শরণখোলা: সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাগেরহাট জেলার বনে বেশী। গণনায় সুন্দরবনে ১২৫টি বাঘ পাওয়া গেলেও মোট সংখ্যার ৫৯% শতাংশ বাঘ বাগেরহাট জেলার সুন্দরবনে রয়েছে। এবারের গণনায় ২১টি বাচ্চা বাঘের ছবি পাওয়া গেছে। বাচ্চা বাঘ গণনায় অন্তভূক্ত করা হয়নি। সম্প্রতি প্রকাশিত বাঘ গণনার ফলাফলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ১৯১৮ সালে বাঘ গণনার পাঁচ বছর পরে ২০২৩ সালের জানুয়ারী মাসে পুনরায় সুন্দরবনে বাঘ গণনার কার্যক্রম শুরু হয়। সুন্দরবনের ৬০৫টি গ্রীডে ১ হাজার ২১০টি ক্যামেরা ৩১৮ দিন বেঁধে রাখা শেষে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে বাঘ গণনার মাঠ পর্যায়ের কাজ শেষ করা হয়। ক্যামেরায় ধরা পড়া বাঘের ছবি পরীক্ষা করে ২০২৩-২০২৪ সালের গণনায় সুন্দরবনে ১২৫টি বাঘ রয়েছে বলে বনবিভাগ গত ৮ অক্টোবর গণনার ফলাফল ঘোষণা করে জানান। এবারের ক্যামেরা ট্রাপিংয়ে মা বাঘের সাথে ২১ টি বাচ্চা বাঘের ছবি ধরা পড়েছে। বাচ্চা বাঘের মৃত্যুর হার বেশী বলে বাচ্চা বাঘ গণনায় অন্তরভূক্ত করা হয়নি। ২০১৮ সালের গণণায় ৫টি বাচ্চা বাঘের ছবি পাওয়া যায়। এর আগে ২০১৫ সালের গণনায় সুন্দরবনে ১০৬টি, ২০১৮ সালের গণনায় ১১৪ টি বাঘের সন্ধান পাওয়া যায়। পাঁচ বছরে সুন্দরবনে প্রাপ্ত বয়স্ক বাঘ বেড়েছে ১১টি। বিশ্বে বর্তমানে বিলুপ্ত প্রায় প্রাণী বাঘ। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বের কয়েকটি দেশে ৩৮৪০টি বাঘ রয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) শেখ মাহবুব হাসান বলেন, ক্যামেরা ট্রাপিং ব্যতি রেখে বলা যায়, সুন্দরবনে আগের চেয়ে বাঘ বেড়েছে । জেলেরা সুন্দরবনে অনেক জায়গায় মা বাঘের সাথে বাচ্চা বাঘ দেখতে পেয়েছে। বিশেষ করে শরণখোলা রেঞ্জে একটি বাঘিনীর সাথে চারটি বাচ্চা দেখা গেছে বলে এসিএফ জানিয়েছেন।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করীম বলেন, বাগেরহাটের সুন্দরবনে বাঘের মুল খাবার হরিণসহ অন্যান্য খাবার ও বাঘের আবাসস্থল তাদের অনুকুলে থাকায় এখানে বাঘ বাড়ার অন্যতম কারণ বলে তিনি মনে করেন।
বনবিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো ইত্তেফাককে, বলেন, সুন্দরবনকে তিনটি ব্লকে ভাগ করে বাঘ গণনার কার্যক্রম চালানো হয়। ব্লক গুলো হচ্ছে, শরণখোলা-চ্াদপাই, খুলনা ও সাতক্ষীরা ব্লক। তিনটি ব্লকের মধ্যে বাগেরহাট জেলার শরণখোলা রেঞ্জ ও চাঁদপাই এলাকার বনে ৫০টি বাঘ পাওয়া যায়। এবারের ক্যামেরা ট্রাপিংয়ে মা বাঘের সাথে ২১ টি বাচ্চা বাঘের ছবি ধরা পড়েছে। আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী বাচ্চা বাঘের মৃত্যুর হার বেশী বলে বাচ্চা বাঘ গণনায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। ২০১৮ সালের গণণায় ৫টি বাচ্চা বাঘের ছবি পাওয়া যায়। ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে সুন্দরবনে দুই বছর ধরে চলা বাঘ গণনার চুড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ বিশ্ববাঘ দিবসে ৩০ জুন ঘোষণার কথা থাকলেও দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে এবারের বাঘ গণনার ফলাফল দেরীতে ৮ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে। ঘোষণা করা হয়েছে বলে সিএফ জানিয়েছেন।