খুলনা : মহানগরী খুলনার পশ্চিম টুটপাড়া এলাকায় কেডিএ’র অনুমোদন ছাড়া বাড়ি নির্মান করেছেন একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী। কেডিএ এ নির্মানাধীন কাজ বন্ধ করে দেয়। সালেহ পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে স্থানীয় এলাকাবাসী মানববন্ধনও করেছেন। সর্বশেষ কেডিএ কর্তৃপক্ষ বাড়ির অবৈধ অংশ ভেঙ্গে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তা এখন পর্যন্ত কার্যকর করে নি সালেহ পাটোয়ারী। উপরন্তু প্রতিবেশীকে প্রভাবশালী মহল দিয়ে চাপ প্রয়োগ এবং দেখে নেওয়ার হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপ-সহকারী প্রকৌশলীর নাম সালেহ পাটোয়ারী। তিনি বর্তমানে খুলনা সিটি কর্পোরেশনে উপ-সহকারী প্রকেীশলী পদে কর্মরত রয়েছেন। অভিযোগকারীর নাম শেখ আজাদ আলী। শেখ আজাদ আলী অবৈধভাবে বাড়ির কাজ নির্মান না করতে অনুরোধ করেছেন সালেহ পাটোয়ারীকে। কিন্তু সালেহ পাটোয়ারী তা না শুনলে এক পর্যায়ে শেখ আজাদ আলী কেডিএ’র কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। ফলশ্রুতিতে, কেডিএ নির্মানাধীন বাড়ির অবৈধ অংশের একাংশ ভেঙ্গে বাকিটুকু নিজ দায়িত্বে ভেঙ্গে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সালেহ পাটোয়ারী কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে প্রভাবশালী মহল দিয়ে সুপারিশ এবং আর্থিক প্রলোভন দেন। এর পূর্বে, ৬ই মে সালেহ পাটোয়ারীর বেপরোয়াভাব এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেন। অভিযোগকারী শেখ আজাদ আলীর ছেলেকে মাদকদ্রব্য দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন এই সালেহ পাটোয়ারী। অভিযোগসূত্রে, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের উপ-সহকারী প্রকেীশলী সালেহ পাটোয়ারী খুলনার পশ্চিম টুটপাড়ায় বহুতল ভবন নির্মানের কাজ শুরু করেন। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমান জায়গা না ছাড়ার দরুন প্রতিবেশী শেখ আজাদ আলী নানাবিধ অসুবিধার কথা তাকে বুঝিয়ে বলেন। এজন্য তাকে অনুরোধ জানান জায়গা ছেড়ে বাড়ি করার জন্য। কিন্তু সালেহ পাটোয়ারী তা না শুনে আজাদ আলীর ছেলেকে মাদকদ্রব্য দিয়ে ফাঁসিয়ে দিবেন বলে হুমকি দেন। এরপর এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের পরামর্শে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে কেডিএ অভিযোগের সত্যতা পেয়ে নির্মানাধীন বাড়ির কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয় সালেহ পাটোয়ারী। এরপরও বাড়ির কাজ বন্ধ না করার কারনে কেডিএ কর্তৃপক্ষ ম্যাজিষ্ট্রেট উপস্থিতিতে বাড়ির অবৈধ অংশের একাংশ ভেঙ্গে রেড মার্কিং করে বাকি অংশ ভাঙ্গার নির্দেশ দেয়। নির্দেশের এক মাস পার হলেও অবৈধ অংশ না ভেঙ্গে উল্টো প্রভাবশালী মহল কর্তৃক চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন আবু সালেহ পাটোয়ারী। আর্থিক সুবিধা মানতে বলেন নইলে পরিনাম ভালো হবে না বলেও হুমকি দেন সালেহ পাটোয়ারী। কেডিএ’র চিঠি সূত্রে, ১৯৫২ সালের ইমারত নির্মাণ বিধিবদ্ধ আইনের (১৯৫৩ সনের ২ নং ইবি আইন) অন্তর্ভূক্ত ধারার খেলাপ করে খুলনা জেলার সদর থানার অন্তর্গত টুটপাড়া মৌজাধীন আর এস দাগ নং-১৮১১৩ (অংশ) এর উপর অথরাইজড অফিসারের বিনা অনুমতিতে ইমারতের ছাদের নির্মাণ কাজ করা হয়েছে। যা বিধিবদ্ধ আইনের ধারামতে দণ্ডনীয় অপরাধ । এজন্য অবশিষ্ট নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয় সালেহ পাটোয়ারীকে। শেখ আজাদ আলী বলেন, প্রতিবেশী হিসেবে এক জায়গায় বসবাস করাটা স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু আমাদের ক্ষতি করে নিজে প্রভাব বিস্তার করে আমাকে হুমকি দিয়েছেন। এইটা একজন প্রকৌশলীর কাছে থেকে মোটেই কাম্য নয়। আমাকে এবং আমার পরিবারকে মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে পুলিশের মাধ্যমে হয়রানি করার চেষ্টা করেছে। রোজার মাসে বাড়ির পুরুষরা মসজিদে নামাজে থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পুলিশ দ্বারা একাধিকবার হয়রানি করেছে। সে এখন প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। আমি এবং আমার পরিবার তার ক্ষমতার অপব্যবহারের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই। অন্য একজন অভিযোগকারী শেখ শাহাদাৎ হোসেন বলেন, নিয়ম না মেনে বাড়ি নির্মানের ফলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। বাড়ি নির্মানের নির্মান সামগ্রী অন্যের জায়গায় পড়ছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগ হলে সকলেরই ক্ষতি হবে। সালেহ পাটোয়ারীকে বুঝিয়ে বললে তিনি উল্টো ক্ষমতা দেখিয়ে নানাবিধ হয়রানি করার চেষ্টা করেছেন। এ বিষয়ে সালেহ পাটোয়ারীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে, তিনি বলেন আপনার সাথে পরে কথা বলব বলে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।