ডুমুরিয়ায় প্রধান শিক্ষককে বয়কটের মধ্য দিয়ে পাঠ্যপুস্তক উৎসব

প্রকাশঃ ২০১৮-০১-০১ - ১৮:৫১

আ: লতিফ মোড়ল, ডুমুরিয়া (খুলনা) : সারা দেশের ন্যায় খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে উৎসব মুখর পরিবেশে পাঠ্য পুস্তক দিবসে বই বিতরন হলেও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বয়কট ও তার অপসারন দাবীর মধ্যে দিয়ে বই গ্রহন করেছে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার সকালে উপজেলার পূর্ব বিল পাবলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পরে  স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাধারন শিক্ষকদের কাছ থেকে বই গ্রহন করেন শিক্ষার্থী অভিভাবকরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার অন্যান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ন্যায় ডুমুরিয়া উপজেলার পূর্ব বিল পাবলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই উৎসব পালনের মাধ্যমে বই বিতরনের প্রস্তুুতি নেয়া হয়েছিলো। সেই অনুযায়ী বিদ্যালয়ের কোমল মতি শিক্ষার্থীরা তাদের অভিভাবকদের সাথে নিয়ে সকালেই স্কুলে হাজির হন। কিন্তু বিপত্তি ঘটে স্কুলের দূর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক জেসমিন আরা কে ১০ মাস পরে স্কুলে হাজির থাকতে দেখে। ক্ষুদ্ধ অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষককের অপসারন দাবি করে মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সভা শুরু করে এবং তারা প্রধান শিক্ষকের হাত থেকে বই গ্রহনে অস্বীকৃতি জানান। এক পর্যায়ে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভা পতি বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিস,¯হানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দপ্তরকে অবহিত করেন। পরে ¯হানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা সরোয়ার ও কেএমপি’র আড়ংঘাটা থানার এস,আই সবুজ সংগীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনা ¯হলে যেয়ে পরি¯িহ শান্ত করেন। সাধারন অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষককে বাদ দিয়ে চেয়ারম্যান ও সভার অন্যান ব্যক্তিদের হাত থেকে বই নিতে সম্মত হলে বই বিতরন করা হয়। এ প্রসঙ্গে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দেবাশীষ মন্ডল জানান, প্রধান শিক্ষক জেসমিন আরা’র বিরুদ্ধে ছাত্রীদের দিয়ে মাথার উঁকুন বাছানো, কমিটিকে না জানিয়ে স্কুলের পুরাতন বই,খাতা,রেজিষ্টার স্বেচ্ছা চারী মুলক ভাবে বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করা, অনিয়ম তান্ত্রিক ভাবে স্কুলে যাওয়া- আসা, সহকারি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে অসৌজন্য মুলক আচারন সহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে গত বছর ২২ শে ফেব্র“য়ারী স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য,সাধারন অভিভাবক,সহকারি শিক্ষকবৃন্দ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৩ জন উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা গত বছর ৪ঠা মার্চ অভিযোগ তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেন। তদন্তে প্রধান শিক্ষের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় উপজেলা শিক্ষা অফিস ব্যব¯হা গ্রহনের জন্যে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ পাঠান। পরবর্তিতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত উল্লেখিত অভিযোগ গুলো তদন্তের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর,ঢাকা আরো এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত টীম গঠন করে গত বছর ২৩শে সেপ্টেম্বর তারিখে তদন্ত স¤পন্ন করেন। কিন্ত ১০ মাস অতিবাহিত হলেও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কোন শাস্তি মূলক ব্যব¯হা গ্রহণ না করায় অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া। তারই ধারা বাহিকতায় গতকাল অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষককের কাছ থেকে পাঠ্য বই গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান এবং আগামি এক সপ্তাহের মধ্যে স্কুল থেকে তাকে অপসারন পূর্বক শাস্তি মূলক ব্যব¯হা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক জেসমিন আরা জানান, যেহেতু তিনি ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাই তিনি পাঠ্য পুস্তক বিতরনের ব্যবস্থা করছিলেন। তিনি আরো জানান তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে উর্দ্ধত্বন কর্তৃপক্ষ কোন সিদ্ধান্ত না নেন ততক্ষন তিনি ওই স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে আইনগত বাধ্য। এ প্রসঙ্গে খুলনা বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক মো: ওলিউল ইসলাম জানান, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর বিষয়টি উর্দ্ধত্বন কর্তৃপক্ষের কাছে সিদ্ধান্তের জন্য পাঠানো হয়েছিলো। এছাড়া মহা পরিচালকের দপ্তর থেকে আরো একটি তদন্ত করা হলেও অদ্যবধী আমরা কোন নির্দেশনা হাতে পাই নি। পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।