ইন্দ্রজিৎ টিকাদার, বটিয়াঘাটা : বটিয়াঘাটা উপজেলা চলতি আমন মৌসুমে পাকা ধান কাটাকে কেন্দ্র করে ভূমি দস্যুদের সৃষ্ট লাঠিয়াল বাহিনী সক্রিয় হযেছে। ভূমি দস্যুদের সহযোগী লাঠিয়াল বাহিনী তাদের পেশী শক্তি ব্যবহার করে জোর পূর্বক অন্যের রোপনকৃত ধান কাটার পায়তারা করছে। যে কারনে ভূমি দস্যু ও লাঠিয়াল বাহিনীর নেতৃবৃন্দদের থানা চত্ত্বরের আশে পাশে ঘুর ঘুর করতে দেখা যাচ্ছে। এতে আইন শৃংখলার অবনতি হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে ভূক্তভোগী খুলনা ইকবাল নগরের মৃত: ইসমাইল হোসেনের পুত্র মো: মনির হোসেন উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) বরাবর বন্দোবস্ত না দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।
সুত্রে প্রকাশ, উজেলার জলমা ইউনিয়নের জলমা, তেঁতুলতলা, মাথাভাঙ্গা ও ছয়ঘরিয়া মৌজা সহ উপজেলার বিভিন্ন মৌজার ও নদী ভাঙ্গনের চর ভরাটি নদী ও খাস জমি ভুমিহীন ও রেকর্ডীয় মালিকদের রোপনকৃত পাকা ধান ভূমি দস্যুদের সহযোগি লাঠিয়াল বাহিনী প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা/কর্মচারীদের যোগসাজশে জোর পূর্বক রোপনকৃত পাকা কেটে নেয়ার পায়তারা করছে। অপরদিকে ঐ সকল কৃষক আমন মৌসুমে তাদের রোপনকৃত ধান ঘরে তুলতে না পারার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় উপজেলার জলমা ইউনিয়ন ও বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের জলমা মৌজা ও শোলাবুনিয়া এবং বিরাট মৌজার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত ছিল কাজীবাছা নদী। উক্ত জলমা মৌজার কাজীবাছা নদীর একমুখে শহর রক্ষা বেড়ী বাঁধ নির্মান করায় মূল নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে জলমা মৌজার সি,এস ও এস,এ রেকর্ডীয় হাজার হাজার একর জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পাশাপাশি জলমা ও কচুবুনিয়া এই দুটি গ্রাম নদী সাথে মিশে যায়। ঐ দুটি গ্রামের মানুষ সরকারী ওয়াবদার সাইডে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। পরবর্তীতে জলমা মৌজার সি,এস ও এস,এ এবং দেয়াড়া(আর,এস) রেকর্ডীয় মালিকগনের জমি পুন:রায় ভরাট হয়ে চর জাগায় তাদের জমি ফিরে পেতে আদালতে একাধিক মামলা করেছে। এছাড়া ভূয়া ভুমিহীনদের বন্দোবস্ত দলিল রদ করতে এবং আর কোন ভুয়া ভুমিহীনদের জরিপের পূর্বে বন্দোবস্ত না দেয়ার জন্য(এ,ডি,সি) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এল,এ শাখায় ভূক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। অভিযোগটি আমলো নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছে প্রেরন করেছে। অন্যদিকে জলমা মৌজার এ সকল রেকর্ডীয় মালিকদের জমিতে ডিডকৃত বর্গাদার ও ভুয়াভুমিহীনরা মালিকদের উচ্ছেদ করে রোপনকৃত পাকা ধান কেটে নেয়ার পায়তারা করছে। অপরদিকে ছয়ঘরিয়া মৌজার হারাধন সরদারের ১৯৭৮ সালে ২৯২ নং রেজিষ্ট্রিকৃত বর্গাদার মনোহর মন্ডল জাল জালিয়াতির মাধ্যমে মালিক হবার চেষ্টা করছে। এ ছাড়া হারাধনের রোপা পাকা আমন ধান কেটে নেয়ার পায়তারা করছে এবং জমির সীমানা পিলার, সাইন বোর্ড রাতের আঁধারে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। উক্ত রেজিস্ট্রি বর্গাকৃত জমির মালিক হারাধন সরদারকে ডি,পি জরিপে ১৩৪৫ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত দখল দিয়েছে। অন্যদিক বর্গাদার মনোহর মন্ডলের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ প্রদান করেছে। উক্ত আদেশ উপেক্ষা করে বর্গাদার মনোহর মন্ডল আইন শৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে চলেছে। এ ব্যাপারে সোমবার সন্ধ্যায় থানায় সালিশ বৈঠকে বর্গাদারকে জমিতে না যাওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছে থানা পুলিশ। উক্ত বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাম্মেল হক মামুন জানান, থানায় দালাল, বাটপারদের কোন স্থান নেই। জমি যার এবং যে জমি চাষ করে ফসল উৎপাদন করেছে সেই ধান কাটবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংসদ পঞ্চানন বিশ্বাস জানান জলমা মৌজার নতুন জরিপ না হওয়া পর্যন্ত কোন জমি বন্দোবস্ত দেয়া হবে না এবং জলমা মৌজার সি,এস ও এস,এ রেকর্ডীয় মালিকগন জমি চাষ করে ফসল উৎপাদন করবে।