সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার আশাশুনিতে যাত্রার আড়ালে চলছে জমজমাট জুয়ার আসর। যাত্রার নামে মানুষকে আকৃষ্ট করে ফাঁসানো হচ্ছে জুয়ার আসরে। সম্প্রতি আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন উৎসবের আড়ালে জুয়া ও অশ্লীল নৃত্য চলছে তো চলছেই। এরই ধারাবাহিকতায় গত কয়েকদিন হতে আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের কামালকাটিতে যাত্রার নামে চলছে অশ্লীল নগ্ন নৃত্য ও প্রকাশ্য রমরমা জুয়ার আসর। কোন অনুমতি ছাড়াই স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চলছে এ নগ্ন নৃত্য ও জুয়ার রমরমা ব্যবসা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার কামালকাটি বাজার সংলগ্ন এমপি নামক মাঠে টিকিট প্রতি ১০০টাকা থেকে ৫০০ টাকার বিনিময়ে দর্শকদেরকে ভিতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে। কিন্তু ভিতরে প্রবেশ করে দেখা গেছে স্টেজে চলছে কয়েকজন তরুণীর অশ্লীল পোশাকে নগ্ন নৃত্য। এভাবে প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে শুরু হয়ে সারা রাত্র ব্যাপী চলছে এ অশ্লীল নৃত্য। আর স্টেজের পাশেই সাজানো হয়েছে রমরমা জুয়ার আসর। নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে প্রলুব্ধ করে পাতানো জুয়ার পশরার ফাঁদে পকেট কেটে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আর এসব অবৈধ কারবারের পাহারা দিচ্ছে পুলিশ স্বয়ং। এমনকি নগ্ন নৃত্য দেখে হাজার হাজার টাকা ছড়িয়ে নায়িকাদের বরন করে নিতে দেখা গেছে একজন জনপ্রতিনিধিকেও।
স্থানীয়রা জানান, জুয়া ও নগ্ন নৃত্যের জমজমাট আসর পরিচালনা করছেন শহিদুল, রজব আলী, খোকন, কামাল, জাকির, আজিজসহ কয়েকজন জুয়াড়ী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, সব দিক ম্যানেজ করেই চলছে এসকল অবৈধ কারবার। এসকল আসরে সবকিছু হারিয়ে নিঃশ্ব হচ্ছে সাধারণ মানুষ আর লাভবান হচ্ছে বোর্ড মালিক ও আয়োজকরা। উপজেলার সচেতন মহলের দাবি দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন উর্ধগতিতে সাধারণ মানুষের জীবনে যে অস্থিরতা নেমে এসেছে সেখানে পরিবারের খাদ্য যোগাতে উপার্জনের অর্থ শেষ হয়ে যাওয়া দরিদ্র মানুষের সামান্য রোজগারের অর্থও চলে যাচ্ছে জুয়া ও অশ্লীলতায়। বেড়ে যাচ্ছে পারিবারিক অশান্তি। অসহায় সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়েই জড়িয়ে পড়ছেন চুরি, ছিনতাইসহ নানাবিধ অপকর্মের সাথে। অবনতি হচ্ছে উপজেলার সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির। নগ্ন নৃত্য ও জুয়ার আসর সাজিয়ে দরিদ্র মানুসের কষ্টে অর্জিত অর্থ যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি উঠতি বয়সী যবুকেরা ধাবিত হচ্ছে, মাদক ও অশ্লীলতার দিকে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্সের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন উপজেলার সচেতন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহিদুর রহমান শাহিন জানান, জেলা প্রশাসকের অনুমতি থাকার স্বর্তেও আজ মঙ্গলবার থেকে তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।