মেহেদী হাসান উজ্জল (ফুলবাড়ী) দিনাজপুর : দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর গড়পিংলাই আবাসন প্রকল্পে গত শনিবার (২৫নভেম্বর) রাতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ১০টি পরিবারের ঘরবাড়ি ভস্মিভূত হয়েছে। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় দশ লাখ টাকা। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো ঘরবাড়ি হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে পরিবার পরিজন নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন।
জানা যায়, ওই আবাসন প্রকল্পের ৫নং ব্যারাকের ৩নং বাড়ির বাসিন্দা আবু তালেবের বাড়ির বৈদ্যুতিক মিটার থেকে সর্ট সার্কিটের কারণে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত ঘটে। নিমিসেই আগুন ওই ব্যারাকের ১০টি বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। বাসিন্দারা চেষ্টা করেও তাদের ঘরবাড়ি রক্ষা করতে পারেননি। ফলে ব্যারাকের ১০টি ঘরই সম্পূর্ণরুপে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
ক্ষতিগ্রস্থ বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, নূর জাহান ও মর্জিনা বেগম বলেন, আগুন লাগার পরপরই বিরামপুর দমকল বাহিনীকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানিয়ে ঘটনাস্থলে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু ফায়ার স্টেশন থেকে জানানো হয়, তারা যেতে পারবেন না। ফুলবাড়ী ফায়ার স্টেশনকে জানানোর জন্য পরামর্শ দিয়ে মোবাইল ফোন রেখে দেন।
পরে ফুলবাড়ী ফায়ার স্টেশনকে জানানো হলে তারা ঘটনা স্থলে গিয়ে দুই ঘন্টাব্যাপী চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ক্ষতিগ্রস্থদের অভিযোগ, বিরামপুর ফায়ার স্টেশনের লোকজন আগুন নেভানোর কাজে আসলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক কম হতো এবং অন্তত ৫টি ঘর ছাই হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেত।
এদিকে ঘটনার পরপরই ওই রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম চৌধুরী ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল আজিজ মাস্টার ঘটনাস্থলে গিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর প্রত্যেক পরিবারকে নগদ ১হাজার টাকা অনুদান সহায়তা প্রদান করা হয়। একই সাথে ওই রাতেই ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রক্ষদের খাবার সরবরাহ করেন ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল আজিজ মাস্টার।
ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল আজিজ মাস্টার বলেন, অগ্নিকান্ড ঘটনার পরপরই তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজ করেন। কিন্তু আগুনে সবকিছু ভস্মিভূত হওয়ায় কোন কিছুই রক্ষা করা যায়নি। ওই রাত থেকেই ক্ষতিগ্রস্থরা পরিবার পরিজন নিয়ে আবাসন প্রকল্পের পুকুর পাড়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ব্যক্তিগতভাবে তার পক্ষ থেকে খাবার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম চৌধুরী ওই রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ প্রতি পরিবারকে নগদ ১ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তাসহ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে গতকাল রবিবার সকালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. খুরশিদ আলম মতি ব্যক্তিগত ভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে লুঙ্গি ও শাড়ি বিতরণ করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম চৌধুরী বলেন, অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে আর্থিক সহায়তাসহ ঘরবাড়ি নির্মাণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।