মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুরে হঠাৎ বেড়েছে লোডশেডিং। দিনরাত মিলিয়ে ৮-১০ ঘণ্টা বিদুৎ না থাকায় অনেক কষ্টে বাসিন্দারা। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকদের। চাহিদার তুলনায় কম সরবরাহ থাকায় লোকসানের মুখে কলকারখানার মালিকরাও।
যদিও বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, একদিকে উৎপাদন কম, অন্যদিকে চাহিদা বাড়ায় বেড়েছে লোডশেডিং। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে আরও বেশ কয়েক দিন। বিদ্যুৎ নেই, তাই অলস সময় কাটাচ্ছেন শ্রমিকরা। কল-কারখানায় চলছে না মেশিন, লোকসানের মুখে ব্যবসায়ীরাও।
মাদারীপুর জেলা জুড়ে গত কয়েকদিন ধরে বেড়েছে লোডশেডিংয়ের মাত্রা। সমানতালে বিদ্যুৎ যাওয়া আসা করায় জনজীবনে নেমেছে এসেছে অস্থিরতা। দিনরাত মিলিয়ে ৮-১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় ভোগান্তিতে বাসিন্দারা। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হচ্ছে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকদের। বিদ্যুৎ সরবরাহ কম থাকায় লোকসানের মুখে কলকারখানার মালিকরা। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীরাও পড়েছেন চরম বিপাকে। দুর্বিসহ কষ্ট হলেও প্রতিকার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর জেলায় প্রায় ৪ লাখ পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকের ১০৬ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ৭০-৭৫ মেগাওয়াট। ৮০টি সাবস্টেশনের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা বিবেচনা করে লোডশেডিং ভাগ করা হয়।
জেলার বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে তেল, গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ কম থাকায় উৎপাদন কমে গেছে, এতে বেড়েছে লোডশেডিংয়ের মাত্রা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও সাতদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
কালকিনি উপজেলা হাসপাতালে বাবাকে নিয়ে সেবা নিতে আসা রোগী রাকিবুল ইসলাম বলেন, প্রচন্ড গরমে হাসপাতালে থাকার কোনো উপায় নেই। বিদ্যুৎ না থাকায় চরম ভোগান্তি হচ্ছে। কর্তৃপক্ষও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। রোগীদের অবস্থা করুণ।
মাদারীপুরের একটি ছাপাখানা ব্যবসায়ী অলিউল আহসান বলেন, পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ না থাকায় সময় মতো কাস্টমারদের কাগজপত্র ডেলিভারি দিতে পারছি না। এতে লোকসান হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি থাকলে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হবে। টেকেরহাট বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সেলিম আহমেদ বলেন, ‘দিনের বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। এতে কাজও করতে পারছি না। একদিন প্রচন্ড গরম, অন্যদিকে বিদ্যুৎ থাকে না, এতে দুর্বিসহ জীবন পার করছি। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তাও জানি না। বিদ্যুৎ না থাকায় আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যে অনেক লোকসান হচ্ছে। কারখানা বন্ধ থাকছে ঘন্টার পর ঘন্টা।
মাদারীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ব্যবস্থাপক (জিএম) মো. জোনাব আলী জানান, একদিকে প্রচন্ড গরমে বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদা। অন্যদিকে উৎপাদন কম হওয়ায় দেখা দিয়েছে লোডশেডিং। এলাকা অনুযায়ী লোডশেডিং বাড়ে কমে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে আরও বেশ কয়েক দিন।