কাশ্মীরে হারছে বিজেপি, এগিয়ে কংগ্রেস জোট

প্রকাশঃ ২০২৪-১০-০৮ - ১৬:১৬

ডেস্ক নিউজ : ভারতের কেন্দ্র শাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচনে ভোট গণনা চলছে। তবে, প্রাপ্ত ফলাফলে এখন পর্যন্ত এনসি-কংগ্রেস জোটের ঝুলিতে পড়েছে ৩৮ শতাংশ ভোট। বিজেপি পেয়েছে ২৬.৭২ শতাংশ ভোট।

পিডিপি পেয়েছে ৭.৮৯ শতাংশ ভোট। অন্য দলগুলির মোট ভোট শতাংশ ২৭। এখনো চলছে ভোটগণনা। জয়ের ইঙ্গিত পেতেই একে অপরকে মিষ্টিমুখ করাচ্ছেন কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা।

চলছে ভোটগণনা। জয়ের ইঙ্গিত পেতেই একে অপরকে মিষ্টিমুখ করাচ্ছেন কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

এখনও পূর্ণাঙ্গ ফলপ্রকাশ হয়নি। তবে তার আগেই পরাজয় স্বীকার করে নিলেন গণনার গোড়া থেকেই পিছিয়ে থাকা মেহবুবা মুফতির কন্যা ইলতিজা মুফতি।

জম্মু ও কাশ্মীরের কুলগাম আসনে এগিয়ে সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ ইউসুফ তারিগামি। প্রসঙ্গত, সিপিএম এনসি-কংগ্রেস জোটের অন্যতম শরিক।

কাশ্মীরে এখন পর্যন্ত ছয়টি আসনে এগিয়ে আছে নির্দলীয় প্রার্থীরা। জম্মু ও কাশ্মীর পিপলস কনফারেন্স (জেকেপিসি) দু’টি আসনে এগিয়ে। এখনও পর্যন্ত কোনো আসনে এগিয়ে নেই বারামুলার এমপি ইঞ্জিনিয়ার রশিদের আওয়ামি ইত্তেহাদ পার্টি (এআইপি)।

গান্ডেরবাল এবং বদগাম, দু’টি আসনেই এগিয়ে রয়েছেন এনসি নেতা তথা জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। শ্রীগুফওয়াড়া-বিজবেহড়া আসনে পিছিয়ে আছে পিডিপি নেত্রী তথা মেহবুবা মুফতির কন্যা ইলতিজা মুফতি।

জম্মু ও কাশ্মীরের গত বিধানসভা নির্বাচনে একক বৃহত্তম দল হয়েছিল মেহবুবা মুফতির পিডিপি। পরে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে সরকারও গঠন করে তারা।

প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী হন মেহবুবার বাবা মুফতি মোহাম্মদ সাঈদ। পরে তার মৃত্যুর পর মুখ্যমন্ত্রী হন কন্যা মেহবুবা। গত লোকসভা নির্বাচনে একলা লড়ে একটি আসনেও জেতেনি পিডিপি।

অনন্তনাগ-রাজৌরি লোকসভা আসনে দাঁড়িয়ে হেরে যান মেহবুবা। বিধানসভা ভোটের প্রাথমিক ফল বলছে, মাত্র ৫টি আসনে এগিয়ে রয়েছে মুফতির দল। তবে কোনো দল বা জোট সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসন না পেলে ‘কিংমেকার’ হয়ে উঠতে পারে পিডিপি।

ক্রমশ আসন বৃদ্ধি পাচ্ছে এনসি-কংগ্রেস জোটের। তবে খুব পিছিয়ে নেই বিজেপিও। আপাতত এনসি-কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে ৪৫টি আসনে। এর মধ্যে এনসি এগিয়ে ৩৬টি আসনে আর কংগ্রেস এগিয়ে ১৩টি আসনে। অন্য দিকে, বিজেপি এগিয়ে ২৭টি আসনে।

কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের পর প্রথম বিধানসভা ভোট হল সেখানে। ২০১৯ সালের অগস্টে অধ্যাদেশ জারি করে কেন্দ্র কাশ্মীরের অনুচ্ছেদ ৩৭০ প্রত্যাহার করে। রাজ্যের তকমা হারায় কাশ্মীর।

সাবেক জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য ভেঙে হয় দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখ এবং জম্মু ও কাশ্মীর। তার পর দীর্ঘ দিন সেখানে নির্বাচিত সরকার ছিল না। সুপ্রিম কোর্ট সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচন করার জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয়। নতুন সরকার তৈরি হওয়ার পর জম্মু ও কাশ্মীরের উপরাজ্যপালের ভূমিকা কী হবে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে রাজ্য মন্ত্রিসভার স্বাধীনতা কতটা থাকবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

২০১৪ সালে শেষ বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীরে। আসন পুনর্বিন্যাসের আগে জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভার মোট আসন ছিল ৮৭টি। মেহবুবা মুফতির দল পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) পেয়েছিল ২৮টি আসন। বিজেপি জিতেছিল ২৫টি আসনে।

ফারুক আবদুল্লার ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) এবং কংগ্রেস যথাক্রমে ১৫ এবং ১২টি আসনে জয়ী হয়েছিল। পিপলস কনফারেন্স এবং সিপিএম যথাক্রমে ২টি এবং একটি আসনে জয়ী হয়েছিল।

অনুচ্ছেদ ৩৭০ বিলোপ করার পর জম্মু ও কাশ্মীরে প্রথম বিধানসভা ভোটে লড়াই মূলত ত্রিমুখী- ন্যাশনাল কনফারেন্স-কংগ্রেস জোট, পিডিপি এবং বিজেপির মধ্যে। এ ছাড়া বারামুলার নির্দলীয় এমপি ইঞ্জিনিয়ার রশিদের গড়া নতুন দল ‘আওয়ামী ইত্তেহাদ পার্টি’ এবং সাজ্জাদ লোনের পিপলস কনফারেন্স এবার কাশ্মীর উপত্যকার কয়েকটি আসনে ভাল ফল করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

দীর্ঘ ১০ বছর পরে কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচনে ভোট হয় ৩ দফায়। মোট ৯০টি আসনের মধ্যে ২৪টিতে ভোট হয়েছিল প্রথম দফায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর। ২৫ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দফায় ভোট হয়েছিল ২৬টিতে। ১ অক্টোবর হয় বাকি ৪০টিতে।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল ৮টায় ভোটগণনা শুরু হয় জম্মু ও কাশ্মীরে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, প্রথমে পোস্টাল ব্যালটের গণনা শুরু হয়।
মঙ্গলবার হরিয়ানার ভোট গণনাও শুরু হয়। সেখানেও ৯০টি আসনে ভোট হয়েছে, তবে ওই রাজ্যে অবশ্য ভালো ফল করছে বিজেপি।