ক্রীড়া প্রতিবেদক : ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর দাপটের সঙ্গেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। সুযোগ ছিল ইংল্যান্ডের পর আয়ারল্যান্ডকেও টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দেওয়ার। তবে সেই সুযোগ হাতছাড়া করেছে সাকিবের দল। বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতায় সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে সান্ত্বনার জয় পেয়েছে সফরকারী আয়ারল্যান্ড।
শুক্রবার তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে আয়ারল্যান্ড। আইরিশদের জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ শেষ হলো ২-১ ব্যবধানে। প্রথম দুটি ম্যাচ জিতে সিরিজ ঘরেই রাখল সাকিব আল হাসানের দল।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১২৪ রানের বেশি তুলতে পারেনি স্বাগতিক বাংলাদেশ। জবাবে ৩ উইকেট হারিয়ে ১২৬ রান করে জয় তুলে নেয় আয়ারল্যান্ড।
১২৪ রানের সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্নক খেলতে থাকে আয়ারল্যান্ড। যদিও ওপেনিং জুটি খুব একটা বড় হয়নি। দলীয় ১৭ রানের মাথায় তাসকিনের দুর্দান্ত ইয়র্কারে ব্যক্তিগত ৭ রানে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরে রস অ্যাডায়ার। তার বিদায়ের পর লোরকান ট্র্যাকারকে নিয়ে জুটি গড়ে তোলেন অধিনায়ক স্টার্লিং। ২৪ রানের এই জুটি থামে ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে, শরিফুলের বলে। দলীয় ৪১ রানে উইকেটের পেছনে লিটনকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ট্র্যাকার।
২ উইকেট হারানো আয়ারল্যান্ডকে চেপে ধরার চেষ্টা করে করে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশের সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে থাকে স্টার্লিং। ৩১ বলে তুলে পূরণ করে অর্ধশতক। এরপর দলীয় ১০৯ রানের মাথায় তৃতীয় সাফল্যের দেখা পায় বাংলাদেশ। অভিষিক্ত রিশাদের বলে ৭৭ রান করে শান্তকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন স্টার্লিং। এরপর হ্যারি টেক্টরকে নিয়ে বাকি কাজ সারতে খুব বেশি সমস্যা হয়নি ক্যাম্ফারের। ৩৬ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে আয়ারল্যান্ড। আয়ারল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৭ রান করেন স্টার্লিং। বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন,শরিফুল ও রিশাদ ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং নেমে আগের দুই ম্যাচের মতো সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ। বিপর্যয়ের শুরুটা হয় দ্বিতীয় ওভার থেকেই।
দ্বিতীয় ওভারে মার্ক অ্যাডায়ারের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল মোকাবিলায় ডিপ পয়েন্ট অঞ্চলে ক্যাচ তুলে দেন লিটন দাস। সেখানে থাকা জর্জ ডকরেল ক্যাচ লুফে নিতে ভুল করেননি। ৪ বলে ৫ রান করে থেমে যায় ছন্দে থাকা লিটনের ইনিংস।
ওয়ানডাউনে নামা নাজমুল হোসেন শান্তও পারেননি থিতু হতে। পরের ওভারেই বিদায় নেন তিনি। হ্যারি টেক্টরের স্পিনের ফাঁদে পা দিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ তুলে দিয়ে ৪ রানে ফেরেন শান্ত।
দলীয় ১৮ রানে দুই টপ অর্ডারকে হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেই বিপদের মাঝেই বিদায় নেন রনি তালুকদার। ১৪ রানে ভাঙে তাঁর প্রতিরোধ। এরপর উইকেটে শুধু হতাশাই দেখেছে বাংলাদেশ। আইরিশদের বোলিং দাপটের সামনে একে একে উইকেট বিলিয়েছেন সাকিব-তাওহিদরা। অভিষিক্ত রিশাদ হোসেনও পারেননি আস্থার প্রতিদান দিতে। প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা রিশাদ থেমেছেন ৭ বলে ৮ রান করে। একের পর উইকেট হারিয়ে বড় সংগ্রহ করতে পারেনি বাংলাদেশ। শামীম হোসেনের ব্যাটে চড়ে শেষ পর্যন্ত অল্প রানেই থেমে যায় লাল-সবুজের দল। শামীম উইকেটে থিতু হওয়াতে কোনো মতে দলীয় রান ১০০ ছাড়াতে পেরেছে বাংলাদেশ। নয়তো আরও হতাশায় ডুবতে হতো লাল-সবুজ দলের। শেষশেষ সব উইকেট হারিয়ে ১২৪ রানের বেশি করতে পারেনি সাকিব-লিটনরা।