ্যে মৌখিক পরীক্ষা শেষে ৫৬ জনকে চুড়ান্তভাবে ট্রেইনি কনস্টেবল পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়।