ইউনকি ডেস্কঃ দুই সহপাঠীর মৃত্যুর ঘটনায় আজ বুধবারও তৃতীয় দিনের মতো চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ করছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা। আজ সকাল ১০টায় চুয়েটের মূল ফটকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের অংশ বন্ধ করে দেওয়া হয়। গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
পরে দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা ১০ দফা দাবি আবার তুলে ধরে বলেন, বাস মালিক সমিতি ক্ষতিপূরণ বাবদ দুই লাখ টাকা করে দেওয়ার কথা বলেছে। এ টাকা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করা হলো। নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে দুই কোটি টাকা করে চার কোটি টাকা দিতে হবে। কারণ, শাহ আমানত পরিবহন সড়কে বেপরোয়াভাবে চলাচল করে। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার জিয়ানগর এলাকায় ওভারটেক করতে গিয়ে বাসের চালক দুই শিক্ষার্থীকে চাপা দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা পাঁচটি নতুন বাস ও চারটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি বাস ও একটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ার কথা জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য হলো, তাঁরা চারটি অ্যাম্বুলেন্স দ্রুত ক্যাম্পাসে দেখতে চান। আর বাস কেনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে দ্রুত চিঠি পাঠানো এবং এসব চিঠি নোটিশ আকারে শিক্ষার্থীদের মেইলে পাঠাতে হবে।
শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন, মানবিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুমন দে আন্দোলন নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। তাঁকে বরখাস্ত করতে হবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম পুনর্নির্ধারণ করে নোটিশ আকারে জানানোর দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলেন, আজ বুধবার বিকেল চারটার মধ্যে সব শিক্ষার্থীর মেইলে জানাতে হবে। চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বিআরটিসি বাসের ব্যবস্থা করার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
চট্টগ্রাম শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে রাউজান উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নে চুয়েট ক্যাম্পাস অবস্থিত। চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের একটি অংশ পড়েছে চুয়েট ক্যাম্পাসে। আজ সকাল ১০টার দিকে সড়কে গাছের গুঁড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়।
সকালে সরেজমিন দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা সড়কে নেমে সহপাঠীর মৃত্যুর বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
গত সোমবার আনুমানিক বেলা সাড়ে তিনটায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার জিয়ানগরে বাসের ধাক্কায় মারা যান চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা এবং একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিক হোসাইন। এ ছাড়া আহত হন একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাকারিয়া হিমু। দুর্ঘটনার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন সন্ধ্যা সাতটায় প্রথম দফায় সড়ক অবরোধ করা হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাস। পাশাপাশি আরও দুটি বাস ভাঙচুর করা হয়। পরে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে রাত নয়টার দিকে অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেদিন রাত তিনটায় নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি ঠিক করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকালও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।